“আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিজেকে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর লোক পরিচয় দিয়ে কোটি টাকা আত্মসাত”
আবদুল মতিন চৌধুরী রিপন বিশেষ প্রতিনিধি :
মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের (এমপিএল) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম/অপা.) মুজিবুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আব্দুস ছাত্তার নামের এক ব্যক্তি। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের জনসংযোগ শাখা এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আয় । বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) তিনটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড এরমধ্যে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড অন্যতম। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের অনিয়ম- দুর্নীতির কারণে ডুবতে বসেছে প্রতিষ্ঠানটি। এরমধ্যে মুজিবুর রহমান চৌধুরী একজন। নিয়োগ ও পদোন্নতি বাণিজ্য, ডিপো থেকে মাসিক লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায়, মামলা পরিচালনা থেকে অর্থ আত্মসাৎ, ভূয়া বিল তৈরি করে টাকা আত্মসাৎ, ও কোম্পানির গাড়ি বিভিন্ন জায়গায় ভাড়ায় খাটিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় ও প্রতি মাসে ডিপোগুলো থেকে প্রায় ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযো ওঠেছে মুজিবুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিজেকে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর লোক পরিচয় দিত। ফলে তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে অনেকেই তার বিরুদ্ধে মুখ খোলা শুরু করেছে। তিনি যেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেখানেই নানান অনিয়মে জড়িয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে অফিসে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করছেন। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শতশত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গড়ে তুলেছেন টাকার পাহাড়। অবৈধ টাকায় নিজ এলাকা হাটহাজারিতে গড়েছেন বিলাসবহুল বাড়ি, কিনেছেন দামি গাড়ি, চট্টগ্রাম শহরে কিনেছেন ফ্ল্যাট, স্ত্রীর জন্য কিনেছেন স্বর্ণ। কিন্তু আয়কর নথিতে উক্ত স্বর্ণকে বৈধ করার জন্য বিবাহের উপহার হিসেবে দেখানো হয়েছে। এছাড়া স্ত্রী এবং সন্তানদের নামে রয়েছে মোটা অংকের এফডিআর ও সঞ্চয়পত্র।
তিনি মূলত আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের প্রধান স্থাপনায় টানা ১২ বছর অপারেশন ইনচার্জ (ওসি) এবং ৩ বছর এজিএম (এম আই) দায়িত্ব পালন করেছেন, মেঘনা পেট্রোলিয়মের ইতিহাসে এমন নজির আর নেই। সেই দায়িত্বে থেকে তিনি কোটি কোটি টাকার তেল চুরি করে গড়ে তুলছেন সম্পদের পাহাড়। তার টাকার ভাগ সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ থেকে শুরু করে কোম্পানির সিবিএ নেতাদেরকেও পৌঁছে দেয়া হতো। তার গ্রামের বাড়ি হাটহাজারীতে রয়েছে শত বিঘা জমি ও মাছের পুকুর। এসব নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তিনি নিজেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে তা বন্ধ করতেন। বর্তমানে খোলস পাল্টে এন্টি আওয়ামী লীগ হওয়ার চেষ্টা করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের (এমপিএল) ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (অপা.অ.দা.)মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরীকে মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়ে কোন সাড়া না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।