১১:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫ | ই-পেপার

ঢাকায় ছয় ঘণ্টায় রেকর্ড ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীতে আজ শুক্রবার ভোরে শুরু হয়ে বৃষ্টি হয় প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। অঝোর বৃষ্টিতে ডুবে যায় রাজধানীর অনেক এলাকার রাস্তা-অলিগলি। এমনকি অনেক বড় সড়কও। দিনমজুর ও কর্মজীবী বহু মানুষকে বের হতে হয় এই বৃষ্টির মধ্যে। আবার অনেকে ব্যক্তিগত কাজের জন্য বের হয়ে পড়েন বিপাকে। আবহাওয়া অফিস বলছে, সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। যা এই বর্ষা মৌসুমে সর্বোচ্চ। এর আগে প্রি-মনসুনে (বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে) ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ২৭ মে ২২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়। আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা বলেন, মনসুন শুরু হওয়ার পর এটা সর্বোচ্চ বৃষ্টি। বর্ষা মৌসুমে এটা স্বাভাবিক বৃষ্টি, যা এ বছরে সর্বোচ্চ। গত ২৭ মে ২২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়, তবে সেটা ছিল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে। তিনি বলেন, আজ শুক্রবার সকাল ৬টার পর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। প্রথম ৩ ঘণ্টায় সকাল ৯টা পর্যন্ত ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এরপর বৃষ্টি আরও ভারী হয়ে পরবর্তী ৩ ঘণ্টায় অর্থাৎ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। দুপুর ১২টার পরও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ছিল, তবে তা সামান্য। কাজী জেবুন্নেছা আরও বলেন,  শনিবারও রাজধানীতে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তবে দিনভর বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। রোববার থেকে আবার বৃষ্টির প্রবণতা কিছুটা কমতে পারে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টির কারণে পানিতে ডুবে যায় রাজধানী ঢাকার অনেক এলাকা। ডুবে যায় বেশ কয়েকটি সড়ক। এসব সড়কে চলাচলরত যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে অনেক গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে। মাঝ সড়কে গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে থাকায় যান চলাচল বিঘœ হয়, সৃষ্টি হয় যানজট। সব মিলিয়ে বৃষ্টি, যানজট আর জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পড়তে হয় রাজধানীবাসিকে। সকাল থেকে রাজধানীর ২০টিরও বেশি সড়কে সরেজমিন ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়। জানা গেছে, গত ৩০ মে টেকনাফ উপকূলে পৌঁছায় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বা বর্ষা। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয়বাষ্প নিয়ে আসে। এর প্রভাবে মেঘ সৃষ্টি হয় ও বর্ষাকালে বৃষ্টি হয়ে থাকে। এটি অতিমাত্রায় সক্রিয় থাকলে সারাদেশে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়ে থাকে। গতকাল শুক্রবার ভারী বৃষ্টির কারণে অল্প সময়ের ডুবে যায় রাজধানীর বহু এলাকা। এর মধ্যে মগবাজার, মালিবাগ, মৌচাক, শাহজাহানপুর, নাখালপাড়া, পশ্চিম তেজতুরী বাজার, তেজকুনি পাড়া, রাজাবাজার, কারওয়ান বাজার, ধানমন্ডি, মিরপুরসহ, পশ্চিম শ্যাওড়াপাড়াসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় পানি জমে যায়। কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমরসমান। এতে পথচারীদের দুর্ভোগের যেন অন্ত ছিল না। রাস্তায় বের হওয়া প্রাইভেট কার, অটোরিকশাও বিকল হয়ে পড়ে থেকেছে বিভিন্ন রাস্তায়। ফলে তৈরি হয়েছে যানজটও। