• শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:২৭ অপরাহ্ন
  • ই-পেপার
সর্বশেষ
গুইমারায় ট্রাক ও মিনিট্রাক চালক সমবায় সমিতি’র শুভ উদ্বোধন ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হামাস বিতর্কিত ভূমিকায় জড়িত পুলিশসহ সব সরকারি কর্মকর্তাকে ধরা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা বিদ্বেষপূর্ণ খালেদা জিয়া-তারেকসহ সব আসামি খালাস পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার কাজ চলছে: আইজিপি পদত্যাগ করলেন টিউলিপ প্রধান উপদেষ্টার কাছে চার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর নির্বাচনের আগেই গণহত্যার বিচারের আশা আইন উপদেষ্টার বিপুলসংখ্যক গাড়ির ইঞ্জিন ভেজাল জ্বালানি তেলে নষ্ট হলেও পর্যাপ্ত নজরদারি নেই বছরের পর বছর নিলামের অপেক্ষায় কয়েক হাজার পণ্যভর্তি কনটেইনার

জনবল ও সরঞ্জামাদির অভাবে কার্যকর হচ্ছে না ডোপ টেস্ট

Reporter Name / ৭৬ Time View
Update : শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঘোষণাতেই সীমিত রয়েছে মাদকাসক্তি রোধে ডোপ টেস্ট। মূলত প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জামাদি না থাকার কারণেই তা কার্যকর করা যাচ্ছে না। গণপরিবহনে চালকদের লাইসেন্স নেয়ার ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হলেও সরকারি চাকরিতে এখনো তা চালু করা সম্ভব হয়নি। আর ভ্রাম্যমাণ চালকদের বেলায়ও তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অতিসম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ডোপ টেস্ট করার নির্দেশ কার্যকর ও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিআরটিএ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রী মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধে চালকদের ডোপ টেস্ট করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যদিও গণপরিবহনের চালকদের মধ্যে মাদক গ্রহণের অভিযোগ বেশ পুরনো। যাত্রী অধিকার সংগঠনগুলো পরিবহন চালক-শ্রমিকদের মাদকাসক্তিকে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ উল্লেখ করে ডোপ টেস্ট চালুর দাবি করে আসছিল। ওই প্রেক্ষিতেই বিআরটিএ পরিবহন চালকদের ডোপ টেস্ট শুরু করে। আর ডোপ টেস্ট চালু করার কর্মকৌশল ঠিক করতে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি ঘোষণা দিয়েই পেশাদার চালকদের ডোপ টেস্ট শুরু করে। আর পরিবহনের পেশাদার লাইসেন্স নেবার সময় রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি জেলায় বিআরটিএ অফিসে ডোপ টেস্ট করা হয়। ডোপ টেস্ট ছাড়া কোন পেশাদার চালক নতুন লাইসেন্স নেয়া ও নবায়ন করতে পারছে না। তবে যারা ডোপ টেস্ট করে লাইসেন্স নেয়ার পর নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়িতে ওঠেন তাদের টেস্ট করা যাচ্ছে না। তারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। মূলত প্রয়োজনীয় জনবল ও ভ্রাম্যমাণ ল্যাব না থাকায় তাদের গাড়ি চালানো অবস্থায় টেস্ট করা যাচ্ছে না।
সূত্র জানায়, পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও পুলিশের সমন্বয়ে বিভিন্ন টার্মিনালগুলোতে পরিবহন চালকদের সন্দেহ হলেই ডোপ টেস্ট করানোর নির্দেশনা রয়েছে। আর তা কার্যকর করার জন্য মন্ত্রণালয়ে অনেক আগেই বেশ কিছু প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। এখন চালকদের লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নের সময় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু তার মধ্যে চালকদের মাদকাসক্তি দেখার কোনো ব্যবস্থা নেই। বর্তমানে যারা লাইসেন্স নিতে এসে বা নবায়ন করতে এসে যারা ডোপ টেস্ট করাচ্ছে তাদের বেশিরভাগই নেগেটিভ হিসেবে ধরা পড়ছে। আনুমানিক শতকরা ৮/১০ জনের শরীরে মাদকের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিআরটিএর