• মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার

কাদের মির্জার বিরুদ্ধে ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগ ব্যবসায়ীর

Reporter Name / ৪১১ Time View
Update : শনিবার, ২ অক্টোবর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার আলোচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ করেছেন ফিরোজ আলম মিলন নামের এক ব্যবসায়ী। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন। ফিরোজ আলম মিলন নিজেকে বসুরহাট পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে দাবি করেন। পারিবারিক সূত্রে প্রায় ৫০ বছর ধরে বসুরহাট বাজারে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছেন বলেও দাবি করেন তিনি। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টায় কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছাড়া পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা লোকজন নিয়ে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিরোজ অ্যান্ড ব্রাদার্স এবং মেসার্স হুমায়ন টিম্বার মার্চেন্ট অ্যান্ড স’মিলে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। তিনি বলেন, কাদের মির্জা দুই শতাধিক সন্ত্রাসী নিয়ে বুলডোজার দিয়ে আমার প্রতিষ্ঠানটি গুড়িয়ে দেযন। আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটি বসুরহাটের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এই জায়গাটির প্রতি অশুভ নজর পড়ে পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার। তিনি নানাভাবে জায়গাটি দখল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন বছরের পর বছর। এই ব্যবসায়ী বলেন, আমার জায়গা দখল করার হীন প্রত্যয়ে একপর্যায়ে বসুরহাট পৌরসভার প্যাডে আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সম্পত্তিটি সরকারি খাস জমি উল্লেখ করে নোটিশ প্রদান করেন। এই নোটিশকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে গেলে আদালত আমাদের দলিলপত্র দেখে এই সম্পত্তির ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। আদালতের স্থগিতাদেশ নং- ২৮। আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকলেও পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালাযন। এ সময় তিনি বলেন, সরেজমিনে না দেখলে আপনারা বিশ্বাসই করতে পারবেন না যে, সন্ত্রাসীদের আক্রমণ কতটা ভয়াবহ ছিল। একদিকে বুলডোজার দিয়ে আমার স্থাপনা ভাঙচুর করেছে, অন্যদিকে কারখানায় রক্ষিত কোটি কোটি টাকা মূল্যের ফার্নিচার তৈরির ১০টি মেশিন, ১টি স’মিল, ১টি জেনারেটর, ২০টি সিলিং ফ্যান, ১০টি স্ট্যান্ড ফ্যান, সেগুন কাঠ, সেগুন কাঠের রদ্দা, লৌহা কাঠের রদ্দা, গামারি কাঠ, ঘামারি গাছের পাল্লাসহ তৈরি করা বিভিন্ন আসবাবপত্র সন্ত্রাসীরা পৌরসভার পিকাপ ভ্যান, ট্রাক্টরে করে নিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, আবদুল কাদের মির্জার সঙ্গে আসা সন্ত্রাসী পান লিটন, পাটওয়ারী বাড়ির সাহাব উদ্দিন, বীজ গুদামের পলাশ এবং পলাশের ভাই মুসলিম, গরু সবুজ, ধোয়া স্বপন আমার কারখানার আসবাবপত্র নিয়ে বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করা শুরু করেছেন। এ যেন হরি লুটের এক মহোৎসব। ফিরোজ আলম মিলন বলেন, আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা তাৎক্ষণিককভাবে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কোম্পানীগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে টেলিফোনে অবগত করি। কিন্তু কেউই আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রক্ষা করতে পারেননি। পরে ঘটনার বিশদ বিবরল জানিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে অবগত করি। তিনি বলেন, আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুরে কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন না। আমি কোম্পানীগঞ্জ থানায় ফোন করার পর কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদালতের স্থগিতাদেশ কাগজ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পরও আবদুল কাদের মির্জা ভাঙচুর, লুটপাট অব্যাহত রেখেছেন। এই ব্যবসায়ী বলেন, শুধু আমি নই, গত এক বছর যাবৎ বসুরহাট পৌরসভার ব্যবসায়ী ও জনগণ পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার হাতে জিম্মি। এখানে কোনো আইন-কানুনের বালাই নেই। পৌর মেয়রের ইচ্ছাই আইন। যখন-তখন যে কোনো সম্মানীয় ব্যক্তিকে নির্যাতন-অপমান হরহামেশাই সইতে হয়। পৌরবাসী এসব থেকে মুক্তি চান। ফিরোজ আলম মিলন বলেন, আমার এ প্রতিষ্ঠানটি যে সম্পত্তির ওপর নির্মিত তার পরিমাণ ১৭ শতাংশ। আমি ক্রয়সূত্রে এই সম্পত্তির মালিক। এই সম্পত্তি ১৯৯৮ সালে আমার মরহুম পিতা হাজী হারিস আহমেদ আমাদের চার ভাইয়ের নামে ক্রয় করেন। সম্পত্তিটি বর্তমানে ইসলামি ব্যাংক বসুরহাট শাখায় লোনের বিপরীতে মডগেজ করা আছে। মেসার্স হুমায়ন টিম্বার মার্চেন্ট অ্যান্ড স’মিল নামে ইসলামি ব্যাংক বসুরহাট শাখায় ৩৫ কোটি টাকা লোন আছে। পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার কা-জ্ঞানহীন আচরণে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যেমন অর্থনৈতিক হুমকির মুখে পড়েছে, তেমনিভাবে আমি ও আমার পরিবার বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছি, যা কোলোভাবে পোশাবার নয়। তার অত্যাচারে আমরা এবং ইসলামি ব্যাংক বিশাল একটি আর্থিক বিপর্যয়ে পড়েছি। তিনি বলেন, বসুরহাট বাজারে পৌর মেয়র আবদুল কাদের যেন একটা আতংকের নাম। তার ভয়ে বসুরহাট বাজারে দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীর সমাগম বন্ধের পথে। বসুরহাট বাজারের অনেক ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়েছেন এই কাদের মির্জা। আমার এই প্রতিষ্ঠানটিতে ৩০ জন কর্মচারী কাজ করেন এবং ৩০টি পরিবারের খরচ এই প্রতিষ্ঠানের আয় থেকে বহন করা হয়। তিনি আরও বলেন, বসুরহাট পৌরসভাসহ সমগ্র কোম্পানীগঞ্জ আজ ‘নরকে’ পরিণত হয়েছে। এখানে মানুষের বাকস্বাধীনতা, সম্মান, ইজ্জত, কোনটিই নিরাপদ নয়। শুধু আমি নযই, এ রকম অসংখ্য ব্যবসায়ীকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছেন পৌর মেয়র কাদের মির্জা। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ওবায়দুল কাদেরের কাছে আমার সম্পত্তি ফেরতসহ ক্ষতিপূরণ আদায় ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category