০৬:১৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫ | ই-পেপার

ক্লিন ফিড পাঠালেই বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিদেশি চ্যানেলগুলো ক্লিন ফিড (বিজ্ঞাপন ছাড়া অনুষ্ঠান) যখন পাঠাবে তখনই সেগুলোর সম্প্রচার শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আজ বুধবার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে। পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১ অক্টোবর থেকে ক্লিন ফিড নেই এমন বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ক্যাবল অপারেটরদের দু-বছর আগে থেকে তাগাদা দিয়েছি, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বিদেশি চ্যানেলগুলোকে ক্লিন ফিড চালাতে হবে। তাগাদা দেওয়ার পর বেশ কয়েক বার তাদের সঙ্গে বসেছি। মাস দেড়েক আগে সবার সঙ্গে বসেছিলাম, সিদ্ধান্ত ছিল ১ অক্টোবর থেকে ক্লিন ফিড কার্যকর হবে। এটি ছিল সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, এখন আমাকে ক্যাবল অপারেটররা বলছে, বিদেশি টেলিভিশনগুলো এখন ক্লিন ফিড পাঠাবে। আমি বলেছি, ক্লিড ফিড পাঠালে আমরা চালাব, এতদিন পাঠায়নি কেন? ক্লিন ফিড পাঠানোর দায়িত্ব তো তাদেরই। তারা অন্যান্য দেশে পাঠায় আমাদের এখানে পাঠাবে না কেন? তারা (বিদেশি চ্যানেলগুলো) পাঠানোর (ক্লিন ফিড) উদ্যোগ নিয়েছে, পাঠাবে। যখন পাঠাবে তখনই সম্প্রচার শুরু হবে। এর আগে আমি কোনো সময় দেয়ার পক্ষপাতী নই। অনেকগুলো চ্যানেল ক্লিন ফিডসহ সম্প্রচার হচ্ছে। তিনি বলেন, যারা ক্লিন ফিড করে চ্যানেল চালু করতে পারবে তারা চালু করবে, যে পারবে না সে পারবে না। এটির উপকার পুরো গণমাধ্যম পাবে। খুব সহসা এটির উপকার আপনারা দেখতে পাবেন। এটি দেশের স্বার্থেই করা হয়েছে। ক্লিন ফিড হলেও এমন কোনো অনুষ্ঠান প্রচার করা যাবে না, যেগুলো সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। সেটিও আমরা দেখব। যোগ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। ক্যাবল অপারেটররা তাদের আয় থেকে সরকারকে কোনো কর দেয় না জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১ নভেম্বর থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সম্প্রচার মাধ্যম ডিজিটাল করতে হবে। এটি তারা মেনেই নিয়েছেন। যখন ক্যাবল অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড হবে, তখন ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হবে না। বিদেশি শিল্পী দিয়ে বিজ্ঞাপন করার অতিরিক্ত ফি ধার্যের সিদ্ধান্ত খুব সহসা কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি করা হলে দেশের শিল্পীরা ও বিজ্ঞাপন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সবাই উপকৃত হবে। এদিকে পত্রিকার অবাস্তব, ভৌতিক প্রচারসংখ্যা যুগের পর যুগ চলতে পারে না বলে মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী দ বলেন, ডিএফপিতে যে পত্র পত্রিকা প্রকাশ করা হয়, সেটার সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। যাদের এক লাখ প্রচার সংখ্যা বলা আছে অথচ ছাপায় পাঁচ হাজার। এরকম প্রচুর আছে। আমরা সেখানেও শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন, প্রথমে টেলিভিশনের শৃঙ্খলা পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হোক। তারপর পত্রিকায়ও শৃঙ্খলা বাস্তবতার কাছাকাছি আনতে হবে। এরকম অবাস্তব, ভৌতিক প্রচার সংখ্যা যুগের পর যুগ চলতে পারে না। সেখানে একটা শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা করছি আশা করছি সেটা করতে পারব। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কিছু পত্রিকা যেগুলো বের হয় না হঠাৎ হঠাৎ বের হয়। বিজ্ঞাপন, কোরলপত্র পরে বের হয়। এসব পত্রিকার যিনি রিপোর্টার তিনিই সম্পাদক ও প্রকাশক। তাদের একটা ব্রিফকেস আছে। পত্রিকাও ব্রিফকেস-বন্দি। ব্রিফকেসে করে অফিস অফিসে বিলি করে বেড়ায়। মন্ত্রী বলেন, আমরা ব্রিফকেস-বন্দি পত্রিকাগুলো বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি। এমন ২১০টি পত্রিকার বিষয়ে সব ডিসিদের কাছে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। সেগুলো বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরও ২০০টির বেশি রয়েছে এরকম পত্রিকা। সেগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে ধীরে ধীরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি সব সময় বলে থাকি সাংবাদিকরা হচ্ছে সমাজের দর্পণ। আর এই দর্পনের পেছনে যারা কাজ করেন তারা হচ্ছেন সাংবাদিক। আমরা ছোট বেলায় দেখেছি পত্রিকায় কোনো কিছু লিখলে সেটিই সত্য। সেটা কখনো মিথ্যা হতে পারে না। কিন্তু বিশ্বাসযোগ্যতা এখন আর সে জায়গায় নেই। কেন নেই সেটা ভাবার বিষয়। পত্রিকার বিশ্বাসযোগ্যতা আগে যে জায়গায় ছিল এখন আর সেখানে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটিই বাস্তবতা। সেটি কিন্তু দেশের জন্য, সামাজের জন্য ভালো নয়। গণমাধ্যম যদি সঠিকভাবে কাজ করে তাহলে সঠিক ন্যায়ভিত্তিক সমাজ, রাষ্ট্র গঠন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় সংলাপে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সমুদ্রসম্পদ আহরণের জন্য গবেষণার ওপর জোর দিতে হবে:চসিক মেয়র

ক্লিন ফিড পাঠালেই বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার: তথ্যমন্ত্রী

আপডেট সময়ঃ ১০:২২:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ অক্টোবর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিদেশি চ্যানেলগুলো ক্লিন ফিড (বিজ্ঞাপন ছাড়া অনুষ্ঠান) যখন পাঠাবে তখনই সেগুলোর সম্প্রচার শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আজ বুধবার সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে। পূর্ব নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১ অক্টোবর থেকে ক্লিন ফিড নেই এমন বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ক্যাবল অপারেটরদের দু-বছর আগে থেকে তাগাদা দিয়েছি, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বিদেশি চ্যানেলগুলোকে ক্লিন ফিড চালাতে হবে। তাগাদা দেওয়ার পর বেশ কয়েক বার তাদের সঙ্গে বসেছি। মাস দেড়েক আগে সবার সঙ্গে বসেছিলাম, সিদ্ধান্ত ছিল ১ অক্টোবর থেকে ক্লিন ফিড কার্যকর হবে। এটি ছিল সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, এখন আমাকে ক্যাবল অপারেটররা বলছে, বিদেশি টেলিভিশনগুলো এখন ক্লিন ফিড পাঠাবে। আমি বলেছি, ক্লিড ফিড পাঠালে আমরা চালাব, এতদিন পাঠায়নি কেন? ক্লিন ফিড পাঠানোর দায়িত্ব তো তাদেরই। তারা অন্যান্য দেশে পাঠায় আমাদের এখানে পাঠাবে না কেন? তারা (বিদেশি চ্যানেলগুলো) পাঠানোর (ক্লিন ফিড) উদ্যোগ নিয়েছে, পাঠাবে। যখন পাঠাবে তখনই সম্প্রচার শুরু হবে। এর আগে আমি কোনো সময় দেয়ার পক্ষপাতী নই। অনেকগুলো চ্যানেল ক্লিন ফিডসহ সম্প্রচার হচ্ছে। তিনি বলেন, যারা ক্লিন ফিড করে চ্যানেল চালু করতে পারবে তারা চালু করবে, যে পারবে না সে পারবে না। এটির উপকার পুরো গণমাধ্যম পাবে। খুব