নিজস্ব প্রতিবেদক :
পরিচয় বদল করে অন্যের হয়ে কারাভোগের ঘটনায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা জালিয়াতির মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী শরীফ শাহরিয়ার সিরাজীর এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিব রিমান্ডের এ আদেশ দেন। গত বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার নিম্ন আদালত সংলগ্ন রায় সাহেব বাজার এলাকা থেকে শরীফ শাহরিয়ার সিরাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আজ শুক্রবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ চৌধুরী ওই আইনজীবীকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আসামিপক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। কোতোয়ালি থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা এসআই মাহমুদুর রহমান রিমান্ডের বিষয়টি জানান। এ মামলায় গত ২ ফেব্রুয়ারি যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত বড় সোহাগের হয়ে যাবজ্জীবন কারাভোগকারী মো. হোসেনের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। জানা যায়, ২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর রাজধানীর কদমতলী এলাকায় হুমায়ুন কবির নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় বড় সোহাগসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলায় ২০১০ সালে গ্রেপ্তার হন বড় সোহাগ। ২০১৪ সালে জামিনে গিয়ে পলাতক হন তিনি। ২০১৭ সালে বড় সোহাগসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪। পরের বছর হোসেন নামে এক ব্যক্তি নিজেকে বড় সোহাগ পরিচয় দিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সম্প্রতি প্রকৃত অপরাধী বড় সোহাগ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন। মঙ্গলবার সোহাগ ও হোসেনকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ হাজির করা হয়। প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় বিচারক জেসমিন আরা বেগম, বড় সোহাগ, হোসেন ও দুই আইনজীবী শরীফ শাহরিয়ার সিরাজী ও ইব্রাহিম হোসেনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে (সিএমএম) আদেশ দেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় এ মামলা করা হয়। মামলার আসামিরা হলেন- আসল সোহাগ ওরফে বড় সোহাগ, নকল সোহাগ, এ মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী শরীফ শাহরিয়ার সিরাজী ও ইব্রাহীম হোসেন। এ ছাড়া অজ্ঞাতানামা কয়েকজনকে মামলায় আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারাসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রতারণার আশ্রয়ে আত্মসমর্পণ করা আসামি প্রকৃত আসামি নয় মর্মে জেনেও তাকে মিথ্যা ব্যক্তির মাধ্যমে প্রকৃত আসামি সাজিয়ে জাল-জালিয়াতি করে উপস্থাপনের দরখাস্ত, জামিনের দরখাস্ত ও ওকালতনামায় জাল দরখাস্ত দিয়ে এসব সৃজন করে তা সঠিক মর্মে দাবি করেন। তা ব্যবহার করে মিথ্যা ও ভুয়া ব্যক্তিকে প্রকৃত ব্যক্তি সাজিয়ে প্রতারণার আশ্রয়ে আদালত আত্মসমর্পনণ করিয়ে একজন অপরজনের নামে সাজা ভোগ করিয়ে আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।