অর্থনীতি ডেস্ক :
কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতে ইসলামি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন একটি তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (আইডিবি) অর্থায়নে প্রায় চারশ কোটি টাকার এ তহবিল থেকে বিনিয়োগ করবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এখান থেকে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ১৮ শতাংশ মুনাফায় অর্থায়ন করা যাবে। আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে অর্থায়ন করা হবে। রোববার এ বিষয়ে একটি নীতিমালা সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়েছে, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের পুনরুদ্ধারের জন্য নতুন এ তহবিল গঠন করা হয়েছে। তহবিলের আকার হবে ৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার সমপরিমাণ ৩৯৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এখান থেকে পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং প্রচলিত ধারার যেসব ব্যাংকের ইসলামি ব্যাংকিং শাখা বা উইন্ডো রয়েছে তারা এ তহবিল থেকে অর্থ পাবে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, শরিয়াহভিত্তিক পরিচালিত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান তহবিল থেকে মুরাবাহ অর্থায়ন পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে সম্পদ কেনার আগেই অর্থায়ন পাবে। প্রচলিত পদ্ধতিতে যা প্রিফাইন্যান্স হিসেবে বিবেচিত। এ উপায়ে স্থায়ী সম্পদ, সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি কেনার জন্য বিনিয়োগ করা যাবে। এ ছাড়া কাঁচামাল কেনার জন্য চলতি মূলধন সহায়তা দিতে পারবে। অর্থায়ন নেওয়ার পর পরিশোধ পদ্ধতি হবে ভিন্ন ভিন্ন। নতুন সম্পদ কেনার জন্য অর্থায়ন নিয়ে মুনাফাসহ কিস্তিতে পরিশোধ করা যাবে। কোনো অবস্থায় এ তহবিল থেকে ব্যক্তিগত খাতে অর্থায়ন, শেয়ার ক্রয়সহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করা যাবে না। তহবিল পেতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম থাকতে হবে অন্তত তিন বছর। আর সর্বশেষ আর্থিক বছরে খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের বেশি হলে ওই প্রতিষ্ঠান অর্থায়ন পাবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে মূলধন সংরক্ষণে সক্ষম হতে হবে। এ ছাড়া সিআরআর ও এসএলআর সংরক্ষণের সক্ষমতা থাকতে হবে। শেষ দুই বছর মুনাফায় থাকতে হবে। প্রতিষ্ঠানটিকে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ আইন, গ্রিন ব্যাংকিং ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সুবিধা দিতে গত বছরের ২৪ জুন আইডিবির সঙ্গে সরকারে অর্থায়ন চুক্তি সই হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারের সঙ্গে চুক্তির পর বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে এখন গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ দেওয়ার জন্য নীতিমালা করা হলো। প্রকল্পের নাম ‘লাইন অব ফাইন্যান্স টু সাপোর্ট এসএমই প্রজেক্ট আন্ডার দ্য আইডিবি এসপিআরপি ফর কভিড-১৯, রি-স্টোর ট্রাক। প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা ধরে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৯৮ কোটি ১৬ লাখ টাকা। তবে বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী তহবিলের আকার হবে চারশ কোটি টাকার বেশি।