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মহাখালী দক্ষিণ পাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে সেখানে কোমর সমান পানি। এই এলাকায় সড়কের পাশে দোকানপাট এবং কোনো কোনো ভবনের নিচতলাতেও পানি ঢুকেছে। সেখানকার ‘মাহবুব জেনারেল স্টোরে’ পানি ঢোকায় এর স্বতাধিকারী মাহবুবুল আলমের কথায় ক্ষোভ ঝরেছে। তিনি বলেন, আমার দোকান রাস্তার ধারে। কিছুদিন আগে আমি দোকানের সামনে কিছুটা পাকা করে দিয়েছিলাম। তাতে কোনো লাভ হয়নি। বৃষ্টির পানি প্রায় কোমরসমান হয়ে দোকানে ঢুকেছে। মালামাল সব ভিজে বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়ে গেল আমার। এত উন্নয়নের কথা বলা হয়, অথচ সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে বাসাবাড়িতে ঢুকে যায়। দুর্ভোগের সীমা থাকে না। তেজগাঁও থেকে মহাখালীতে রিকশায় করে আসা সবুজ হোসেন বলেন, রিকশায় উঠেও নিস্তার নেই, ভিজে যাচ্ছি, এত পানি। কাজে বের হয়েছিলাম। এখন মনে হয় ভুলই করলাম। সকালে পানিতে ভিজে দোকানে যাচ্ছিলেন নাখালপাড়ার বাসিন্দা সফুরা বেগম। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সকালে বাচ্চাগুলো কিছুই খায়নি। বাধ্য হয়েই বের হলাম। কয়দিন আগেই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করল। কিন্তু, লাভ হয়নি কোনো। প্রায় কোমরসমান পানি। এই জ¦ালার কোনো সমাধানই নাই। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় আছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। যার কারণে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির কারণে কাকরাইল, মোহাম্মদপুর, শ্যাওড়াপাড়া, কাজীপাড়াসহ মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা এবং মিরপুরে মাজার রোড, অ্যালিফেন্ট রোড, মৎসভবন, সেন্ট্রাল রোড, ধানম-ির ২৭ নম্বর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেইট, তেজগাঁও, বিজয় সরনী, পশ্চিম তেজতুরী বাজার, তেজকুনি পাড়া, দক্ষিণ মনিপুরের মোল্লাপাড়া, মহাখালীর বিভিন্ন রাস্তায় পানি জমেছে। এছাড়া শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, কাকরাইল, নয়া পল্টন, পুরানা পল্টন, আরামবাগ, শাহজাহানপুর, ফকিরেরপুল, বিজয়নগর সড়কে পানি উঠেছে। পানিতে তলিয়েছে দয়াগঞ্জ মোড়, সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল, নিমতলী, কমলাপুরের কাছে টয়েনবি সার্কুলার রোড, যাত্রাবাড়ী, কাজলা, শনির আখাড়া, রায়েরবাগ, গোলাপবাগের নিচু এলাকাসহ আরো কয়েক এলাকায়। জলাবদ্ধতার কারণে বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ি বিকল হয়ে যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় রাজধানীবাসীকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য সময় হাতে নিয়ে বের হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ‘কুইক রেসপন্স’ টিম মাঠে নেমেছে। কাজ করেন ৫ হাজারের বেশি পরিচ্ছন্নতা কর্মী। ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন বলেন, ঢাকার ১০টি অঞ্চলে ১০টি কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে। যারা বিভিন্ন ক্যাচমেন্ট এলাকায় কাজ করছে। কিন্তু, অসুবিধা হয় যেসব পয়েন্ট থেকে আমরা ড্র্বেইনেজ সিস্টেম পরিষ্কার করি, সেই পয়েন্টগুলোতে মানুষ বিভিন্ন ধরণের আবর্জনা ফেলায় এলাকাভিত্তিক জলাবদ্ধতা নিরসনে সময় লাগছে। তবে বড় সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতা কমেছে। যেসব এলাকায় আমরা ড্রেনেজের কাজ করেছি, সেসব জায়গায় কিন্তু জলাবদ্ধতা নেই। বা থাকলেও দ্রুত কমে যাচ্ছে। অল্প সময়ে নিরবিচ্ছিন্ন ভারী বৃষ্টি হওয়ায় পানি অপসারণ হতে কিছুটা সময় লাগছে জানিয়ে মকবুল হোসাইন বলেন, এখনো যেসব অঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা যাচ্ছে কুইক রেসপন্স টিম পাঠিয়ে সেই সব অঞ্চলের ড্রেন পরিষ্কার করে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। প্রতিটি অঞ্চলের শাখা রাস্তাগুলো থেকে পানি সরাতে কাজ চলছে। এছাড়া কোথাও কোনো পানি জমে থাকলে ডিএনসিসির হটলাইন ১৬১০৬ এই নম্বরে ফোন করার অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনও। পানি নিষ্কাশনে কাজ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনও। দক্ষিণের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বলেন, পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০০টি টিম সকাল থেকে কাজ করছে। এ ছাড়া দোলাইর পাড় ও কমলাপুরে পাম্প চালু আছে। এদিকে ঢাকায় বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে গ্যাস সংকটও। সকালে বাসাবাড়িতে চুলায় গ্যাসের চাপ না থাকার কারণে বৃষ্টির মধ্যেই অনেকে বাধ্য হয়ে খাবার কিনতে বের হয়ে বিপাকে পড়েন। সেগুন বাগিচার বাসিন্দা হাসান আলী বলেন, বাসায় গ্যাস নেই। সকাল বেলা উঠে বৃষ্টি দেখি। তাও উপায়ান্তর না দেখে ছাতা নিয়ে বের হলাম। কারণ বাচ্চারা কেউ নাস্তা করেনি। কিন্তু সেগুন বাগিচার কোনো হোটেল খোলা পেলাম না। কি যে ঝামেলায় পড়লাম? হাতে গোণা কিছু প্রাইভেট কার আর মিনিবাস চলতে দেখা গেছে শান্তিনগরের রাস্তায়। সেগুলো চলার সময় যেভাবে পানি ছিটিয়েছে, তাতে রাস্তার ময়লা পানিতে ভিজে একাকার হয়েছেন ফুটপাত ধরে যাওয়া লোকজন। শান্তিনগরের ফুটপাত ধরে যাওয়া মিন্টু বলেন, পানির ঢেউ দেখে মনে হয় সমুদ্রের ঢেউ। বাস যাওয়ার সময় গাড়ির স্পিডে ময়লা পানিতে আমার সব জামা কাপড় ভিজে গেছে। পানি ঢুকেছে শান্তিনগরের বাজারের ভেতরেও। সেখানকার মাংস বিক্রেতা আমিন মিয়া বলেন, এক সাবে মাংস নেবেন, কিন্তু দেখা নাই। বাজারে পানি উঠছে। রিকশাচালকদের ভাষ্য, এই পানি দিয়ে রিকশা বেশিক্ষণ টানাই দায়। কাকরাইলের কাছের ফুটপাতেও পানি ওঠে সকালে। সেই ফুটপাত আবার খানাখন্দে ভরা। পানি মাড়িয়ে ফুটপাত ধরে চলা কারো কারো গর্তে পা পড়ে পড়েও গেছেন। রিকশাচালক হাফিজ রামপুরা থেকে একজন যাত্রী নিয়ে শাহজাহানপুর এসেছেন সকাল ৯টায়। তিনি বলেছেন, রামপুরা, বাড্ডার নিচু এলাকায় বাসার নিচতলায় পানি ঢুকেছে। রামপুরার কাছে আমি দোকানের শার্টার অর্ধেক পানির নিচে দেখেছি। কাকরাইলের মোড়ে গুলশান থেকে আসা প্রাইভেটকারের চালক সোলায়মান কবির বলেন, সকাল ৯টায় রওনা দিয়ে কাকরাইল এসেছি। আসার পথে পানি দেখে তিন বার পথ পরিবর্তন করেছি। যে পথেই যাই সেই পথে পানি। বেশি পানি দিয়ে গাড়ি চালালে ইঞ্জিনের সমস্যা করে। হঠাৎ যদি গাড়ি বন্ধ হয়ে যায় আরেক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি হলে জমে যাওয়া পানি নামতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে জানিয়ে কাজলার হালটপাড় এলাকা নিবাসী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এখানের খাল দিন দিন সরু হয় দখলদারদের কারণে। পানি যে বুড়িগঙ্গায় গিয়ে পড়বে তা বাধা