নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের ওপরে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ ও মাটি ভরাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে সংশ্লিষ্টদের আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে হ্রদের সীমানা জরিপ করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট রিপন বাড়–য়া ও সঞ্জয় ম-ল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মঈনুল হাসান। কাপ্তাই হ্রদ দখল জীববৈচিত্র হুমকিতে শিরোনামে একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। হাইকোর্টের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, কাপ্তাই হ্রদ আমাদের একমাত্র প্রাকৃতিক হ্রদ। যেটি অবৈধ দখলের মাধ্যমে ভরাট করা হচ্ছে। দিন দিন লেকটিকে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। সেই কাপ্তাই লেকের অবৈধ দখল নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা এমনকি মেয়রসহ প্রশাসনের লোকজন সবাই মিলে কাপ্তাই লেক দখল করে বাড়ি-ঘর, অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করছেন। এই সংবাদটির প্রেক্ষিতে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করি। আদালত আমাদের রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে কাপ্তাই লেকের অবৈধ দখল বন্ধে প্রশাসনের নি নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারসহ (এসপি) মোট ১২ জনকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালত আদেশে বলেছেন, আগামী এক মাসের মধ্যে কাপ্তাই লেকের রেকর্ড যাচাই বাছাই করে দখলদারকে তালিকা দাখিল করতে বলা হয়েছে। জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দেওয়ার ফলে কাপ্তাই হ্রদের সৃষ্টি হয়। ১৯৫৬ সালে শুরু হওয়া এ বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৬২ সালে। বাঁধের কারণে ৫৪ হাজার একর কৃষিজমি ডুবে যায়, যা ওই এলাকার মোট কৃষিজমির ৪০ শতাংশ। রাঙামাটির বরকল উপজেলার বড় হরিণা এলাকা হচ্ছে বাংলাদেশ প্রান্তে হ্রদের সীমানা। এরপর ভারতের মিজোরামেও এর বিস্তৃতি আছে। মিজোরামের লুসাই পাহাড় থেকে কর্ণফুলীর উৎপত্তি। রাঙ্গামাটির আট উপজেলা ও খাগড়াছড়ির মহালছড়ি এলাকাজুড়ে হ্রদটির অবস্থান। বর্তমানে হ্রদের আয়তন ৬৮ হাজার ৮০০ হেক্টর। রাঙ্গামাটি পৌর এলাকায় হ্রদের জায়গা সবচেয়ে বেশি দখল হয়েছে। আর কিছু জায়গা দখল হয়েছে কাপ্তাই উপজেলায়। তবে কতটা জায়গা দখল হয়েছে, কারা জড়িত, তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা কোনো সংস্থার কাছে নেই।
সর্বশেষঃ
কাপ্তাই হ্রদে স্থাপনা নির্মাণ-মাটি ভরাট বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের
-
দৈনিক আইন বার্তা
- আপডেট সময়ঃ ০৭:৪১:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ অক্টোবর ২০২২
- ১২৯ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