০৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫ | ই-পেপার

ঈদে চলাচলের জন্য রং আর মেরামতে রূপ পাল্টাচ্ছে লক্কড়-ঝক্কড় বাস

  • দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৮:০৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২
  • ১৫০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনা মহামারির কারণে গত চার ঈদে রাজধানীর মানুষ গ্রামে যেতে না পারলেও এবার তেমনটি হচ্ছে না। এবার পরিস্থিতি বদলেছে। করোনা মহামারি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। ফলে এবারের ঈদুল ফিতরে সড়কে থাকবে মানুষের চাপ। বাস টার্মিনাল বা টিকিট কাউন্টারগুলোতে এখনো তার আঁচ পাওয়া না গেলেও মেরামতের ওয়ার্কশপগুলোতে চলছে মহাব্যস্ততা। ওয়ার্কশপগুলোতে কর্মীরা দিনরাত সমানে কাজ করছেন। কোথাও চলছে বাসের ঈঞ্জিন ও বডি মেরামত। কোথাও চলছে পুরোনো বাসে নতুন করে রঙের প্রলেপ দেওয়ার কাজ। কোথাও আবার শুধু ফিটনেস টেস্ট করে গাড়ি সড়কে নামানোর প্রস্তুতি চলছে। ওয়ার্কশপ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোজার শেষ দিকে যাত্রীদের চাপ বেশি হতে পারে। এজন্য পর্যাপ্ত বাস প্রস্তুত করে রাখার কাজ করছেন তারা। রাজধানীর আশপাশের গাবতলী, আমিনবাজার, হেমায়েতপুর এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। ওয়ার্কশপগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, পুরাতন বাসের মেরামতের কাজ চলছে। কোনোটা দীর্ঘদিন রাস্তায় চলাচলে রং উঠে যাওয়ায় নতুন করে দেওয়া হচ্ছে রঙের প্রলেপ। কোনোটাই মরিচা ধরা অংশ ফেলে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে জোড়াতালি। আবার কোনোটার চাকা বা অন্যান্য যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা হচ্ছে। গাবতলী বালুর মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, হানিফ পরিবহনের ওয়ার্কশপে প্রায় ডজনখানেক গাড়ির মেরামতের কাজ চলছে। কোনোটাতে রং লাগাচ্ছেন কারিগররা। কোনোটার সামনের গ্লাস পরিষ্কার করছেন। কোনোটার ইঞ্জিন খুলে পরীক্ষা করা হচ্ছে আবার কোনোটায় চলছে ঝালাইয়ের কাজ। এ সময় নানা কর্মযজ্ঞের বিষয়ে হানিফ পরিবহনের ওই ওয়ার্কশপের মিস্ত্রি সিরাজ আহমেদ বলেন, করোনার আগে আমাদের লোক ছিল ৪০ জন। এখন আছে ১৯ জন। এবারের ঈদে করোনার প্রভাব না থাকায় মানুষ সবাই গ্রামে যেতে পারে। তাই আমরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গাড়ি মেরামত করছি। কম লোকবল নিয়েই কাজ সামলাতে হচ্ছে। আশা করছি ২৫ রোজার মধ্যেই মেরামতের কাজ শেষ করতে পারবো। সবগুলোই ফিটনেস পরীক্ষা করে বের করা হবে। সেখানে রঙের কাজে থাকা সাজ্জাদুল বলেন, সারাদিনই কাজ করতে হয়। ঈদের সময় কাজের চাপ বেশি। রোজাও রাখতে পারছি না। একই অবস্থা দেখা গেছে ওই এলাকার শ্যামলী-এনআর পাম্পসহ আশপাশের ওয়ার্কশপে। গাবতলীর পর্বত সিনেমা হল এলাকায় ডিপজল পরিবহনের একটি ওয়ার্কশপে দেখা গেছে একই রকমের ব্যস্ততা। বাসের কি কি কাজ করা হচ্ছে জানতে চাইলে ডিপজল পরিবহনের ওই ওয়ার্কশপের ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ইঞ্জিন ঠিক আছে কি না সেটা আগে দেখি। এতে নতুন কিছু প্রয়োজন হলে লাগাই। তারপর বাসের জং ধরা বা ভাঙা অংশ পরিবর্তন করে নতুন করে রং করি। চাকা পরিবর্তন করতে হয় কোনোটার। পুরো বাসটাকে সাজসজ্জা করে প্রস্তুত করি যেন যাত্রীরা ঈদে নিরাপদে, আরামে ভ্রমণ করতে পারেন। পাশেই আরেকটি ওয়ার্কশপে দেখা গেছে ইউনিক, দর্শনা, শাহ ফতেহ আলীসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির বাসের মেরামতের কাজ চলছে। সবখানেই মেরামত, রঙ ও ধোয়ামোছার কাজ করছেন কর্মীরা। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদ আসলে যাত্রীদের চাপ বাড়ে। ফলে পুরাতন সব বাসেরই কাজ করাতে হয়। কারণ ঈদযাত্রায় যাত্রীদের চাপের তুলনায় বাস থাকে কম। এ বিষয়ে হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার সঞ্জিত দাস বলেন, ঈদের আগের তিন-চার দিন যাত্রীদের অনেক চাপ থাকে। অগ্রিম টিকিট না কাটার কারণে অনেক যাত্রী ভোগান্তিতে পড়ে। তাই সবগুলো পরিবহনই তাদের পুরাতন বাস মেরামত করে প্রস্তুত রাখে যেন যাত্রীরা যেতে পারেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সমুদ্রসম্পদ আহরণের জন্য গবেষণার ওপর জোর দিতে হবে:চসিক মেয়র

