০২:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ | ই-পেপার

ডাচ্-বাংলার সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর উত্তরায় ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মানি প্ল্যান্ট লিঙ্ক প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক আলমগীর হোসের বাদী হয়ে ডিএমপির তুরাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ডিএমপি উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) বদরুল হাসান জানান, ব্যাংকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় টাকা বহনকারী প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা করেছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর উত্তরা থেকে বেসরকারি ডাচ বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী গাড়ি থেকে প্রায় সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। দিনের আলোতে রাস্তা থেকে নজিরবিহীন এ ছিনতাইয়ের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে মাঠপর্যায়ে অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই উত্তরা এলাকা থেকে ছিনতাই হওয়া ৪ বক্সের মধ্যে ৩ বক্স উদ্ধারের কথা জানায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাসসহ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় সাতজনকে। এদিকে ছিনতাই হওয়া সোয়া এগার কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৯ কোটি উদ্ধারের দাবি করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। কিন্তু আদৌ কত মিলেছে? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে চায় না সংশ্লিষ্টরা। পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলেও পরিষ্কার কোনো উত্তর তারাও দিতে পারেনি। কিন্তু তাদের দাবি, ডিবি যত অর্থ উদ্ধারের দাবি করছে, আদৌ তা সত্য নয়। তবে কত? সে উত্তরও নেই এ সংস্থার কাছে। ডিবিই ‘অ্যাক্স্যাটক্ট নম্বর’ বলতে পারে বলে জানান ঊর্ধ্বতনরা। ডিবি জানায়, ডাচ বাংলার অর্থ উদ্ধারের পর থানায় নিয়ে টাকাগুলো গোনা হয়েছে। তাই সঠিক পরিমাণটা পুলিশ সদস্যরাই জানেন। কিন্তু পুলিশের ভাষ্য ভিন্ন। সদস্যরা বলছেন, যেহেতু ডিবি ব্যাংকের টাকাগুলো উদ্ধার করেছে, তারাই বলতে পারবে আসলে কত টাকা পাওয়া গেছে। পুলিশ সূত্র জানায়, খোয়া যাওয়া চারটি ট্রাঙ্কের মধ্যে তিনটি উদ্ধারের পর টাকা না গুনেই ৯ কোটি পাওয়া গেছে বলে ঘোষণা করে ডিবি। কিন্তু রাতে থানায় নিয়ে টাকা গোনার পর মেলে মাত্র ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার। এ বিষয়ে ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, আমরা টাকা উদ্ধারের পর পরই ডিএমপির উত্তরা বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে দিয়েছি। আমরা টাকা উদ্ধার করেছি, কিন্তু গুনিনি। তাই টাকার অ্যাক্স্যাটক্ট নম্বর তারাই বলতে পারবে। পরে টাকার সংখ্যার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) বদরুল হাসান বলেন, টাকা উদ্ধার করেছে ডিবি। তাই এ বিষয়ে তারাই বলতে পারবেন। ডিবি-পুলিশ ডাচ বাংলার উদ্ধারকৃত অর্থের মোট অঙ্ক পরিষ্কার না করলেও জানা গেছে, ঘটনার ১০ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার টাকার অঙ্ক মাত্র ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ডিবি উদ্ধারের পর রাতে ব্যাংকের অর্থ বহনকারী প্রতিষ্ঠান মানিপ্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সামনে উদ্ধার হওয়া তিনটি ট্রাঙ্ক খুলে এ অর্থ পাওয়া যায়। কিন্তু ট্রাঙ্ক ছিল চারটি। পুলিশের হাতে এসেছে তিনটি। এর মধ্যে নাকি একটি খালি। থানা সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ দাবি করেন। তিনি বলেন, পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, সোয়া ১১ কোটি টাকাভর্তি চারটি ট্রাঙ্ক ছিনতাই হয়েছে। দুই ট্রাঙ্কে ছিল ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। একটি ছিল খালি। টাকা বহনকারী প্রতিষ্ঠানের মানিপ্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের লোকজনই ট্রাঙ্কগুলো আনলক করেছেন। কারণ, চাবিগুলো তাদের কাছেই ছিল। এর আগে ডিবি প্রধান জানিয়েছিলেন, গত বৃহস্পতিবার সকালে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাসসহ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন মানিপ্ল্যান্ট লিংক সিকিউরিটিজ কোম্পানি লিমিটেডের দুই পরিচালক। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি বাকি টাকা উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্নীতির মামলায় রাজউকের সাবেক কর্মচারীর ৭ বছরের কারাদ-