সহসা এটির উপকার আপনারা দেখতে পাবেন। এটি দেশের স্বার্থেই করা হয়েছে। ক্লিন ফিড হলেও এমন কোনো অনুষ্ঠান প্রচার করা যাবে না, যেগুলো সমাজে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। সেটিও আমরা দেখব। যোগ করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। ক্যাবল অপারেটররা তাদের আয় থেকে সরকারকে কোনো কর দেয় না জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১ নভেম্বর থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সম্প্রচার মাধ্যম ডিজিটাল করতে হবে। এটি তারা মেনেই নিয়েছেন। যখন ক্যাবল অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড হবে, তখন ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হবে না। বিদেশি শিল্পী দিয়ে বিজ্ঞাপন করার অতিরিক্ত ফি ধার্যের সিদ্ধান্ত খুব সহসা কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটি করা হলে দেশের শিল্পীরা ও বিজ্ঞাপন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সবাই উপকৃত হবে। এদিকে পত্রিকার অবাস্তব, ভৌতিক প্রচারসংখ্যা যুগের পর যুগ চলতে পারে না বলে মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী দ বলেন, ডিএফপিতে যে পত্র পত্রিকা প্রকাশ করা হয়, সেটার সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। যাদের এক লাখ প্রচার সংখ্যা বলা আছে অথচ ছাপায় পাঁচ হাজার। এরকম প্রচুর আছে। আমরা সেখানেও শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন, প্রথমে টেলিভিশনের শৃঙ্খলা পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হোক। তারপর পত্রিকায়ও শৃঙ্খলা বাস্তবতার কাছাকাছি আনতে হবে। এরকম অবাস্তব, ভৌতিক প্রচার সংখ্যা যুগের পর যুগ চলতে পারে না। সেখানে একটা শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা করছি আশা করছি সেটা করতে পারব। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কিছু পত্রিকা যেগুলো বের হয় না হঠাৎ হঠাৎ বের হয়। বিজ্ঞাপন, কোরলপত্র পরে বের হয়। এসব পত্রিকার যিনি রিপোর্টার তিনিই সম্পাদক ও প্রকাশক। তাদের একটা ব্রিফকেস আছে। পত্রিকাও ব্রিফকেস-বন্দি। ব্রিফকেসে করে অফিস অফিসে বিলি করে বেড়ায়। মন্ত্রী বলেন, আমরা ব্রিফকেস-বন্দি পত্রিকাগুলো বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি। এমন ২১০টি পত্রিকার বিষয়ে সব ডিসিদের কাছে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। সেগুলো বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আরও ২০০টির বেশি রয়েছে এরকম পত্রিকা। সেগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে ধীরে ধীরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি সব সময় বলে থাকি সাংবাদিকরা হচ্ছে সমাজের দর্পণ। আর এই দর্পনের পেছনে যারা কাজ করেন তারা হচ্ছেন সাংবাদিক। আমরা ছোট বেলায় দেখেছি পত্রিকায় কোনো কিছু লিখলে সেটিই সত্য। সেটা কখনো মিথ্যা হতে পারে না। কিন্তু বিশ্বাসযোগ্যতা এখন আর সে জায়গায় নেই। কেন নেই সেটা ভাবার বিষয়। পত্রিকার বিশ্বাসযোগ্যতা আগে যে জায়গায় ছিল এখন আর সেখানে নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটিই বাস্তবতা। সেটি কিন্তু দেশের জন্য, সামাজের জন্য ভালো নয়। গণমাধ্যম যদি সঠিকভাবে কাজ করে তাহলে সঠিক ন্যায়ভিত্তিক সমাজ, রাষ্ট্র গঠন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় সংলাপে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া উপস্থিত ছিলেন।