• বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার

কম বৃষ্টি এবং সার-জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধিতে বিপর্যয়ের শঙ্কায় দেশের কৃষি উৎপাদন

Reporter Name / ৮৫ Time View
Update : রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বৈরী আবহাওয়া ও জ্বালানি মূল্য বৃদ্ধিতে বিপর্যয়ের শঙ্কায় দেশের কৃষি উৎপাদন। ফলে সামগ্রিকভাবে দেশের মূল্যস্ফীতি ও দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। এবার বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত অনেক কম। তাতের কৃষি উৎপাদনে স্বাভাবিকের চেয়ে সেচ বেশি লাগছে। কিন্তু সরকার ও ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষি উৎপাদনের খরচও অনেক বেড়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি বেড়েছে পরিবহণও ভাড়া। ফলে দেশের প্রতিটি কৃষিপণ্যের উৎপাদনেই ব্যয় বাড়বে। জমির আবাদ কমিয়ে দেবেন অনেক কৃষক। অর্থনীতিবিদ এবং কৃষি খাত সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, অতিসম্প্রতি প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৮০ টাকা থেকে ১১৪, অকটেনের দাম ৮৯ থেকে ১৩৫ এবং পেট্রোলের দাম ৮৬ থেকে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ডিজেলে ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ, অকটেনে ৫১ দশমিক ৬৯ এবং পেট্রোলের দাম ৫১ দশমিক ১৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। তার আগে ১ আগস্ট প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের দাম ১৬ থেকে বাড়িয়ে ২২ টাকা করা হয়েছে। শতকরা হিসাবে যা ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ। কৃষি উৎপাদনের মৌলিক দুটি উপাদানের দাম বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই কৃষকের উৎপাদন খরচও বাড়বে। তাতে ব্যাহত হবে উৎপাদন।
সূত্র জানায়, সার ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় চলতি আমন মৌসুমে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় উঠবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। বিশেষ করে বর্গাচাষিরা বেশি সমস্যার মুখোমুখি হবে। সারের দাম বৃদ্ধি এবং অনাবৃষ্টিসহ শ্রমিক ব্যয় ও আনুষঙ্গিক যে ব্যয় হবে তাতে চলতি মৌসুমে আমন চাষে লোকসান হবে। মূলত অনাবৃষ্টি, সার ও তেলের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। এ বছর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে খরা চলছে। ভরা বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই। মানুষ বিকল্প হিসাবে সেচের মাধ্যমে ধান চাষের উদ্যোগ নিয়েছিল। তবে সার ও তেলের দাম বৃদ্ধিতে কৃষি উৎপাদনে খরচ বাড়ছে। বর্তমানে সার ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে কৃষি উৎপাদন খরচ দ্বিগুণের কাছাকাছি হবে। এমন অবস্থায় উৎপাদনের সঙ্গে খরচের সামঞ্জস্য থাকবে না। ফলে কৃষকরা চাষাবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।
এদিকে বিদ্যমান অবস্থা প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদদের অভিমত, জ্বালানি তেল এবং সারের দাম বৃদ্ধির নতুন সিদ্ধান্তে সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কৃষি ও শিল্পোৎপাদন কমে যাবে। বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের উৎপাদন কমবে। সবশেষে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে। ডিজেল ও সার ওই দুটিই পণ্যই কৃষির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। আর দুটি পণ্যের দাম বাড়ানোয় স্বাভাবিকভাবেই কৃষি খাতের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে যাবে। ডিজেলের কারণে সেচ ও পরিবহণ খরচ বাড়বে। তারপর সারের কারণে আরো বাড়বে খরচ। ফলে কৃষি খাতে মারাত্মক প্রভাব পড়বে। আর এমনিতেই বর্তমানে দেশে মূল্যস্ফীতি বেশি। তারপর উৎপাদন ব্যয় বাড়লে তা পুরো অর্থনীতিতে সঙ্কট তৈরি করবে। বিশেষ করে শহরের নিম্ন আয়ের মানুষ ও প্রান্তিক দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর বড় আঘাত আসবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category