• রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৩৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
দুদক কর্মকর্তাদের নৈতিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান রাষ্ট্রপতির বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামছে ভোক্তা-অধিকার রাজনীতি যার যার, অর্থনীতি সবার: এফবিসিসিআই সভাপতি বান্দরবানে হুমকির মুখে সরকারের হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ বান্দরবান জেলা সদর সহ ৬ টি উপজেেলায় শিশুদেরকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়া হবে বান্দরবানে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা মাদকদ্রব্য ধ্বংস বিচারপতির গাড়িতে তেল কম দেওয়ায় ফিলিং স্টেশনকে জরিমানা বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ১২ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারে বিদেশী বিনিয়োগ ক্রমাগত কমছে

জিআই পণ্যের মর্যাদা পাচ্ছে শীতলপাটি ও বগুড়ার দই

Reporter Name / ৬৩ Time View
Update : শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের আরও দুটি পণ্য জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) বা ভৌগোলিক নির্দেশক চিহ্ন হিসেবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। এগুলো হচ্ছে- শীতলপাটি ও বগুড়ার দই। শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের (ডিপিডিটি) উপ-নিবন্ধক আলেয়া খাতুন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বগুড়ার দই ও শীতলপাটির জন্য যে আবেদন করা হয়েছিলো, তা যাচাই-বাছাই চলছে। প্রক্রিয়াটি শেষ পর্যায়ে আছে। কয়েক দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এরপর গেজেট প্রকাশ করা হবে।
শীতলপাটি: শীতলপাটিকে বাংলাদেশের বিশেষায়িত পণ্য হিসেবে বিশ্ববাজারে তুলে ধরতে ২০২১ সালে ডিপিডিটির কাছে জিআই সনদের জন্য আবেদন করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। বর্তমানে সিলেট, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শীতলপাটি তৈরি করা হয়। শীতলপাটির বিশেষত্ব হলো, এটি সম্পূর্ণ হাতে তৈরি এবং ব্যবহারে একধরনের আরামদায়ক শীতল অনুভূতি পাওয়া যায়। একটি পাটি তৈরিতে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগে। দাম শুরু হয় ৫০০ টাকা থেকে, যা নকশাভেদে ৬ হাজার টাকার বেশি হয়। এ ছাড়া শীতলপাটি দিয়ে ফুলদানি, শোপিস, খেলনা, জায়নামাজ, ফাইল ফোল্ডার, কলমদানি, বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ, ছবি ও আয়নার ফ্রেম, ওয়ালমেট, জুতাসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য বানানো হয়। এছাড়া মসলিনের মতো বহু আগে থেকেই দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের শীতলপাটির কদর রয়েছে। সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার তেঘরিয়া গ্রামের শীতলপাটি জায়গা করে নিয়েছিল মোগল রাজদরবার ও ব্রিটেনের রানি ভিক্টোরিয়ার রাজসভায়। পণ্যটির গুরুত্ব বিবেচনা করে ২০১৭ সালে শীতলপাটির বুননশিল্পকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নির্বস্তুক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো।
বগুড়ার দই: বগুড়ার বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি ২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর বগুড়ার দইকে জিআই পণ্য করতে আনুষ্ঠানিকভাবে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরে (ডিপিডিটি) আবেদন করে। কয়েক দফায় যাচাই-বাছাই শেষে সেটি এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের পর্যায়ে রয়েছে। প্রায় দেড়শ বছর আগে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার নীলকণ্ঠ ঘোষের হাত ধরে বগুড়ার দইয়ের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে বগুড়ার দুই শতাধিক দোকানে দই বানানো হয়। এসব কারখানায় সরাসরি কাজ করেন প্রায় সাত হাজার মানুষ। এ ছাড়া দুধ উৎপাদন, দইয়ের পাত্র (মাটির), মোড়ক ও বাঁশের কাঠামো তৈরির মতো খাতে আরও ১০ হাজার মানুষ জড়িত। বগুড়ার দই ১৫০-২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এখন পর্যন্ত দেশের ১১টি পণ্য ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায় ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়ি। এরপর ইলিশ মাছ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্ষীরশাপাতি আম, বিজয়পুরের সাদামাটি, কালিজিরা, দিনাজপুরের কাটারিভোগ চাল, রাজশাহীর সিল্ক, রংপুরের শতরঞ্জি, ঢাকাই মসলিন, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি আম ও বাগদা চিংড়ি জিআই স্বীকৃতি পায়। জানা গেছে, সাধারণত একটি নির্দিষ্ট উৎপত্তিস্থলের কারণে কোনো পণ্যের গুণগতমান নিয়ে খ্যাতি তৈরি হলে তাকে জিআই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। পণ্যের উৎপত্তিস্থল তথা শহর, অঞ্চল বা দেশের নামে এ নিবন্ধন দেওয়া হয়। তবে এজন্য প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনকে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর বরাবর আবেদন করতে হয়। নিয়ম অনুযায়ী, আবেদন আসার পরে তা যাচাই-বাছাই করে ডিপিডিটি। একাধিক প্রতিষ্ঠান একই ধরনের পণ্যের নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলে যৌথ শুনানির মাধ্যমে তা সমাধান করা হয়। এরপর ওই পণ্যের নিবন্ধন অনুমোদন দিয়ে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। গেজেট প্রকাশের দুই মাসের মধ্যে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা দেশ তাতে আপত্তি না জানালে ডিপিডিটি চূড়ান্ত স্বীকৃতির সনদ দেয়। তখন ওই পণ্যের একক স্বত্ব হয়ে যায় শুধু বাংলাদেশের। সে অনুযায়ী চূড়ান্তভাবে জিআই সনদ পেলে সারা বিশ্বে বগুড়ার দই ও শীতলপাটির একক ব্র্যান্ডি তৈরি হবে। এতে দেশের পাশাপাশি বিশ্ববাজারেও পণ্য দুটির প্রতি ক্রেতারা আস্থা পাবেন এবং এগুলোর রপ্তানির সম্ভাবনা তৈরি হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category