নিজস্ব প্রতিবেদক :
অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত ডেসটিনি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদসহ ৪৫ জনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজা বাড়ানোর জন্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা আপিল শুনানির জন্যে গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া নিম্ন আদালতের দেওয়া কারাদ- এড়াতে সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদের করা আবেদন শুনানির জন্য গত ৯ জুন গ্রহণ করেছিলেন হাইকোর্ট। এখন পৃথক দুই আবেদন একসঙ্গে শুনানির আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক নিশ্চিত করেছেন। আজ সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে দুদকের আপিলের পক্ষে শুনানি করেন দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান বলেন, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনকে দেওয়া হয়েছে ১২ বছরের দ-। বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে কম দ- দেওয়া হয়েছে। অথচ এটা হলো অর্গানাইজড ক্রাইম। এখানে কম বেশি দেওয়ার সুযোগ নেই। তাই রফিকুল আমীন ছাড়া বাকি ৪৫ কজনের দ- বাড়ানোর জন্যে আপিল আবেদন করা হয়েছিল হাইকোর্টে। হারুন অর-রশিদের চার বছরের দ- থেকে খালাস চেয়ে করা আপিল ও আমাদের পক্ষ থেকে ৪৫ জনের দ- বাড়ানোর (দুদকের করা আপিল) ওই আবেদন শুনানি নিয়ে দুটি আপিল একত্রে শুনানির জন্যে রেখেছেন আদালত। এর আগে আত্মসাৎ ও অর্থপাচারের মামলায় চার বছরের দ- থেকে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন হারুন-অর-রশিদ। গত বৃহস্পতিবার হারুন-অর-রশীদের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। তবে তার জামিন চেয়ে করা আবেদন খারিজ করেছেন উচ্চ আদালত। এর পরে গত ১২ জুন ৪৫ জনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া সাজা বাড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১২ মে বিচারিক আদালতে এ মামলার রায় হয়। তাতে ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনসহ ৪৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- ও তাদের মোট ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে হারুন-অর-রশীদকে দেওয়া হয় চার বছরের কারাদ- ও সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে ছয় মাস কারাদ-। এ রায়ের বিরুদ্ধে ও জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেছেন তিনি। বাকিদের আপিলের খবর পাওয়া যায়নি। ২০১২ সালের ৩১ জুলাই দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম রাজধানীর কলাবাগান থানায় ডেসিটিনির কর্তব্যরত অন্যান্যের বিরুদ্ধে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি এবং ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রজেক্টের অর্থ আত্মসাতের দুটি মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৫ মে দুদক আদালতে উভয় মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জন এবং ডেসটিনি ট্রি প্ল্যানটেশন লিমিটেডে দুর্নীতির মামলার ১৯ জনকে আসামি করা হয়। হারুন-অর-রশিদ ও রফিকুল আমিন দুই মামলাতেই আসামি। বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ে রফিকুল আমিনকে ১২ বছর কারাদ- এবং ২০০ কোটি টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। ৪৬ আসামির মধ্যে ৩৯ জন আসামি পলাতক। পলাতকদের বিষয়ে গত ৯ জুন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও রেড অ্যালার্ট জারির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।