নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, যদি পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্য অসম্মান-অপমান বয়ে নিয়ে আসেন তাকে পরিত্যাগ করবো। পুলিশ বাহিনীতে তার কোনো আশ্রয় নেই। আজ সোমবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে শিল্ড প্যারেড, মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ সদস্যদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আইজপি বলেন, আমরা চাই না পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্য অপকর্মে লিপ্ত হন। আমাদের পুলিশ বাহিনীর প্রতি সদস্যের জন্য সর্বোচ্চ কল্যাণ নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। একইভাবে যদি পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্য অসম্মান-অপমান বয়ে নিয়ে আসেন তাকেও আমরা অবশ্যই শরীরের কোনো জায়গায় পচন ধরলে যেমন কেটে ফেলে হয় তেমনভাবে আমরা তাকে পরিত্যাগ করবো। পুলিশ বাহিনীতে তার কোনো আশ্রয় নেই। প্রতিনিয়ত সেবার মান উন্নয়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশ হওয়া কোনো পেশা না, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে সেবা দেওয়া। সেজন্য আমরা আমাদের চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে ট্যাগলাইন রেখেছি- ‘চাকরি নয়, সেবা।’ যাদের মধ্যে সৎ, সাহসী এবং দেশপ্রেম- এই তিনটি গুণ আছে, তাদের জন্য পুলিশ বাহিনী উন্মুক্ত। আসুন, আমরা দেশ মাতৃকার সেবা করি। তিনি বলেন, পুলিশে স্বচ্ছতা ও মেধার ভিত্তিতে পদোন্নয়ন হচ্ছে। আমরা নিয়োগের পদ্ধতিও পরিবর্তন করেছি। প্রায় ৪০ বছর পর এই সংস্কার হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশে বেছে বেছে সেরাদের সেরা অফিসারদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের গুণগত মান বৃদ্ধি পেলে এর সুফল ভোগ করবে সাধারণ মানুষ। আমরা চাই বৈষম্যহীনভাবে পুলিশ মানুষকে সেবা দেবে। আইজিপি বলেন, বৈশ্বিক করোনা মহামারির সময়ে আমাদের সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন, তাদের বাড়িতে বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। মৃত্যুর পর তাদের সৎকারের কাজেও পুলিশ পাশে দাঁড়িয়েছে। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ধান কাটার শ্রমিকদের পৌঁছে দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। এইসব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের প্রায় ২৭ হাজার সদস্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই করোনাভাইরাস মহামারির যুদ্ধে আমরা আমাদের ১০৬ জন সদস্যকে হারিয়েছি। তারা দেশ মাতৃকার জন্য শহীদ হয়েছেন। অবৈধ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধারে পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অস্ত্র সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করতে হবে। এদেশের সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে মাদকমুক্ত করতে হবে। আমাদের দেশে কোনো মাদক তৈরি হয় না। আমরা কেন আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে মাদক আমদানি করতে হবে? যুবসমাজের কাছে অনুরোধ, তারা যেন এটি উপলব্ধি করতে পারে। আগামী প্রজন্ম বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করবে না, তারা মাদকের ফাঁদে পা দেবে না। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পুলিশ সদস্যদের অপকর্মে জড়ানোর বিষয়ে আইজিপি বলেন, ২০৪১ সালে আমরা ধনী রাষ্ট্র হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। সেই রাষ্ট্রের জন্য পুলিশকেও প্রস্তুত হতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আমরা ইতোমধ্যে স্ট্রাটেজিক প্ল্যান করছি। আমরা চাই না পুলিশের কোনো সদস্য অপকর্মে লিপ্ত হোক। ড. বেনজীর বলেন, আমরা নিজেদের কোনো অপকর্মের মাধ্যমে, নিজেদের কোনো অন্যায় আচরণের মাধ্যমে সংবাদ হতে চাই না। আমরা আমাদের ভালো কাজের মাধ্যমে সংবাদ হতে চাই। আইজিপি আরও বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত দক্ষতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছি। কিন্তু সমাজের যে প্রত্যাশা তা কখনো কখনো আমাদের সীমাবদ্ধতা-সামর্থ্যকে ছাড়িয়ে যায়। পুলিশের প্রতি মানুষের যে আকাশচুম্বী প্রত্যাশা রয়েছে সেই প্রত্যাশা পূরণে ব্রতী হবে। সর্বোচ্চটুকু নিংড়ে দিয়ে গণমানুষের প্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে।