নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছিলেন একজন অত্যন্ত সজ্জন, সৃজনশীল মানুষ। তার আচরণ, কথাবার্তা ছিল পরিশীলিত। দুঃসময়ে তিনি ছিলেন অকুতোভয় সৈনিক। আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার বনানী কবরস্থানে মরহুমের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। হানিফ বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে কখনো কারও মনে আঘাত দিয়ে কথা বলা, কাউকে কোনো কটূক্তির নজির ছিল না তার। একজন মানুষের মধ্যে যে সভ্য আচার-আচরণ, সেগুলো সৈয়দ আশরাফের কাছ থেকে অনুকরণীয় ছিল। তিনি বলেন, জাতির অনেক ক্রান্তিলগ্নে সৈয়দ আশরাফের ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনের সময় ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুই নেত্রীকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিতে যখন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল সেই সময়ে সৈয়দ আশরাফের ভূমিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তা-বের সময় সৈয়দ আশরাফের কঠোর ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব হেফাজতের ভীত কাঁপিয়ে দিয়েছিল। সৈয়দ আশরাফ সে সময় সময়োপযোগী দায়িত্বশীল কর্মকা-ের মধ্যে রাজনীতিতে সুদৃঢ় অবস্থান তৈরি করেন। তিনি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি সারাজীবন অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আহ্বান করেছেন। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা একক ক্ষমতাবলে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিল। কারও সঙ্গে আলাপের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি। কিন্তু আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি বিধায় রাষ্ট্রপতি সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই রাজনৈতিক দলের মতামত ও পরামর্শ নিয়ে সার্চ কমিটির মাধ্যমে একটা ভালো নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য সংলাপ আহ্বান করেছেন। তিনি বলেন, সেই সংলাপে যদি কেউ অংশ না নেয়, সেটি তাদের দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেবে। আমার বিশ্বাস সবাই অংশ নেবে। এ ক্ষেত্রে দুই-একটি দল যদি সংলাপে অংশ না নেয় তাও রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন কমিশন গঠন করতেই হবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে। এতে সংকট সৃষ্টি হবে না। হয়তো সবার অংশগ্রহণ থাকলে যেটা সার্বজনীন হতো তার কিছুটা ঘাটতি দেখা যেতে পারে। নির্বাচন কমিশন গঠন হবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, আমরাও চাই বেগম খালেদা জিয়া শুধু একজন রাজনৈতিক নেত্রীই নন, সাধারণ মানুষ হিসেবেও অসুস্থতা থেকে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরুক। তবে এটাও মনে রাখতে হবে আইন সবার জন্য সমান। কোনো ব্যক্তি বিশেষের জন্য আইন হয়নি বা বাংলাদেশে সেই বিধানও নেই। তিনি বলেন, আইন পরিবর্তনেরও সুযোগ নেই। তার বিদেশে চিকিৎসার জন্য একটা পথ খোলা আছে; আইনের মাধ্যমে সেটা হচ্ছে। তিনি যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, দ- মাফ হলে তিনি বিদেশ যেতে পারবেন। এর আগে মাহবুব উল আলম হানিফ সৈয়দ আশরাফের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।