নিজস্ব প্রতিবেদক :
নাট্যব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. ইনামুল হকের ‘হঠাৎ প্রস্থান জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ড. ইনামুল হকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেন, ড. ইনামুল হক একাধারে শিক্ষাবিদ, অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক; অধিকন্তু তিনি একজন অত্যন্ত সজ্জন মানুষ ছিলেন। তিনি দীর্ঘ ৪৩ বছর বুয়েটে শিক্ষকতা করেছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করে গেছেন, বহু কালজয়ী নাটকের ¯্রষ্টা তিনি, বহু কালজয়ী নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। তিনি একইসঙ্গে চলচ্চিত্রও নির্মাণ করেছেন। তার মতো এমন একজন গুণী মানুষের হঠাৎ প্রস্থান, সত্যিকার অর্থেই এটি জাতির জন্য বেদনার, আমাদের সবার জন্য বেদনার। ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে কখনও ভাবিনি- হঠাৎ করে তিনি এভাবে চলে যাবেন। কিছুদিন আগেও তার সাথে আমার কথা হয়েছে। তার সাথে বহু কাজে আমি যুক্ত ছিলাম। তার এই মৃত্যু জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি, নাট্য অঙ্গন ও সাংস্কৃতি অঙ্গনের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। আমার মতে এটা তার অকালে চলে যাওয়া। বরেণ্য এই নাট্যকারকারকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন নৌপরিবহন পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ। তিনি বলেন, তার চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা করছি, সেই জায়গায় তিনি পুরোধা ব্যক্তি ছিলেন। আজীবন তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণ তার স্বপ্ন ছিল। সেজন্য সর্বক্ষেত্রে তিনি আপোসহীন ভূমিকা রেখেছেন। একপ্রকার নীরবেই তিনি চলে গেলেন। এটা আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি, কিন্তু তার যে কর্ম সেটা আমাদের আগামীদিনের পথ দেখাবে। বাংলাদেশের সংস্কৃতি অঙ্গন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন সবক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল উল্লেখ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বলেন, তার চলে যাওয়া আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমরা ওনার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। আমরা ওনার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। শুধু ড. ইনামুল হকই নন, তার পুরো পরিবারটি সমাজ গড়ার কাজে নিয়োজিত ছিলো বলে উল্লেখ করেন শ্রদ্ধা জানাতে আসা সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি। তিনি বলেন, এরকম একজন মানুষ যখন আমাদের ছেড়ে চলে যান, তখন যেই ক্ষতিটা হয়; সেটা কাটিয়ে ওঠা খুবই কঠিন। চলে গেছেন, চলে যাবেন এটাই স্বাভাবিক, তার আত্মার মাগফেরাত আমরা কামনা করি। তার চলে যাওয়ায় যেই অপূরণীয় ক্ষতিটা হয়েছে আমরা যেন তা কাটিয়ে উঠতে পারি এবং তার পরিবারের পাশে যেন আমরা থাকতে পারি। এমন একজন অভিনেতা ও বরেণ্য ব্যক্তিত্বকে হারিয়ে শোকাহত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি বলেন, এই শূন্যতা আসলে পূরণ হবে না। তিনি মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন। তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি আদর্শ হয়ে থাকবেন। একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা-নাট্যকার ড. ইনামুল হক গত সোমবার দুপুরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। তিনি ১৯৪৩ সালের ২৯ মে ফেনী জেলার মটবী এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে অনার্স ও এমএসসি সম্পন্ন করে মানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি পিএইচডি লাভ করেন। পরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি দীর্ঘ ৪৩ বছর শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। গুণী এই অভিনেতার পুরো পরিবার নাটকে সম্পৃক্ত। তার স্ত্রী লাকী ইনামও কিংবদন্তি অভিনেত্রী। মেয়ে হৃদি হক নির্দেশক এবং অভিনেত্রী। তার জামাতা অভিনেতা লিটু আনাম। ড. ইনামুলের অপর মেয়ে পৈত্রি হকের স্বামী অভিনেতা সাজু খাদেম।
ঢাকা
০১:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
সর্বশেষঃ
ড. ইনামুল হকের হঠাৎ প্রস্থান জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি: তথ্যমন্ত্রী
-
দৈনিক আইন বার্তা
- আপডেট সময়ঃ ০৮:৫৩:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর ২০২১
- ৪৫২ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