নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবদুল জলিল বলেছেন, কর্মকর্তা বলতে কোনো শব্দ নেই। আমরা পাবলিক সার্ভেন্ট, মানে সরকারের কর্মচারী। মানুষের ট্যাক্সের টাকায় আমাদের বেতন হয়। আমরা মানুষের কর্মচারী। তিনি বলেন, আমরা মানুষকে সেবা দেওয়ার জন্য চাকরিতে এসেছি। এই সেবার মনোভাব যদি না থাকত, তাহলে অন্য কিছু করতে পারতাম। ব্যবসা করতে পারতাম। কিন্তু যেহেতু রাষ্ট্রের মানুষের ট্যাক্সের পয়সায় আমার বেতন হয়, তাই মানুষের কাজ করার জন্য আমরা এই চাকরিতে এসেছি। পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে রাজশাহীতে নিয়োগ পাওয়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নতুন কর্মচারীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মচারীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। ডিসি আবদুল জলিল বলেন, মোট ছয় দফায় আমি আমার অফিসে তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির ১১৬ জন কর্মচারী নিয়োগ করেছি। কোনো নিয়োগ পরীক্ষায় রিটেন থেকে শুরু করে ভাইভা পর্যন্ত আমি কোনো ধরনের কোন আপোশ করিনি। আমি আমার অফিসারদের বলেছি, একটা স্বচ্ছ ও ফেয়ার রিক্রুটমেন্ট চাই। আপনারা সাদা মনে আমার ইচ্ছে পূরণ করবেন। তারা আমার এই বিশ্বাস এবং আস্থার মূল্য দিয়েছেন। আমি যতটা ফেয়ার চেয়েছি, তারা এর চেয়েও বেশি ফেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, আমি ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের ভাইভা নিয়েছি। নিয়েছি এই কারণে যে, ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের চাকরি নিয়ে বিগত দিনে অনেক ধরনের কথাবার্তা ছিল। অনেক দুর্নাম ছিল নিয়োগ নিয়ে। হয়তো কিছু সত্য, হয়তো কিছু অতিরঞ্জিত। মানুষকে সার্ভিস দিতে হলে আমাকে একটি স্বচ্ছ নিয়োগ দিতে হবে। অর্থাৎ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে যদি সরকারি কর্মচারীদের নিয়োগ না দিই, তাহলে তাকে দিয়ে সুশাসন কিংবা আইনের কাছাকাছি নিয়ে আমি তাকে দিয়ে কাজ করাতে পারব না। সেজন্য স্বচ্ছভাবে নিয়োগ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমি যদি টাকা নিয়ে কাউকে নিয়োগ দিয়ে বলি- কাজ করবেন স্বচ্ছভাবে, মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেবেন না। তিনি কি আমার এই কথা শুনবেন? আমাকে মনে মনে তারা বলবেন বাটপার। বলবেন, এই লোক নিজে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়ে এখন আমারে বলছেন পয়সা ছাড়া সার্ভিস দিতে। আমি তখনই একজনকে স্বচ্ছভাবে কাজ করার নির্দেশনা দিতে পারব, যদি আমি তাকে স্বচ্ছভাবে নিয়োগ দিই। তাহলে এই অধিকার সম্পূর্ণই আমার আছে। আমরা স্বচ্ছভাবে নিয়োগ দিয়েছি, এখন তাদের সেবক হিসেবে দেখতে চাই। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের রাজশাহীর উপ-পরিচালকের কার্যালয় এই ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন- পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের রাজশাহীর উপ-পরিচালক ড. কুস্তরী আমিনা কুইন। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মো. ফারুক।