নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঘুষ কেলেঙ্কারি মামলায় বরখাস্ত হওয়া ও দ-প্রাপ্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের জামিন আবেদন তালিকা থেকে বাদ (আউট অব লিস্ট) দিয়েছেন হাইকোর্ট। জামিন শুনানিতে তার আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় আজ সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। এর আগে ২২ সেপ্টেম্বর এনামুল বাছির জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। তার পক্ষে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জামিন আবেদন করেন আইনজীবী ফারুখ আলমগীর চৌধুরী। এরও আগে ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট থেকে খন্দকার এনামুল বাছিরকে জামিন দিলেও পরে সেটি বাতিল করে দেন চেম্বার জজ আদালত। ২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজান। এরপর ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দিয়েছিলেন বাছির। ডিআইজি মিজানও এ বিষয়ে নিজেই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতেই বাছিরকে ঘুষ দেন বলে দাবি করেন ডিআইজি মিজান। প্রতিবেদনটি প্রচারিত হওয়ার পর দুদকের সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখতকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি ২০১৯ সালের ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলা ভাঙা ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করে করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদক পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা শেখ মো. ফানাফিল্লাহ মানি লন্ডারিং আইনে দুদকের ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। একই বছরের ২২ জুলাই বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এ মামলায় ডিআইজি মিজানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের একই কর্মকর্তা। এ মামলায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এনামুল বাছিরকে আট বছর ও ডিআইজি মিজানুর রহমানকে তিন বছরের কারাদ- দেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় দেন। এর মধ্যে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে মিজানকে দ-বিধির ১৬১ ধারায় ও বাছিরকে দ-বিধির ১৬৫ (এ) ধারায় তিন বছর করে বিনাশ্রম কারাদ- দেওয়া হয়। অপরদিকে মানি লন্ডারিং আইনের ৪ ধারায় বাছিরকে পাঁচ বছরের কারাদ- ও ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। বাছিরের দুটি দ- একসঙ্গে চলবে বলে তাকে পাঁচ বছর দ- ভোগ করতে হবে। তবে দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় উভয়ে দোষী সাব্যস্ত হলেও একই ধরনের অভিযোগে দ-িত হওয়ায় এ ধারায় কাউকেই সাজা দেওয়া হয়নি। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আপিল ও জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন বাছির। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল তার আপিল শুনানির জন্য আমলে নেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৮০ লাখ টাকা জরিমানা স্থগিত করেছিলেন উচ্চ আদালত।