পায় জায়গায় জায়গায়। আমরা নিম্নাঞ্চলের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের তালিকায় সবার নিম্নে আছি। তাই জনগণের দুর্ভোগ নিয়ে মাথা ঘামায় না কেউ। সিটি করপোরেশনের তালিকাভুক্ত হয়েও ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডে গত পাঁচ বছরে কোনো উন্নয়ন বরাদ্দ দেখেননি ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন হওয়ার পরে আমাগো এলাকায় কোনো কাজ হয় নাই। খালের সঙ্গে কয়েকটা ড্রেনের লাইন করে দিলে পানি জমতে পারত না। আমাগো কোনো উন্নয়ন হয় নাই। বৃষ্টিতে কেন বারবার ডুবছে ঢাকা- এমন প্রশ্নে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান ও রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, আমাদের আসলে উন্নয়নের পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে গেছে। এই উন্নয়ন হয় ধ্বংসাত্মক উন্নয়ন। ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমাদের ঢাকা শহরে খাল বা জলাশয় এখন ৫ শতাংশের নিচে। আর সবুজ ৭ ভাগের নীচে। ফলে, পানি নিষ্কাশনের সুযোগ নেই। যদি, জলাশয় ভরাট করা না হত এবং পর্যাপ্ত সবুজ থাকত, তাহলে হয়ত এমন চিত্র হত না। কংক্রিট নিয়ে আমরা একটা গবেষণা করেছিলাম, যেখানে ঢাকার উন্নত এলাকাগুলোতে ৮০ শতাংশের উপর কংক্রিট। কোথাও-কোথাও ৯০ শতাংশ। ফলে, পানি নিষ্কাশনের সুযোগ নেই। এই জলাবদ্ধতা আমাদের মেনে নিতেই হবে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান আরও বলেন, আমরা যেটা করতে পারি, যে ড্রেনেজ সিস্টেম এবং জলাশয় অবশিষ্ট আছে, সেগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা করে জলাশয় ভরাট করার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে, ভুটানের রাষ্ট্রদূতকে ড. ইউনূস

ঢাকায় ছয় ঘণ্টায় রেকর্ড ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা

আপডেট সময়ঃ ০৭:৩৮:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীতে আজ শুক্রবার ভোরে শুরু হয়ে বৃষ্টি হয় প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। অঝোর বৃষ্টিতে ডুবে যায় রাজধানীর অনেক এলাকার রাস্তা-অলিগলি। এমনকি অনেক বড় সড়কও। দিনমজুর ও কর্মজীবী বহু মানুষকে বের হতে হয় এই বৃষ্টির মধ্যে। আবার অনেকে ব্যক্তিগত কাজের জন্য বের হয়ে পড়েন বিপাকে। আবহাওয়া অফিস বলছে, সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। যা এই বর্ষা মৌসুমে সর্বোচ্চ। এর আগে প্রি-মনসুনে (বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে) ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ২৭ মে ২২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়। আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা বলেন, মনসুন শুরু হওয়ার পর এটা সর্বোচ্চ বৃষ্টি। বর্ষা মৌসুমে এটা স্বাভাবিক বৃষ্টি, যা এ বছরে সর্বোচ্চ। গত ২৭ মে ২২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়, তবে সেটা ছিল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে। তিনি বলেন, আজ শুক্রবার সকাল ৬টার পর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। প্রথম ৩ ঘণ্টায় সকাল ৯টা পর্যন্ত ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এরপর বৃষ্টি আরও ভারী হয়ে পরবর্তী ৩ ঘণ্টায় অর্থাৎ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। দুপুর ১২টার পরও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ছিল, তবে তা সামান্য। কাজী জেবুন্নেছা আরও বলেন,  শনিবারও রাজধানীতে ভারী বৃষ্টি হতে পারে। তবে দিনভর বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। রোববার থেকে আবার বৃষ্টির প্রবণতা কিছুটা কমতে পারে। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টির কারণে পানিতে ডুবে যায় রাজধানী ঢাকার অনেক এলাকা। ডুবে যায় বেশ কয়েকটি সড়ক। এসব সড়কে চলাচলরত যানবাহনের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে অনেক গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে। মাঝ সড়কে গাড়ি বিকল হয়ে পড়ে থাকায় যান চলাচল বিঘœ হয়, সৃষ্টি হয় যানজট। সব মিলিয়ে বৃষ্টি, যানজট আর জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পড়তে হয় রাজধানীবাসিকে। সকাল থেকে রাজধানীর ২০টিরও বেশি সড়কে সরেজমিন ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়। জানা গেছে, গত ৩০ মে টেকনাফ উপকূলে পৌঁছায় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বা বর্ষা। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয়বাষ্প নিয়ে আসে। এর প্রভাবে মেঘ সৃষ্টি হয় ও বর্ষাকালে বৃষ্টি হয়ে থাকে। এটি অতিমাত্রায় সক্রিয় থাকলে সারাদেশে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হয়ে থাকে। গতকাল শুক্রবার ভারী বৃষ্টির কারণে অল্প সময়ের ডুবে যায় রাজধানীর বহু এলাকা। এর মধ্যে মগবাজার, মালিবাগ, মৌচাক, শাহজাহানপুর, নাখালপাড়া, পশ্চিম তেজতুরী বাজার, তেজকুনি পাড়া, রাজাবাজার, কারওয়ান বাজার, ধানমন্ডি, মিরপুরসহ, পশ্চিম শ্যাওড়াপাড়াসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় পানি জমে যায়। কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমরসমান। এতে পথচারীদের দুর্ভোগের যেন অন্ত ছিল না। রাস্তায় বের হওয়া প্রাইভেট কার, অটোরিকশাও বিকল হয়ে পড়ে থেকেছে বিভিন্ন রাস্তায়। ফলে তৈরি হয়েছে যানজটও। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মহাখালী দক্ষিণ পাড়ায় গিয়ে দেখা গেছে সেখানে কোমর সমান পানি। এই এলাকায় সড়কের পাশে দোকানপাট এবং কোনো কোনো ভবনের নিচতলাতেও পানি ঢুকেছে। সেখানকার ‘মাহবুব জেনারেল স্টোরে’ পানি ঢোকায় এর স্বতাধিকারী মাহবুবুল আলমের কথায় ক্ষোভ ঝরেছে। তিনি বলেন, আমার দোকান রাস্তার ধারে। কিছুদিন আগে আমি দোকানের সামনে কিছুটা পাকা করে দিয়েছিলাম। তাতে কোনো লাভ হয়নি। বৃষ্টির পানি প্রায় কোমরসমান হয়ে দোকানে ঢুকেছে। মালামাল সব ভিজে বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়ে গেল আমার। এত উন্নয়নের কথা বলা হয়, অথচ সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে বাসাবাড়িতে ঢুকে যায়। দুর্ভোগের সীমা থাকে না। তেজগাঁও থেকে মহাখালীতে রিকশায় করে আসা সবুজ হোসেন বলেন, রিকশায় উঠেও নিস্তার নেই, ভিজে যাচ্ছি, এত পানি। কাজে বের হয়েছিলাম। এখন মনে হয় ভুলই করলাম। সকালে পানিতে ভিজে দোকানে যাচ্ছিলেন নাখালপাড়ার বাসিন্দা সফুরা বেগম। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সকালে বাচ্চাগুলো কিছুই খায়নি। বাধ্য হয়েই বের হলাম। কয়দিন আগেই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করল। কিন্তু, লাভ হয়নি কোনো। প্রায় কোমরসমান পানি। এই জ¦ালার কোনো সমাধানই নাই। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় আছে এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। যার কারণে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির কারণে কাকরাইল, মোহাম্মদপুর, শ্যাওড়াপাড়া, কাজীপাড়াসহ মিরপুরের বিভিন্ন এলাকা এবং মিরপুরে মাজার রোড, অ্যালিফেন্ট রোড, মৎসভবন, সেন্ট্রাল রোড, ধানম-ির ২৭ নম্বর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেইট, তেজগাঁও, বিজয় সরনী, পশ্চিম তেজতুরী বাজার, তেজকুনি পাড়া, দক্ষিণ মনিপুরের মোল্লাপাড়া, মহাখালীর বিভিন্ন রাস্তায় পানি জমেছে। এছাড়া শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, কাকরাইল, নয়া পল্টন, পুরানা পল্টন, আরামবাগ, শাহজাহানপুর, ফকিরেরপুল, বিজয়নগর সড়কে পানি উঠেছে। পানিতে তলিয়েছে দয়াগঞ্জ মোড়, সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল, নিমতলী, কমলাপুরের কাছে টয়েনবি সার্কুলার রোড, যাত্রাবাড়ী, কাজলা, শনির আখাড়া, রায়েরবাগ, গোলাপবাগের নিচু এলাকাসহ আরো কয়েক এলাকায়। জলাবদ্ধতার কারণে বিভিন্ন রাস্তায় গাড়ি বিকল হয়ে যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় রাজধানীবাসীকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য সময় হাতে নিয়ে বের হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। জলাবদ্ধতা নিরসনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ‘কুইক রেসপন্স’ টিম মাঠে নেমেছে। কাজ করেন ৫ হাজারের বেশি পরিচ্ছন্নতা কর্মী। ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন বলেন, ঢাকার ১০টি অঞ্চলে ১০টি কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে। যারা বিভিন্ন ক্যাচমেন্ট এলাকায় কাজ করছে। কিন্তু, অসুবিধা হয় যেসব পয়েন্ট থেকে আমরা ড্র্বেইনেজ সিস্টেম পরিষ্কার করি, সেই পয়েন্টগুলোতে মানুষ বিভিন্ন ধরণের আবর্জনা ফেলায় এলাকাভিত্তিক জলাবদ্ধতা নিরসনে সময় লাগছে। তবে বড় সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতা কমেছে। যেসব এলাকায় আমরা ড্রেনেজের কাজ করেছি, সেসব জায়গায় কিন্তু জলাবদ্ধতা নেই। বা থাকলেও দ্রুত কমে যাচ্ছে। অল্প সময়ে নিরবিচ্ছিন্ন ভারী বৃষ্টি হওয়ায় পানি অপসারণ হতে কিছুটা সময় লাগছে জানিয়ে মকবুল হোসাইন বলেন, এখনো যেসব অঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা যাচ্ছে কুইক রেসপন্স টিম পাঠিয়ে সেই সব অঞ্চলের ড্রেন পরিষ্কার করে পানি প্রবাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। প্রতিটি অঞ্চলের শাখা রাস্তাগুলো থেকে পানি সরাতে কাজ চলছে। এছাড়া কোথাও কোনো পানি জমে থাকলে ডিএনসিসির হটলাইন ১৬১০৬ এই নম্বরে ফোন করার অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনও। পানি নিষ্কাশনে কাজ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনও। দক্ষিণের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের বলেন, পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০০টি টিম সকাল থেকে কাজ করছে। এ ছাড়া দোলাইর পাড় ও কমলাপুরে পাম্প চালু আছে। এদিকে ঢাকায় বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে গ্যাস সংকটও। সকালে বাসাবাড়িতে চুলায় গ্যাসের চাপ না থাকার কারণে বৃষ্টির মধ্যেই অনেকে বাধ্য হয়ে খাবার কিনতে বের হয়ে বিপাকে পড়েন। সেগুন বাগিচার বাসিন্দা হাসান আলী বলেন, বাসায় গ্যাস নেই। সকাল বেলা উঠে বৃষ্টি দেখি। তাও উপায়ান্তর না দেখে ছাতা নিয়ে বের হলাম। কারণ বাচ্চারা কেউ নাস্তা করেনি। কিন্তু সেগুন বাগিচার কোনো হোটেল খোলা পেলাম না। কি যে ঝামেলায় পড়লাম? হাতে গোণা কিছু প্রাইভেট কার আর মিনিবাস চলতে দেখা গেছে