ঢাকা ০৪:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

চমেক হাসপাতালে লাশ ধর্ষণ: বন্ধ হচ্ছে সেই মর্গ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে এক পাহারাদার গ্রেপ্তারের পর এবার সেই মর্গ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কতৃপক্ষ। আজ বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান। তিনি বলেন, একসময় মর্গ না থাকায় আমাদের এটির প্রয়োজন ছিল। এখন কলেজের ফরেনসিক বিভাগের এখানে মর্গ আছে। যেসব মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রয়োজন হবে, আমরা সেগুলো পুলিশের মাধ্যমে সেখানে পাঠিয়ে দেবো। এটিকে আমরা সিকিউরিটি সেল বা স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহার করবো। এটি আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। চমেক অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, অনেকে মনে করেছেন ফরেনসিক বিভাগের মর্গে ঘটনাটি ঘটেছে। আমাদের মর্গ যথেষ্ট সুরক্ষিত আছে। ঘটনাটি ঘটেছে হাসপাতালের মর্গে। গত সোমবার এক নারী ও এক কন্যাশিশুর লাশ ধর্ষণের অভিযোগে চমেক হাসপাতাল মর্গের পাহারাদার মো. সেলিমকে (৪৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তিনি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মৃত নোয়াব আলীর ছেলে। চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট খাজা রোড এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন সেলিম। তিনি অস্থায়ী ভিত্তিতে হাসপাতাল মর্গের পাহারাদার হিসেবে কাজ করতেন। সিআইডি সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নগরের চকবাজার থানা এলাকা থেকে আনুমানিক ৩২ বয়সী এক নারীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে পাঠায় পুলিশ। একই বছরের ২৫ এপ্রিল ১২ বছর বয়সী এক কন্যাশিশুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে পাঠানো হয়। মৃত্যুর পূর্বে ধর্ষণ হয়েছে কিনা জানার জন্য মর্গের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক লাশ দুটি থেকে বীর্যের নমুনা সিআইডির ল্যাবে পাঠান। সেখানে দুই মরদেহে একই ব্যক্তির বীর্য পাওয়া যায়। এরপর চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তবে তদন্তকালে দুই মরদেহের ক্ষেত্রে মৃত্যুর আগে ধর্ষণের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তারপরও ঘটনার তদন্তে লেগে থাকে সিআইডি। একপর্যায়ে তদন্তে পাওয়া যায় দুইটি লাশ ময়নাতদন্তের পূর্বে দীর্ঘক্ষণ চমেকের মর্গে ছিল। ওইসময় ওই মর্গের পাহারাদার ছিলেন সেলিম। সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে সেলিম ওই দুই মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়। এরপর সোমবার চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন তার বিরুদ্ধে নগরের পাঁচলাইশ থানায় সিআইডি চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো ইউনিটের এসআই কৃষ্ণ কমল ভৌমিক বাদী হয়ে দ-বিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করেন। এর ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে এবং সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে সেলিমকে গত মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিমের আদালত তাকে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পেঁয়াজ উৎপাদন নিয়ে কৃষকের লোকসানের শঙ্কা বাড়ছে

চমেক হাসপাতালে লাশ ধর্ষণ: বন্ধ হচ্ছে সেই মর্গ

আপডেট সময়ঃ ০৮:১৭:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ মার্চ ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিকৃত যৌনাচারের অভিযোগে এক পাহারাদার গ্রেপ্তারের পর এবার সেই মর্গ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল কতৃপক্ষ। আজ বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান। তিনি বলেন, একসময় মর্গ না থাকায় আমাদের এটির প্রয়োজন ছিল। এখন কলেজের ফরেনসিক বিভাগের এখানে মর্গ আছে। যেসব মরদেহের ময়নাতদন্ত প্রয়োজন হবে, আমরা সেগুলো পুলিশের মাধ্যমে সেখানে পাঠিয়ে দেবো। এটিকে আমরা সিকিউরিটি সেল বা স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহার করবো। এটি আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। চমেক অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, অনেকে মনে করেছেন ফরেনসিক বিভাগের মর্গে ঘটনাটি ঘটেছে। আমাদের মর্গ যথেষ্ট সুরক্ষিত আছে। ঘটনাটি ঘটেছে হাসপাতালের মর্গে। গত সোমবার এক নারী ও এক কন্যাশিশুর লাশ ধর্ষণের অভিযোগে চমেক হাসপাতাল মর্গের পাহারাদার মো. সেলিমকে (৪৮) গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তিনি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মৃত নোয়াব আলীর ছেলে। চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট খাজা রোড এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন সেলিম। তিনি অস্থায়ী ভিত্তিতে হাসপাতাল মর্গের পাহারাদার হিসেবে কাজ করতেন। সিআইডি সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নগরের চকবাজার থানা এলাকা থেকে আনুমানিক ৩২ বয়সী এক নারীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে পাঠায় পুলিশ। একই বছরের ২৫ এপ্রিল ১২ বছর বয়সী এক কন্যাশিশুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক মর্গে পাঠানো হয়। মৃত্যুর পূর্বে ধর্ষণ হয়েছে কিনা জানার জন্য মর্গের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক লাশ দুটি থেকে বীর্যের নমুনা সিআইডির ল্যাবে পাঠান। সেখানে দুই মরদেহে একই ব্যক্তির বীর্য পাওয়া যায়। এরপর চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তবে তদন্তকালে দুই মরদেহের ক্ষেত্রে মৃত্যুর আগে ধর্ষণের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তারপরও ঘটনার তদন্তে লেগে থাকে সিআইডি। একপর্যায়ে তদন্তে পাওয়া যায় দুইটি লাশ ময়নাতদন্তের পূর্বে দীর্ঘক্ষণ চমেকের মর্গে ছিল। ওইসময় ওই মর্গের পাহারাদার ছিলেন সেলিম। সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে সেলিম ওই দুই মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়। এরপর সোমবার চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন তার বিরুদ্ধে নগরের পাঁচলাইশ থানায় সিআইডি চট্টগ্রাম জেলা ও মেট্রো ইউনিটের এসআই কৃষ্ণ কমল ভৌমিক বাদী হয়ে দ-বিধির সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করেন। এর ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে এবং সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে সেলিমকে গত মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিমের আদালত তাকে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।