নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে টুস করে ফেলে দেওয়ার কথাটি পলিটিক্যাল হিউমার বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আজ সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বিএনপিকে চা খাওয়ার দাওয়াত, এটি বলে কি সংলাপের বিষয়টি ইঙ্গিত করেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, পলিটিক্যাল হিউমার আছে। যেমন বেগম জিয়াকে কি নেত্রী টুস করে ফেলে দিতে বলছেন? এটা তো একটা হিউমার। এটা তারা ঘেরাও করবেন, আন্দোলন করবেন, অভ্যুত্থান করবেন এটারই একটা জবাব। হিউমারের দিক থেকে উনি বলেছেন যে ঠিক আছে, আসেন। অবশ্য এটাও ঠিক, তারা যদি কোনো ঘেরাও টেরাও নিয়ে আসে প্রধানমন্ত্রী বলতেও পারেন নেতাদের নিয়ে আসেন, এটা উনি করতেও পারেন। আসলে এটা ওঁর রুচিবোধের মধ্যে আছে। এটা নিয়ে অন্য কিছু ভাবার কারণ নেই। ফখরুল সাহেবরা ঘেরাও করতে আসলে তাদের চা খাওয়ালে অসুবিধা কি! বিএনপির সঙ্গে সংলাপ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ বিষয়টি যেহেতু এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি, আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। কারণ সংলাপের বিষয়টি দলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার, সরকারের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। প্রধানমন্ত্রী যখন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন, তখন আপনারা জানতে পারবেন। এটা তো ওপেন সিক্রেট। সংলাপের সুযোগ থাকছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো এসব নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কাজেই আমি এ সিদ্ধান্তটা আগাম কেন বলব? নির্বাচন কমিশনের সংলাপে বিএনপি যায়নি, এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশনে বিএনপির যাওয়াটা তাদের অধিকার। তারা এখন যদি নিজেরা ইচ্ছে করে না যান, সেখানে আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে কি বলব? আমরা তাদের যদি বলি তাহলে বলব নির্বাচন কমিশনের সংলাপে সবার যাওয়া উচিত। এবং আমরা একটা প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন চাই। সেজন্য বিএনপির মতো একটি বড় দল বাইরে থাকবে সেটি ঠিক নয়। আমরা মনে করি তারা আসুক। আমরা মনে প্রাণে চাই নির্বাচনটা তাদের সঙ্গে হোক। এদিকে ওবায়দুল কাদের জানান, বিশ্বব্যাপী জ¦ালানি সংকটের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদের সবাইকে খরচ কমানোর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনকি গাড়ির তেল খরচ করে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের ছুটোছুটি না করে ভার্চুয়ালি যোগাযোগ বাড়ানোরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি এমন নির্দেশনা দেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এখন যে সংকট হচ্ছে সেটা আসলে বৈশ্বিক, একইভাবে বাংলাদেশেরও। এই সংকট আরও বাড়বে কিনা, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। দেশে এখন জ¦ালানি নিয়ে সংকট আছে স্বীকার করে সেতুমন্ত্রী বলেন, তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কোনও সমস্যা সমাধানের জন্য পারদর্শী। তাই এই সমস্যাও বেশিদিন থাকবে না।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতিতে অটল সরকার: সব ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাÐের নিন্দা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার সন্ত্রাস ও সহিংসতা রোদে সম্ভাব্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা নীতিতে অটল সরকার। গতকাল সোমবার রাজধানীর উত্তরায় দিয়াবাড়িতে হলি আর্টিসান হামলায় নিহত সাত জাপানি নাগরিকের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানার পর তিনি এসব কথা বলেন। নিহত ওই সাত জাপানি ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের প্রস্তুতিমূলক সমীক্ষা টিমের সদস্য ছিলেন। নিহত জাপানি নাগরিক এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের মৃত্যুতে শুধু পরিবার এবং জাপানই নয়, বিশ্ববাসীও হারিয়েছে ম্যাস র?্যাপিড ট্রানজিট বিশেষজ্ঞদের। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) প্রেসিডেন্ট তানাকা আকিহিতো, জাপান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার হোন্ডা তারো, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরি, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
ফজলে রাব্বী মিয়া রাজনীতিতে ভালো মানুষ ছিলেন: জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া রাজনীতিতে একজন ভালো মানুষ, একজন ভালো নেতা ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের। গতকাল সোমবার জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ডেপুটি স্পিকারের জানাজা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এমন কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ফজলে রাব্বী মিয়া কতটা ভালো মানুষ ছিলেন, কতটা তিনি জনপ্রিয় ছিলেন সেটা নতুন করে ব্যাখ্যা করে বলার কিছু নেই। একটি নির্বাচনী এলাকা থেকে পরপর সাতবার তিনি নির্বাচিত হন। এতেই বোঝা যায় তার জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। তিনি বলেন, তিনি অত্যন্ত বিনয়ী, সদালাপী, নির্লোভ, নিরহংকারী মানুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি অত্যন্ত অনুগত। ওঁর মতো এমন নেতা আমাদের মধ্য থেকে চিরতরে চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য খুবই দুঃখজনক। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনীতিতে সৎ মানুষের অনেক দাম। আমরা ফজলে রাব্বীর মূল্যবোধকে ধারণ করতে চাই। নির্লোভ-নিরহংকার এক কথায় ভালো মানুষ। ফজলে রাব্বী চলে গেলেন, রাজনীতি থেকে একজন ভালো মানুষের চিরবিদায় হলো।