শান্তিনগরের রাস্তায়। সেগুলো চলার সময় যেভাবে পানি ছিটিয়েছে, তাতে রাস্তার ময়লা পানিতে ভিজে একাকার হয়েছেন ফুটপাত ধরে যাওয়া লোকজন। শান্তিনগরের ফুটপাত ধরে যাওয়া মিন্টু বলেন, পানির ঢেউ দেখে মনে হয় সমুদ্রের ঢেউ। বাস যাওয়ার সময় গাড়ির স্পিডে ময়লা পানিতে আমার সব জামা কাপড় ভিজে গেছে। পানি ঢুকেছে শান্তিনগরের বাজারের ভেতরেও। সেখানকার মাংস বিক্রেতা আমিন মিয়া বলেন, এক সাবে মাংস নেবেন, কিন্তু দেখা নাই। বাজারে পানি উঠছে। রিকশাচালকদের ভাষ্য, এই পানি দিয়ে রিকশা বেশিক্ষণ টানাই দায়। কাকরাইলের কাছের ফুটপাতেও পানি ওঠে সকালে। সেই ফুটপাত আবার খানাখন্দে ভরা। পানি মাড়িয়ে ফুটপাত ধরে চলা কারো কারো গর্তে পা পড়ে পড়েও গেছেন। রিকশাচালক হাফিজ রামপুরা থেকে একজন যাত্রী নিয়ে শাহজাহানপুর এসেছেন সকাল ৯টায়। তিনি বলেছেন, রামপুরা, বাড্ডার নিচু এলাকায় বাসার নিচতলায় পানি ঢুকেছে। রামপুরার কাছে আমি দোকানের শার্টার অর্ধেক পানির নিচে দেখেছি। কাকরাইলের মোড়ে গুলশান থেকে আসা প্রাইভেটকারের চালক সোলায়মান কবির বলেন, সকাল ৯টায় রওনা দিয়ে কাকরাইল এসেছি। আসার পথে পানি দেখে তিন বার পথ পরিবর্তন করেছি। যে পথেই যাই সেই পথে পানি। বেশি পানি দিয়ে গাড়ি চালালে ইঞ্জিনের সমস্যা করে। হঠাৎ যদি গাড়ি বন্ধ হয়ে যায় আরেক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টি হলে জমে যাওয়া পানি নামতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে জানিয়ে কাজলার হালটপাড় এলাকা নিবাসী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এখানের খাল দিন দিন সরু হয় দখলদারদের কারণে। পানি যে বুড়িগঙ্গায় গিয়ে পড়বে তা বাধা পায় জায়গায় জায়গায়। আমরা নিম্নাঞ্চলের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের তালিকায় সবার নিম্নে আছি। তাই জনগণের দুর্ভোগ নিয়ে মাথা ঘামায় না কেউ। সিটি করপোরেশনের তালিকাভুক্ত হয়েও ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডে গত পাঁচ বছরে কোনো উন্নয়ন বরাদ্দ দেখেননি ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন হওয়ার পরে আমাগো এলাকায় কোনো কাজ হয় নাই। খালের সঙ্গে কয়েকটা ড্রেনের লাইন করে দিলে পানি জমতে পারত না। আমাগো কোনো উন্নয়ন হয় নাই। বৃষ্টিতে কেন বারবার ডুবছে ঢাকা- এমন প্রশ্নে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবান ও রিজিওনাল প্ল্যানিং বিভাগের অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, আমাদের আসলে উন্নয়নের পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে গেছে। এই উন্নয়ন হয় ধ্বংসাত্মক উন্নয়ন। ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমাদের ঢাকা শহরে খাল বা জলাশয় এখন ৫ শতাংশের নিচে। আর সবুজ ৭ ভাগের নীচে। ফলে, পানি নিষ্কাশনের সুযোগ নেই। যদি, জলাশয় ভরাট করা না হত এবং পর্যাপ্ত সবুজ থাকত, তাহলে হয়ত এমন চিত্র হত না। কংক্রিট নিয়ে আমরা একটা গবেষণা করেছিলাম, যেখানে ঢাকার উন্নত এলাকাগুলোতে ৮০ শতাংশের উপর কংক্রিট। কোথাও-কোথাও ৯০ শতাংশ। ফলে, পানি নিষ্কাশনের সুযোগ নেই। এই জলাবদ্ধতা আমাদের মেনে নিতেই হবে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি আদিল মুহাম্মদ খান আরও বলেন, আমরা যেটা করতে পারি, যে ড্রেনেজ সিস্টেম এবং জলাশয় অবশিষ্ট আছে, সেগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা করে জলাশয় ভরাট করার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।