ঈদে চলাচলের জন্য রং আর মেরামতে রূপ পাল্টাচ্ছে লক্কড়-ঝক্কড় বাস

আপডেট সময়ঃ ০৮:০৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনা মহামারির কারণে গত চার ঈদে রাজধানীর মানুষ গ্রামে যেতে না পারলেও এবার তেমনটি হচ্ছে না। এবার পরিস্থিতি বদলেছে। করোনা মহামারি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। ফলে এবারের ঈদুল ফিতরে সড়কে থাকবে মানুষের চাপ। বাস টার্মিনাল বা টিকিট কাউন্টারগুলোতে এখনো তার আঁচ পাওয়া না গেলেও মেরামতের ওয়ার্কশপগুলোতে চলছে মহাব্যস্ততা। ওয়ার্কশপগুলোতে কর্মীরা দিনরাত সমানে কাজ করছেন। কোথাও চলছে বাসের ঈঞ্জিন ও বডি মেরামত। কোথাও চলছে পুরোনো বাসে নতুন করে রঙের প্রলেপ দেওয়ার কাজ। কোথাও আবার শুধু ফিটনেস টেস্ট করে গাড়ি সড়কে নামানোর প্রস্তুতি চলছে। ওয়ার্কশপ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রোজার শেষ দিকে যাত্রীদের চাপ বেশি হতে পারে। এজন্য পর্যাপ্ত বাস প্রস্তুত করে রাখার কাজ করছেন তারা। রাজধানীর আশপাশের গাবতলী, আমিনবাজার, হেমায়েতপুর এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। ওয়ার্কশপগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, পুরাতন বাসের মেরামতের কাজ চলছে। কোনোটা দীর্ঘদিন রাস্তায় চলাচলে রং উঠে যাওয়ায় নতুন করে দেওয়া হচ্ছে রঙের প্রলেপ। কোনোটাই মরিচা ধরা অংশ ফেলে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে জোড়াতালি। আবার কোনোটার চাকা বা অন্যান্য যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করা হচ্ছে। গাবতলী বালুর মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, হানিফ পরিবহনের ওয়ার্কশপে প্রায় ডজনখানেক গাড়ির মেরামতের কাজ চলছে। কোনোটাতে রং লাগাচ্ছেন কারিগররা। কোনোটার সামনের গ্লাস পরিষ্কার করছেন। কোনোটার ইঞ্জিন খুলে পরীক্ষা করা হচ্ছে আবার কোনোটায় চলছে ঝালাইয়ের কাজ। এ সময় নানা কর্মযজ্ঞের বিষয়ে হানিফ পরিবহনের ওই ওয়ার্কশপের মিস্ত্রি সিরাজ আহমেদ বলেন, করোনার আগে আমাদের লোক ছিল ৪০ জন। এখন আছে ১৯ জন। এবারের ঈদে করোনার প্রভাব না থাকায় মানুষ সবাই গ্রামে যেতে পারে। তাই আমরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গাড়ি মেরামত করছি। কম লোকবল নিয়েই কাজ সামলাতে হচ্ছে। আশা করছি ২৫ রোজার মধ্যেই মেরামতের কাজ শেষ করতে পারবো। সবগুলোই ফিটনেস পরীক্ষা করে বের করা হবে। সেখানে রঙের কাজে থাকা সাজ্জাদুল বলেন, সারাদিনই কাজ করতে হয়। ঈদের সময় কাজের চাপ বেশি। রোজাও রাখতে পারছি না। একই অবস্থা দেখা গেছে ওই এলাকার শ্যামলী-এনআর পাম্পসহ আশপাশের ওয়ার্কশপে। গাবতলীর পর্বত সিনেমা হল এলাকায় ডিপজল পরিবহনের একটি ওয়ার্কশপে দেখা গেছে একই রকমের ব্যস্ততা। বাসের কি কি কাজ করা হচ্ছে জানতে চাইলে ডিপজল পরিবহনের ওই ওয়ার্কশপের ব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ইঞ্জিন ঠিক আছে কি না সেটা আগে দেখি। এতে নতুন কিছু প্রয়োজন হলে লাগাই। তারপর বাসের জং ধরা বা ভাঙা অংশ পরিবর্তন করে নতুন করে রং করি। চাকা পরিবর্তন করতে হয় কোনোটার। পুরো বাসটাকে সাজসজ্জা করে প্রস্তুত করি যেন যাত্রীরা ঈদে নিরাপদে, আরামে ভ্রমণ করতে পারেন। পাশেই আরেকটি ওয়ার্কশপে দেখা গেছে ইউনিক, দর্শনা, শাহ ফতেহ আলীসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির বাসের মেরামতের কাজ চলছে। সবখানেই মেরামত, রঙ ও ধোয়ামোছার কাজ করছেন কর্মীরা। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদ আসলে যাত্রীদের চাপ বাড়ে। ফলে পুরাতন সব বাসেরই কাজ করাতে হয়। কারণ ঈদযাত্রায় যাত্রীদের চাপের তুলনায় বাস থাকে কম। এ বিষয়ে হানিফ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার সঞ্জিত দাস বলেন, ঈদের আগের তিন-চার দিন যাত্রীদের অনেক চাপ থাকে। অগ্রিম টিকিট না কাটার কারণে অনেক যাত্রী ভোগান্তিতে পড়ে। তাই সবগুলো পরিবহনই তাদের পুরাতন বাস মেরামত করে প্রস্তুত রাখে যেন যাত্রীরা যেতে পারেন।