হাজী মুছা :
শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিতে শহর এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমন্বয় অপরিহার্য বলে জানিয়েছেন জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘যে শিক্ষার্থী আরবান সেটিংয়ে বড় হয়, সে হয়তো স্কুল শেষে বাসায় ফিরে সুইমিং পুলে সাঁতার শেখে। আর গ্রামীণ সেটিংয়ে যে শিক্ষার্থী বড় হয়, সেই দুরন্ত কিশোর স্কুল শেষে এক দফা নদীতে, খালে, বিলে ঝাপিয়ে পড়ে সাঁতার শেখে। দুজনের সুইমিং শেখার স্টাইল ভিন্ন। আরবানের শিক্ষার্থী সুইমিং পুলে হিমশিম খায়। আর গ্রামের সেই কিশোর খুব অল্প সময়ে দক্ষ সুইমিং শিখে ফেলে। হয়তো বা সে নিজেও বোঝে না কখন সে সাঁতার কাটতে শিখেছে। আমাদের বাংলাদেশটা এমন যে, এই দুরন্তপনার দু’দলকে নিয়ে আমরা কাজ করছি। অপরিকল্পিত নগর গড়ে উঠছে। আবার গ্রামগুলো যে সুন্দর-সজীব জায়গায় ছিল, সেটিও অপরিকল্পিত উপায় কেমন যেন একটু মিশ্র জায়গায় চলে গিয়েছে। এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামগুলো গোছানোর উদ্যোগ নিয়েছেন।’
মঙ্গলবার (১০ মে) রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে এথিক্স অ্যাডভান্স টেকনোলজি লিমিটেড (ইএটিএল) আয়োজিত এডুটিউভ কুইজ কনটেস্ট ২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য। উপাচার্য আরও বলেন, ‘দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করার অনেক বড় চ্যালেঞ্জ আছে। সেই চ্যালেঞ্জকে কিভাবে মোকাবেলা করা হবে সেটি একটা দিক। তবে এই দু’দলের সমন্বয় খুব জরুরি। কুইজ প্রতিযোগিতার মধ্যে যদি সেই উপসর্গ নিয়ে ভাবা যায় তাহলে নতুন কিছু হবে। অন্যথায় এটি সাধারণ প্রতিযোগিতার মতো হবে।’
উপাচার্য কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজকদের উদ্দেশে বলেন, ‘সারা বাংলাদেশের স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই প্রতিযোগিতা হচ্ছে। এরমধ্যে প্রান্তিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা যেমন আছে, তেমনি শহরের ছেলে-মেয়েরাও আছে। যেই লক্ষ শিক্ষার্থীদের সামনে রেখে এই আয়োজন- তাদের জন্য প্রতিযোগিতার মূল সেশনের পরে আলাদা সেশন করা যায় কিনা সেটিও ভাবনার বিষয় আছে, যেখানে নলেজ শেয়ারিং হবে। আপনি যে প্রশ্ন করে তাকে আটকে দিচ্ছেন, সে যেন ওই সেশনের পরেই প্রশ্নের উত্তর জানতে পারে। তার নিজের প্রশ্নগুলো যেন বড়দের কাছে করতে পারে। আমাদের সমাজের একটি অভ্যাস হয়ে গেছে- বড়রা প্রশ্ন করবে আর ছোটরা উত্তর দেবে। এই ধারা ভাঙতে হবে। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করার অধিকার থাকছে কিনা, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে এর সফলতা আসবে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বিশ^ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মারসি এম. টেম্বন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইএটিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান।