নিজস্ব প্রতিবেদক :
ই-কমার্সে নজরদারি, অর্থআত্মসাৎ প্রতিরোধ ও ভুক্তভোগী গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষায় সরকারের ব্যর্থতা চ্যালেঞ্জ করে ই-অরেঞ্জের ৩৩ গ্রাহক রিট আবেদন করেছেন। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ই-অরেঞ্জের ৩৩ গ্রাহকের পক্ষে রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. শিশির মনির। রিটে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান, সেন্ট্রাল ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ই-অরেঞ্জ শপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ মোট ১৬ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। আইনজীবী মো. শিশির মনির জানান, দিনাজপুরের বিরামপুরের এক ব্যাক্তি বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৭০ লাখ টাকার পণ্য কিনতে অর্ডার করেন। এমন প্রায় ১৬ কোটি টাকার অর্ডার আদেশের কপিও রিট আবেদনে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কেলেঙ্কারি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকার প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। রাজধানী ঢাকার দিদার হোসেন বাবু, ফরিদুপরের রিজভী আহমেদ, মাগুরার প্রসেনজিত কুমার দত্ত ও দিনাজপুরের বিরামপুরের এক ব্যাক্তিসহ ৩৩ জন এ রিট আবেদনটি করেছেন। রিট আবেদনে ই-কমার্সে ভুক্তভোগী গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা/নিষ্ক্রিয়তা কেনো আইনগত কর্তৃত্ব বর্হিভূত হবে না এবং ভুক্তভোগী গ্রাহকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার কেনো নির্দেশ দেওয়া হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় গ্রাহক ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ ও সুষ্ঠু পরিচালনায় সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়ার জন্য অর্থনীতিবিদ, তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী ও স্বার্থ-সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন, ঝুঁকিপূর্ণ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোতে রিসিভার নিয়োগ, অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বশীল ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, ঝুঁকিপূর্ণ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে মানিল-ারিং হয়েছে কি না, তা তদন্তের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। আইনজীবী মো. শিশির মনির আরও জানান, ৩৩ জন ভুক্তভোগী গ্রাহকের পক্ষে ১৬ কোটি টাকা মূল্যের ভাউচার এবং বিভিন্ন দ্রব্যের ক্রয়াদেশ সংযুক্ত করা হয়েছে। এই ভুক্তভোগীরা নির্দিষ্ট সময়ের পরেও তাদের ক্রয়কৃত পণ্য বা তাদের টাকা বুঝে পাননি। আবেদনে বাংলাদেশ ই-কমার্সের সূচনা ও ক্রমবিকাশ সম্পর্কে তুলে ধরা হয়। এছাড়া রিটে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯, প্রতিযোগিতা আইন-২০১২, জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা-২০১৮, ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা-২০২১ এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১ ও ৪২ এর আলোকে এবং বিভিন্ন মামলার নজির উল্লেখ করে ই-কমার্স কেলেঙ্কারি নজরদারি ও প্রতিরোধে এবং ভুক্তভোগী গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়েছে।