নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বেশ কিছু ওষুধের দাম বাড়িয়েছে, যা সাধারণ নাগরিকদের জন্য ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ বলে মনে করে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ। গত রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কেবলমাত্র ১১৭টি জেনেরিক ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি করতে পারে। বাকি সব ওষুধের মূল্য উৎপাদনকারী ও আমদানিকারকরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। গত কয়েক বছরে জীবন বাঁচানোর উপকরণ এই ওষুধের মূল্য দফায় দফায় বাড়িয়েছে তারা। দেশে ওষুধের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে জানিয়ে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিকেল হলেই ওষুধের দোকানগুলোতে মানুষের লাইন লেগে যায়। সাধারণ মানুষকে কিন্তু কখনো ভোগ্যপণ্যের দোকানে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় না। এতেই প্রমাণিত হয় ওষুধের কী পরিমাণ চাহিদা রয়েছে? বর্তমানে এমন কোনো নাগরিক খুঁজে পাওয়া যাবে না, যিনি দৈনিক ২০ টাকার ওষুধ খান না। দেশে প্রত্যেক পরিবারে মাসে গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার ওষুধ লাগে। সেখানে নিত্যপ্রয়োজনীয় ওষুধের মূল্য এভাবে বাড়ালে জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এছাড়া মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় ভোক্তা প্রতিনিধিদের রাখার বাধ্যবাধকতা থাকলেও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর তা করে না বলে অভিযোগ করেন মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতেই ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ভোক্তা প্রতিনিধি বা নাগরিক প্রতিনিধিদের পাশ কাটিয়ে অগণতান্ত্রিক উপায়ে ওষুধের দাম বাড়িয়েছে। আমরা এই মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারি না। ঔষধ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের উচিত হবে শুনানির মাধ্যমে বর্তমান দেশের প্রেক্ষাপট ও আন্তর্জাতিক বাজার ব্যবস্থা বিচার-বিশ্লেষণ করে ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করা। গত ৩০ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ওষুধের মূল্য নির্ধারণ কমিটির ৫৮তম সভায় নিত্যপ্রয়োজনীয় প্যারাসিটামলসহ বেশ কিছু ওষুধের পুনঃনির্ধারিত দাম অনুমোদন করা হয়। এর আগে, ২০১৫ সালে কয়েকটি ওষুধের মূল্য পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছিল। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্যারাসিটামলের ১০টি ও মেট্রোনিডাজলের ছয়টি জেনেরিকের দাম বেড়েছে। মেট্রোনিডাজল ২০০ এমজি ট্যাবলেটের আগে দাম ছিল ৬০ পয়সা, যা বর্তমানে বেড়ে হয়েছে এক টাকা। এমোক্সিসিলিন বিপি ৫০০ এমজি ইনজেকশনের আগের দাম ছিল ২৪ টাকা ১০ পয়সা, বর্তমানে বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা। এছাড়া জাইলোমেট্রোজালিন, প্রোকলেপেরাজিন, ডায়াজেপাম, মিথাইলডোপা, ফ্রুসেমাইড, ফেনোবারাবিটাল, ওআরএস, লিডোকেইন, ফলিক এডিস, ক্লোরফেনিরামিন, বেনজাথিন বেনজিলপেনিসিলিন, অ্যাসপিরিন ফেনোক্সিমিথাইল পেনিসিলিন, নরগেস্টেরেল ও ফেরোসের দাম ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।