কাছে এ-সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট কোন পরিসংখ্যান নেই। লাইসেন্স নিতে এসে চালকের মাদকাসক্তি প্রমাণিত হলে লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। যদিও শুরুতে বিআরটিএ’র পক্ষ থেকে ডোপ টেস্টের খরচ পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক সবাইকে মিলে দিতে বলা হয়েছিলো। কিন্তু তাতে মালিকপক্ষ রাজি হয়নি। ফলে এখন সরকারি খরচেই ডোপ টেস্ট করানো হচ্ছে। চালকদের লালা ও ইউরিন সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন হাসপাতালের মাধ্যমে রিপোর্ট সংগ্রহ করেই লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, পরিবহনের লাইসেন্স নেয়ার সময় ডোপ টেস্ট করা হলেও পরবর্তিতে নেশা করে চালকগাড়িতে ওঠেন কিনা ধরার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত যার অধীনে থাকবে একটি ভ্রাম্যমাণ ল্যাব প্রয়োজন। চলন্ত গাড়ি থামিয়ে চালকের মুখের লালা ও ইউরিন নিয়ে তাৎক্ষণিক টেস্ট করা গেলেই সত্যিকার অর্থে এর সুফল মিলবে। অন্যথায় একটা ফাঁক-ফোকর থেকেই যাবে। ডোপ টেস্ট সম্পর্কে যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর মতে, মূলত পরিবহন চালকদের মাদক সেবনের কারণেই বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে। বেসরকারী সংস্থা ব্র্যাকের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশে ভারি মোটরযানের চালকদের প্রায় ৬৯ শতাংশই মাদকাসক্ত। বিশেষ করে মহাসড়কে দীর্ঘ রুটে গাড়ি চালানোর সময় অনেক চালকই মাদক গ্রহণ করে থাকে। পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন কারণে পরিবহনের চালকরা এই মাদকাসক্তিতে জড়াচ্ছে এবং মাদকাসক্ত হয়েই গাড়ি চালাচ্ছে। সেজন্যই চালকদের ডোপ টেস্ট সার্বজনীন হওয়া জরুরি। সাময়িক লাইসেন্সের বেলায় ডোপ টেস্ট করলেই এ সঙ্কটের নিরসন হবে না। বর্তমানে দেশে ৪০ লাখ ৭২ হাজার ৬১৬টি লাইসেন্স আছে। তার মধ্যে ভারি যান চালানোর লাইসেন্স ১ লাখ ২ হাজার, মাঝারি মানের ১৫ হাজার ৪৭১টি ও হাল্কা যানের লাইসেন্স রয়েছে ১২ লাখ ১ হাজার ৫৬টি। তার মধ্যে অপেশাদার ১০ লাখ। তাছাড়া মোটরসাইকেল, থ্রি হুইলার ও অন্যান্য ক্যাটাগরির লাইসেন্স রয়েছে। তাদের মধ্যে কতভাগ মাদকাসক্ত সরকারের কোন সংস্থার কাছেই তার কোন পরিসংখ্যান নে।
এদিকে সরকারি চাকরিজীবীদের বেলায়ও মাদকসক্তি রোধে ডোপ টেস্টের ঘোষণা দেয়া হলেও তার তেমন বাস্তবায়ন নেই। বছরখানেক আগে পুলিশের কয়েকজনকে ডোপ টেস্ট করার পর একজনের শরীরে মাদক ধরা পড়ে। তখন পুলিশের প্রতিটি ইউনিটেই ডোপ টেস্ট চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তুু বাস্তবে তার কোন অগ্রগতি নেই। অবশ্য সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয় তাতে মাদক শনাক্ত করার উপায় থাকে। এখন পর্যন্ত নবাগত চাকরিজীবীদের শরীরে মাদকের উপস্থিতি শূন্যের কোঠায় বলে জানা যায়।
অন্যদিকে গণপরিবহনে ডোপ টেস্ট সম্পর্কে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার জানান, পেশাদার চালকদের লাইসেন্স গ্রহণ ও নবায়নের বেলায় ডোপ টেস্ট চালু করা হয়েছে। এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহযোগিতায় বিআরটিএ-এর প্রতিটি অফিসেই চালকদের ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে। কিন্তু ডোপ টেস্ট দিয়ে লাইসেন্স নেয়ার পর চালকরা নেশা করে গাড়ি চালায় কিনা তা ধরার জন্য কোন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। সেজন্য একদিকে নেই পর্যাপ্ত জনবল, অন্যদিকে নেই ভ্রাম্যমাণ ল্যাব। একজন চালককে গাড়ি চালানো অবস্থায় ডোপ টেস্ট করতে হলে প্রথমেই তার মুখের শ্বাস ও ইউরিন টেস্ট করার জন্য নমুনা নিতে হয়। সেজন্য ভ্রাম্যমাণ ল্যাব দরকার। যা এখনো চালু করা সম্ভব না হলেও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category