ডাচ্-বাংলার সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা

আপডেট সময়ঃ ০৯:১৮:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর উত্তরায় ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মানি প্ল্যান্ট লিঙ্ক প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক আলমগীর হোসের বাদী হয়ে ডিএমপির তুরাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ডিএমপি উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) বদরুল হাসান জানান, ব্যাংকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় টাকা বহনকারী প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা করেছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর উত্তরা থেকে বেসরকারি ডাচ বাংলা ব্যাংকের টাকা বহনকারী গাড়ি থেকে প্রায় সোয়া ১১ কোটি টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। দিনের আলোতে রাস্তা থেকে নজিরবিহীন এ ছিনতাইয়ের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে মাঠপর্যায়ে অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই উত্তরা এলাকা থেকে ছিনতাই হওয়া ৪ বক্সের মধ্যে ৩ বক্স উদ্ধারের কথা জানায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাসসহ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় সাতজনকে। এদিকে ছিনতাই হওয়া সোয়া এগার কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ৯ কোটি উদ্ধারের দাবি করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। কিন্তু আদৌ কত মিলেছে? এ প্রশ্নের উত্তর দিতে চায় না সংশ্লিষ্টরা। পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলেও পরিষ্কার কোনো উত্তর তারাও দিতে পারেনি। কিন্তু তাদের দাবি, ডিবি যত অর্থ উদ্ধারের দাবি করছে, আদৌ তা সত্য নয়। তবে কত? সে উত্তরও নেই এ সংস্থার কাছে। ডিবিই ‘অ্যাক্স্যাটক্ট নম্বর’ বলতে পারে বলে জানান ঊর্ধ্বতনরা। ডিবি জানায়, ডাচ বাংলার অর্থ উদ্ধারের পর থানায় নিয়ে টাকাগুলো গোনা হয়েছে। তাই সঠিক পরিমাণটা পুলিশ সদস্যরাই জানেন। কিন্তু পুলিশের ভাষ্য ভিন্ন। সদস্যরা বলছেন, যেহেতু ডিবি ব্যাংকের টাকাগুলো উদ্ধার করেছে, তারাই বলতে পারবে আসলে কত টাকা পাওয়া গেছে। পুলিশ সূত্র জানায়, খোয়া যাওয়া চারটি ট্রাঙ্কের মধ্যে তিনটি উদ্ধারের পর টাকা না গুনেই ৯ কোটি পাওয়া গেছে বলে ঘোষণা করে ডিবি। কিন্তু রাতে থানায় নিয়ে টাকা গোনার পর মেলে মাত্র ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার। এ বিষয়ে ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, আমরা টাকা উদ্ধারের পর পরই ডিএমপির উত্তরা বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে দিয়েছি। আমরা টাকা উদ্ধার করেছি, কিন্তু গুনিনি। তাই টাকার অ্যাক্স্যাটক্ট নম্বর তারাই বলতে পারবে। পরে টাকার সংখ্যার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) বদরুল হাসান বলেন, টাকা উদ্ধার করেছে ডিবি। তাই এ বিষয়ে তারাই বলতে পারবেন। ডিবি-পুলিশ ডাচ বাংলার উদ্ধারকৃত অর্থের মোট অঙ্ক পরিষ্কার না করলেও জানা গেছে, ঘটনার ১০ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার টাকার অঙ্ক মাত্র ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ডিবি উদ্ধারের পর রাতে ব্যাংকের অর্থ বহনকারী প্রতিষ্ঠান মানিপ্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সামনে উদ্ধার হওয়া তিনটি ট্রাঙ্ক খুলে এ অর্থ পাওয়া যায়। কিন্তু ট্রাঙ্ক ছিল চারটি। পুলিশের হাতে এসেছে তিনটি। এর মধ্যে নাকি একটি খালি। থানা সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা এ দাবি করেন। তিনি বলেন, পুলিশের কাছে তথ্য ছিল, সোয়া ১১ কোটি টাকাভর্তি চারটি ট্রাঙ্ক ছিনতাই হয়েছে। দুই ট্রাঙ্কে ছিল ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। একটি ছিল খালি। টাকা বহনকারী প্রতিষ্ঠানের মানিপ্ল্যান্ট লিংক প্রাইভেট লিমিটেডের লোকজনই ট্রাঙ্কগুলো আনলক করেছেন। কারণ, চাবিগুলো তাদের কাছেই ছিল। এর আগে ডিবি প্রধান জানিয়েছিলেন, গত বৃহস্পতিবার সকালে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাসসহ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন মানিপ্ল্যান্ট লিংক সিকিউরিটিজ কোম্পানি লিমিটেডের দুই পরিচালক। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি বাকি টাকা উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।