০৫:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫ | ই-পেপার

গণকমিশনের ভিত্তি নেই, বিশৃঙ্খলা করলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণকমিশনের কোনো ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, গণকমিশনের নামে কেউ বিশৃঙ্খলা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিন লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের ২৭তম বার্ষিক সম্মেলন হয়। এসময় গণকমিশনের তালিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা ‘২০০৩-এ সন্ত্রাস’ নামে একটি বই প্রকাশ করেছে। এর ভেতরে কী লিখেছে আমি জানি না। তারা যাদের নামে সন্ত্রাস কিংবা দুর্নীতির দায়ভার দিচ্ছে সেটা আমরা দেখিনি, তাই এর সম্পর্কে কিছু বলতে পারবো না। সম্প্রতি ১১৬ ওয়ায়েজিনের (ধর্মীয় বক্তা) একটি তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দিয়েছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমন্বয়ে গঠিত মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গঠিত গণকমিশন। দুদক চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া ২২শ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের ৭৬০ ও ৭৬১ পৃষ্ঠায় ধর্মীয় বক্তাদের নাম প্রকাশ করা হয়। এদের বিরুদ্ধে জঙ্গি অর্থায়ন ও ওয়াজের মাধ্যমে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার অভিযোগ আনে গণকমিশন। গণকমিশনের চেয়ারম্যান হলেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ। সে সময় অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি বলেন, আমরা নয় মাস তদন্ত করেছি। বহু ভুক্তভোগীর সাক্ষ্য নিয়েছি। দুদক চেয়ারম্যান আমাদের জানিয়েছেন অর্ধশতাধিক ওয়াজ ব্যবসায়ীর দুর্নীতির খোঁজ শুরু করেছেন। ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ও হেফাজতের কর্মকা- উঠে এসেছে। তাদের অর্থনৈতিক জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তার নামে যে বা যারা চাঁদাবাজি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে। সতর্ক করে দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার নামে চাঁদাবাজি করবে কেন। আইনের চোখে সবাই সমান। যে অপরাধ করবে তাকেই পেতে হবে শাস্তি। যে আমার নামে চাঁদাবাজি করতে গিয়েছিল তাকে ধরা হয়েছে, তার কাছে একটি অস্ত্র পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, আমার নামে চাঁদাদাবির বিষয়টি শোনার পরই ব্যবস্থা নেয় র‌্যাব। যারা এ ধরনের চাঁদাবাজি করবে, সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে কিছু লোক চাঁদাবাজি করে আসছে- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাত ৩টায় রাজধানীর সবুজবাগে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে জব্দ করা হয় একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, দুই রাউন্ড গুলি ও ৫৭৮ পিস ইয়াবা। এরপর সাঈদীকে নিয়ে অভিযানে নামে র‌্যাব। অভিযান শেষে সাঈদীকে নিয়ে র‌্যাব সদস্যরা রাস্তায় বের হলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জোবায়ের আহাম্মেদের নেতৃত্বে ১৫০-২০০ জন সাঈদীকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারা র‌্যাবের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় জোবায়েরকে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সবুজবাগ থানায় মামলা হয়েছে। মাদক ও অস্ত্র আইনে সাঈদীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। আর সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় জোবায়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে একটি। সবকটি মামলা করেছে র‌্যাব। এদিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করেছেন সাঈদী। এ ছাড়া তিনি তার সহযোগীদের নিয়ে অস্ত্রসহ মহড়া দিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিলেন বলেও স্বীকার করেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সমুদ্রসম্পদ আহরণের জন্য গবেষণার ওপর জোর দিতে হবে:চসিক মেয়র

গণকমিশনের ভিত্তি নেই, বিশৃঙ্খলা করলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেট সময়ঃ ১১:০৮:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ মে ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
গণকমিশনের কোনো ভিত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, গণকমিশনের নামে কেউ বিশৃঙ্খলা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিন লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের ২৭তম বার্ষিক সম্মেলন হয়। এসময় গণকমিশনের তালিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা ‘২০০৩-এ সন্ত্রাস’ নামে একটি বই প্রকাশ করেছে। এর ভেতরে কী লিখেছে আমি জানি না। তারা যাদের নামে সন্ত্রাস কিংবা দুর্নীতির দায়ভার দিচ্ছে সেটা আমরা দেখিনি, তাই এর সম্পর্কে কিছু বলতে পারবো না। সম্প্রতি ১১৬ ওয়ায়েজিনের (ধর্মীয় বক্তা) একটি তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দিয়েছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমন্বয়ে গঠিত মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গঠিত গণকমিশন। দুদক চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া ২২শ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের ৭৬০ ও ৭৬১ পৃষ্ঠায় ধর্মীয় বক্তাদের নাম প্রকাশ করা হয়। এদের বিরুদ্ধে জঙ্গি অর্থায়ন ও ওয়াজের মাধ্যমে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার অভিযোগ আনে গণকমিশন। গণকমিশনের চেয়ারম্যান হলেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ। সে সময় অবসরপ্রাপ্ত এই বিচারপতি বলেন, আমরা নয় মাস তদন্ত করেছি। বহু ভুক্তভোগীর সাক্ষ্য নিয়েছি। দুদক চেয়ারম্যান আমাদের জানিয়েছেন অর্ধশতাধিক ওয়াজ ব্যবসায়ীর দুর্নীতির খোঁজ শুরু করেছেন। ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ও হেফাজতের কর্মকা- উঠে এসেছে। তাদের অর্থনৈতিক জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তার নামে যে বা যারা চাঁদাবাজি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে। সতর্ক করে দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমার নামে চাঁদাবাজি করবে কেন। আইনের চোখে সবাই সমান। যে অপরাধ করবে তাকেই পেতে হবে শাস্তি। যে আমার নামে চাঁদাবাজি করতে গিয়েছিল তাকে ধরা হয়েছে, তার কাছে একটি অস্ত্র পাওয়া গেছে। তিনি আরও বলেন, আমার নামে চাঁদাদাবির বিষয়টি শোনার পরই ব্যবস্থা নেয় র‌্যাব। যারা এ ধরনের চাঁদাবাজি করবে, সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে কিছু লোক চাঁদাবাজি করে আসছে- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার রাত ৩টায় রাজধানীর সবুজবাগে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে জব্দ করা হয় একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, দুই রাউন্ড গুলি ও ৫৭৮ পিস ইয়াবা। এরপর সাঈদীকে নিয়ে অভিযানে নামে র‌্যাব। অভিযান শেষে সাঈদীকে নিয়ে র‌্যাব সদস্যরা রাস্তায় বের হলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জোবায়ের আহাম্মেদের নেতৃত্বে ১৫০-২০০ জন সাঈদীকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তারা র‌্যাবের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় জোবায়েরকে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সবুজবাগ থানায় মামলা হয়েছে। মাদক ও অস্ত্র আইনে সাঈদীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। আর সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় জোবায়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে একটি। সবকটি মামলা করেছে র‌্যাব। এদিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করেছেন সাঈদী। এ ছাড়া তিনি তার সহযোগীদের নিয়ে অস্ত্রসহ মহড়া দিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিলেন বলেও স্বীকার করেন।