নিজস্ব প্রতিবেদক :
‘খালেদা জিয়া একজন মুক্ত মানুষ, এই মুক্ত মানুষকে কীভাবে মুক্ত করব’ বলে প্রশ্ন রেখেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি আবার আন্দোলনে যাচ্ছে। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, দেখেন, আমি একটা কথা বুঝতে পারছি না, সেটা হচ্ছে, খালেদা জিয়া মুক্ত। এই মুক্ত মানুষকে কীভাবে মুক্তি দেব? আমি বুঝি উঠতে পারছি না, এখানেই আমার বক্তব্য শেষ। এর আগে গত সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এবং মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি ও নজিরবিহীন দুর্নীতির প্রতিবাদে কর্মসূচিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত ঢাকাসহ সারাদেশের মহানগর ও জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশগুলি সফল করায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয় এবং তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণের জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলে জানানো হয়। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আইনজীবী নিয়োগ করে কোটাবিরোধীরা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুলক হক। তিনি বলেন, রাজপথে আন্দোলন করে বা চেঁচামেচি করে এটার নিরসন হবে না। সঠিক জায়গা হচ্ছে পক্ষভুক্ত হয়ে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন, অবশ্যই আপিল বিভাগ সবার বক্তব্য শুনবেন এবং সবার বক্তব্য শুনে আপিল বিভাগ ন্যায়বিচার করবেন। কোটা আন্দোলনের বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত স্পষ্ট করেই বলেছেন, এটা সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয় না, কোটার ইস্যুটি এখন সর্বোচ্চ আদালতের কাছে আছে। সর্বোচ্চ আদালত সেখানে সিদ্ধান্ত নিলে তারা সব পক্ষের কথা শুনে তারপরে সবদিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত দেবেন বলে আমি মনে করি। কোটা আন্দোলনে রাজপথে মানুষের সমস্যা হচ্ছে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি শুনেছি, আপিল বিভাগের যে মামলা, সেখানে তারা (কোটাবিরোধীরা) পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য দরখাস্ত করেছেন। এই পক্ষভুক্ত হওয়ার দরখাস্ত নিয়ে আগামীকাল (আজ বুধবার) শুনানি হবে। আমি মনে করছি, তারা সঠিক পথে হাঁটছেন। যখন হাইকোর্ট বিভাগে এই মামলা চলে, তখন এখন যারা কোটাবিরোধী আন্দোলন করছেন, তাদের বক্তব্য পেশ করার জন্য আদালতে উপস্থাপন করার জন্য আইনজীবী নিয়োগ করেননি। তাদের বক্তব্য সেখানে দেননি। তারপরে মামলার রায় হলে সেটা আপিল বিভাগে আছে। সেখানে গতকাল (গত সোমবার) পর্যন্ত তাদের কোনো আইনজীবী ছিল না। এই কথাটা বলছি এই কারণে যে ঘটনা ঘটেছে আদালতে। আনিসুল হক আরও বলেন, রাজপথে আন্দোলন করে বা চেঁচামেচি করে এটার নিরসন হবে না। এটা করলে যেটা হয়, একপর্যায়ে হয়ত আদালত অবমাননাও হয়ে যেতে পারে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে কোটাবিরোধীরা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমি এটিকে স্বাগত জানাই। তাদের বক্তব্য তারা আদালতে দেবেন। যেহেতু তারা আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন। এটা কী সম্ভব যে, একজন আবেদন করেছেন; আরেকজন এসে পক্ষভুক্ত হবেন? উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ইন্টারভেনার বলে একটা শব্দ আছে ওখানে। যার স্বার্থ আছে, অ্যাগ্রিভড (সংক্ষুব্ধ) যিনি, যেকোনো সময় তিনি যৌক্তিক কথা বলে আদালতে আবেদন করেন, আদালত সেটা বিবেচনা করবেন।