• রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:০০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
দুদক কর্মকর্তাদের নৈতিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান রাষ্ট্রপতির বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামছে ভোক্তা-অধিকার রাজনীতি যার যার, অর্থনীতি সবার: এফবিসিসিআই সভাপতি বান্দরবানে হুমকির মুখে সরকারের হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ বান্দরবান জেলা সদর সহ ৬ টি উপজেেলায় শিশুদেরকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়া হবে বান্দরবানে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা মাদকদ্রব্য ধ্বংস বিচারপতির গাড়িতে তেল কম দেওয়ায় ফিলিং স্টেশনকে জরিমানা বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ১২ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারে বিদেশী বিনিয়োগ ক্রমাগত কমছে

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাহকদের অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা কম

Reporter Name / ৭৬ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রতারিত গ্রাহকদের অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের হদিস মিলছে না। অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ ও মোবাইল নম্বরসহ যোগাযোগের সব মাধ্যমই বন্ধ। বিপুল অর্থ আত্মসাতকারী প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক-কর্মকর্তারা লাপাত্তা। বর্তমানে ৭ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দেশের ৬০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তাছাড়াও ৫শ’ কোটি টাকা পাচার হওয়ার অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ২৪টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১০৫টি মামলা হয়েছে। প্রতারক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে গ্রাহকরা প্রতারণা, বিশ্বাসঘাতকতা, হুমকি দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা করেছে। ফৌজদারি মামলা হওয়ায় প্রতারকদের হয়তো সাজা হতে পারে। কিন্তু গ্রাহকদের অর্থ ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা কম। অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠাগুলোর বিরুদ্ধে পুলিশ, সিআইডি, গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট তদন্ত করছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেয়া পুলিশের এক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী দেশের বিভিন্ন থানায় বর্তমানে ২৪টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ১০৫টি মামলা রয়েছে। প্রতারণা, বিশ্বাসঘাতকতা, হুমকি দেয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে ওসব মামলা করেছে গ্রাহকরা। তার মধ্যে ই-অরেঞ্জের নামে সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকরা ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রংপুরে ৪২টি মামলা করেছে। আর ইভ্যালির বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানা এবং সাভার, ফরিদপুর ও সিরাজগঞ্জে মোট ২০টি মামলার তথ্য পেয়েছে সিআইডি। তাছাড়া কিউকমের বিরুদ্ধে ৭টি মামলা রয়েছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে এক থেকে তিনটি মামলা রয়েছে। ওসব মামলাগুলোর তদন্ত করছে পুলিশের বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা। দেশের ৬০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ও ফেসবুক পেজের (এফ কমার্স) বিরুদ্ধে গ্রাহকের ৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত ওসব প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকসংখ্যা এবং ভুক্তভোগীর সংখ্যার তালিকা হয়নি। অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এবং মালিকপক্ষ পলাতক বা জেলে থাকায় তাদের গ্রাহকসংখ্যা ও পাওনাদার সংখ্যা সঠিকভাবে জানা সম্ভব হচ্ছে না।
সূত্র জানায়, দেশের বিপুলসংখ্যক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত গ্রাহক হয়রানি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিভিন্ন মামলার তদন্তে এখন আগের মতো তোড়জোড় নেই। কয়েক আসামিকে গ্রেফতার করার পরেই থমকে গেছে অধিকাংশ মামলার তদন্ত কার্যক্রম। ২৪টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হওয়া শতাধিক মামলার একটিরও তদন্ত শেষ হয়নি। আর আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, একের পর এক ফৌজদারি মামলা করায় প্রতারিত হওয়া গ্রাহকদের অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কৌশলগত কারণে তদন্তের চেয়ে গ্রাহকদের টাকা কীভাবে ফেরত দেয়া যায় তা নিয়েই কাজ করছে পুলিশ।
সূত্র আরো জানায়, অনেক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শুধু গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নেয়াই শুধু নয়, প্রতিষ্ঠানগুলোর অনেকের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগও রয়েছে। ই-অরেঞ্জ, ধামাকা শপিং, টোয়েন্টিফোর টিকিট লিমিটেড, এসপিসি ওয়ার্ল্ড এবং সমবায় প্রতিষ্ঠান এহসান গ্রুপসহ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অন্তত ৫০০ কোটি টাকা পাচারের প্রাথমিক তথ্য পাওয়ার পর তদন্ত হচ্ছে। ওসব ঘটনায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অর্থপাচার আইনে আলাদা ৭টি মামলা হয়েছে। রিং আইডিসহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অর্থ পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) সংশ্লিষ্টদের মতে, ই-কমার্সে আস্থা ফেরাতে ই-ক্যাব বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার অংশ হিসেবে মামলাকারী গ্রাহকদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে কিছু প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মকর্তারা। বাদীর সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে জামিনে তাদের ছাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। গ্রাহকদের মামলায় প্রতারক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বড় কোন শাস্তি হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু মানি লন্ডারিং যেসব প্রতিষ্ঠান করেছে তাদের যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় সেভাবে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের মতে, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে হওয়া মামলার তদন্তে বিশেষ কোন অগ্রগতি নেই। কৌশলগত কারণেই তদন্ত ধীরগতিতে চলছে। কোন কোন ক্ষেত্রে শুধু মামলাকারী গ্রাহকদের অর্থ দিয়ে পার পেতে চাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। সেক্ষেত্রে প্রতারিত হাজার হাজার গ্রাহকরা মামলা না করায় তাদের অর্থ ফেরত পাওয়া অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category