• সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার

কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ শুরু

Reporter Name / ১৩৯ Time View
Update : শনিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ২৫তম জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম, যা আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। দেশের প্রাথমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির মাধ্যমে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী সব শিশুকে এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিতির মাধ্যমে ১২ থেকে ১৬ বছর বয়সী সব শিশুকে ১ ডোজ কৃমিনাশক ওষুধ (মেবেন্ডাজল ৫০০ মিগ্রা) ভরাপেটে সেবন করানো হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ গত ২১ অক্টোবর রাজধানীর গুলশান-২ অবস্থিত হোটেল আমারিতে ‘ফাইলেরিয়াসিস নির্মূল, কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষুদে চিকিৎসক কার্যক্রম’ নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার একটি অংশ হচ্ছে ফাইলেরিয়াসিস নির্মূল, কৃমি নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষুদে চিকিৎসক কার্যক্রম। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশ থেকে কৃমি নির্মূলের লক্ষ্যে ৫ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। লক্ষ্য হচ্ছে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের সবধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের ৫ থেকে ১৬ বছর বয়সী সব (স্কুলগামী, স্কুল বহির্ভূত, স্কুল থেকে ঝরে পড়া, পথ শিশু, কর্মজীবী শিশু) শিশুকে এক ডোজ কৃমিনাশক ওষুধ বিনামূল্যে সেবন করানো হবে। একইসঙ্গে কৃমির পুনঃসংক্রমণ রোধ করে পরিষ্কার পরিুছন্নতা ও স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। এসব শিশুদের পরিুছন্নতা ও স্বাস্থ্য সম্মত পায়খানা ব্যবহারে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য শিক্ষা দেওয়ার ফলে তা অভ্যাসে পরিণত হবে এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিচর্যার ব্যাপারে সচেতন হবে, যা থেকে ভবিষ্যতে শিশুরা কৃমিসহ অন্যান্য পরজীবী বাহিত রোগব্যাধি থেকে পরিত্রাণ পাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত তথ্য মোতাবেক, কৃমির সংক্রমণ বয়স্ক মানুষের চেয়ে শিশুদের মধ্যেই বেশি (শূন্য থেকে চার বছর ৭ শতাংশ, ৫ থেকে ১৪ বছর ৩২ শতাংশ, ১৫ থেকে ২৪ বছর ১৫ শতাংশ, ২৫ থেকে ৪৪ বছর ৭ শতাংশ, ৪৫ থেকে ৫৪ বছর ৫ শতাংশ এবং ৫৫ বছরের অধিক ৪ শতাংশ) উল্লিখিত জরিপের ওপর ভিত্তি করেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিশুদের মধ্যে এ কৃমি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশে কর্মসূচিটি ২০০৫ সালে প্রথমত: ৩ জেলায় নেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে জুন ২০০৭ পর্যন্ত ১৬ জেলায়, মে ২০০৮ পর্যন্ত ২৪ জেলায় ও নভেম্বর ২০০৮ থেকে ৬৪ টি জেলায় কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমটি সম্প্রসারিত করা হয়। শুরুতে এ কর্মসূচি শুধু প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে সীমিত রেখে চালু করা হয়। কারণ সমাজের ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী অধিক সংখ্যক শিশুর উপস্থিতি প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহজেই নিশ্চিত করা যায়। আর তাই প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন সরকারি-বেসরকারি রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়, কিন্ডারগার্টেন, মক্তব, মাদ্রাসা ও এনজিও পরিচালিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে খুব সহজেই অধিক সংখ্যক শিশুকে কৃমি নিয়ন্ত্রণ বড়ি সেবন করানো যায়। বর্তমানে ৫ বছর বয়সী অনেক শিশুই এখন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে যায়, আর তাই নভেম্বর ২০১০ সাল থেকে ওই কর্মসূচিতে ৫ বছর বয়সী শিশুদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০০৮ সালের নভেম্বর থেকে চালু হওয়া কৃমি নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সাফল্য হিসেবে বক্তারা জানান, সারা দেশের প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (সরকারি, বেসরকারি, ফরমাল, নন-ফরমাল স্কুল, মাদ্রাসা, মক্তব) এবং প্রায় ৩৩ হাজার মাধ্যমিক পর্যায়ের বিদ্যালয়, মাদ্রাসা এ কর্মসূচির আওতাভুক্ত। ২০২১ সালের (এপ্রিল রাউন্ড) মে মাসে বিকল্প ব্যবস্থাপনায় দেশের প্রায় চৌদ্দ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ২৪তম রাউন্ড কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ পালন করা হয়েছে। শিশুদের মধ্যে ওষুধ সেবনের হার প্রত্যেক রাউন্ডেই ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ রয়েছে, শিশুদের মল পরীক্ষায় কৃমির উপস্থিতি ৮০ শতাংশ (২০০৫) থেকে ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশে (২০১৮-১৯) নেমে এসেছে। এবার ওষুধ সেবনকারী শিশুর কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৯৪ লাখ ৩২ হাজার ৮০৪। অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা জানান, কৃমিনাশক ওষুধ সেবনের এ হার অব্যাহত থাকলে এবং দেশের সব শিশুকে পরিষ্কার-পরিুছন্নতা বিষয়ে শিক্ষাদানের মাধ্যমে তাদের অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে প্রতি ঘরে কৃমিমুক্ত শিশু দেখা যাবে। যা সুন্দর ও সুস্থ জাঁতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category