নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের সবচেয়ে ভালো সড়ক হলেও ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে দিন দিন দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়কে পরিণত হচ্ছে। বিগত ২০২০ সালের মার্চে চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পর বিভিন্ন দুর্ঘটনায় কয়েকজনের মৃত্যু, দুই বাসের মধ্যে সংঘর্ষ, বাসচাপা দেয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ গত রোববার মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় মহাসড়কটি থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতার কারণে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা খরচ করে বানানো এ মহাসড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠছে। পরিবহন বিশেষজ্ঞ এবং হ্ইাওয়ে পুলিশ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এক্সপ্রেসওয়েটিতে পথচারী চাপা দেয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে। এর পরই রয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। তাছাড়া পেছন থেকে অন্য গাড়ির ধাক্কা, ধীরগতির গাড়িকে দ্রুতগতির গাড়ির ধাক্কা, ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারানো ও বেপরোয়া গতির কারণেও দুর্ঘটনা ঘটছে। ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার নির্ধারণ করে দেয়া আছে। কিন্তু মহাসড়ক ব্যবহারকারী বেশির ভাগ গাড়িই ওই গতিসীমা লঙ্ঘন করে চলাচল করে। একই সঙ্গে অবাধে চলাচল করছে ঝুঁকিপূর্ণ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন। তাছাড়া চালকদের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক মানের একটি মহাসড়কে তিনটি প্রধান অনুষঙ্গ থাকে। প্রথমটি হলো সড়কের গুণগত মান। দ্বিতীয় হলো স্ট্যান্ডার্ড মানের যানবাহন চলাচল। তৃতীয় হলো দক্ষ চালক। ভালো মহাসড়কই বানালেও ওই সড়কে আনফিট গাড়ি ও অদক্ষ চালকের কারণে সড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ হওয়াই স্বাভাবিক। এ ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা দূর করতে না পারলে সড়ক অবকাঠামো উন্নত হলেও দুর্ঘটনা কমবে না। সাধারণত যেসব দুর্ঘটনায় দুটি যানবাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়, সেগুলোয় প্রাণহানি হয় বেশি। এদিকে গত রোববার শিবপুরে বাস দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মাদারীপুর জেলা প্রশাসন। দুই কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে দুর্ঘটনার কারণ খুঁজতে বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট স্বতন্ত্রভাবে আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে বলে জানা যায়।