ঢাকা ১২:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

দেশে করোনা মহামারী প্রতিরোধে নতুন ঢাল

  • দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৯:৪৫:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর ২০২১
  • ৪০২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনা মহামারীর ছোবল থেকে বিশ্ব এখন মুক্ত হতে পারেনি। এখনো টিকা থেকে বঞ্চিত আছে বিশ্বের বহু মানুষ। সম্প্রতি ভারতে করোনা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। এ নিয়ে শঙ্কায় আছে বাংলাদেশও।
জানা যায়, বাংলাদেশকে অনুদান হিসেবে ২০ লাখ ডোজ করোনার প্রতিষেধক টিকা দেবে ফ্রান্স সরকার। বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের বরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ক্ষুদে বার্তায় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ফ্রান্স সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদেশের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশকে ২০ লাখ ডোজ করোনার প্রতিষেধক টিকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন।
ইউনেস্কোর ৭৫তম বার্ষিকীতে যোগ দিতে এবং সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য প্রথমবারের মতো ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’র পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্যারিস সফরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্যারিস সফরের প্রথম দিনেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন এলিসি প্রাসাদে এমানুয়েল ম্যাখোঁর সঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজসভায় যোগ দেন। এরপর দুই শীর্ষ নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে যৌথ ঘোষণা দেওয়া হয়।
যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, দুই দেশ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে একমত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে নিয়মিত আলোচনা ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে। প্রয়োজনে সামর্থ্য অনুযায়ী এক পক্ষের চাহিদা অনুযায়ী অন্য পক্ষ তা সরবরাহ ও সহযোগিতা করবে। দুই দেশ তাদের এই সম্পর্কের একটি কৌশলগত দিকনির্দেশনা দেওয়ার লক্ষ্যে সহযোগিতার সব বিষয়ে নিয়মিতভাবে রাজনৈতিক আলোচনা আয়োজনের ওপর জোর দিয়েছে।
এ ছাড়াও দুই পক্ষ রাজনীতি, কূটনীতি, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিনিময়সহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে সহযোগিতায় জোর দিয়েছে।
এদিকে, করোনা চিকিৎসায় বিশ্বে প্রথম অনুমোদিত ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে এসেছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি এসকেএফ। মুখে খাওয়ার এই ওষুধ মঙ্গলবার বিকেল থেকেই দেশের বিভিন্ন ওষুধের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে।
দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বে ৫০ লাখের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এতদিন অনুমোদিত কোনো সুনির্দিষ্ট ওষুধ ছিল না। ৪ নভেম্বর এর চিকিৎসায় ‘মলনুপিরাভির’-এর অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য।
সূত্র জানায়, সোমবার বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসকে এবং মঙ্গলবার এসকেএফকে মলনুপিরাভির বাজারজাতের অনুমোদন দেয়া হয়। এ ছাড়া অনুমোদনের তালিকায় আছে আরো আটটি প্রতিষ্ঠান। এক সপ্তাহের মধ্যে সারা দেশে ওষুধটি পাওয়া যাবে।
অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা প্রতিষ্ঠান আটটি হলো স্কয়ার, জেনারেল, বিকন, রেনাটা, ইনসেপটা, একমি, হেলথ কেয়ার ও পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র যাচাই চলছে। সব ঠিক থাকলে শিগগিরই প্রতিষ্ঠানগুলোকে মলনুপিরাভির উৎপাদন ও বিপণনের জন্য অনুমতি দেয়া হবে।
সবেক্সিমকো মলনুপিরাভির জেনেরিকের ওষুধ বাজারে এনেছে ‘ইমোরিভির’ ব্র্যান্ড নামে। এসকেএফের বাজারজাতকৃত ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে ‘মনুভির’ নামে।
ওষুধটি যৌথভাবে উদ্ভাবন করেছে মার্কিন ওষুধ কোম্পানি মার্ক ও রিজব্যাক বায়োথেরাপিউটিক। মলনুপিরাভির করোনা চিকিৎসায় ব্যবহূত প্রথম অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেট, যা ইনজেকশনের মাধ্যমে পুশ না করে ওষুধ হিসেবে খাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ১৭টি দেশে ওষুধটি নিয়ে পরীক্ষা হয়েছে। ব্রিটিশ ওষুধ খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান ইউকে মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রডাক্টস রেগুলেটরি অথরিটি ৪ নভেম্বর ওষুধটির অনুমোদন দেয়। ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি ও যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) ওষুধটি অনুমোদন দেয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানিয়েছে, ওষুধটি করোনা রোগীর মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তির হার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। এটি চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ব্যবহার করা যাবে।
জানা যায়, মলনুপিরাভির মুখে খাওয়ার ক্যাপসুল বা বড়ি। সাধারণত ফ্লুর চিকিৎসায় এটি ব্যবহার করা হতো। যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে করোনা চিকিৎসায় এই ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখা গেছে, এই ক্যাপসুল রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুঝুঁকি অর্ধেক কমিয়ে দেয়। এই ওষুধের অনুমোদন দেওয়ার পর যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেছেন, যেসব ব্যক্তি দুর্বল এবং যাঁদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, তাঁদের চিকিৎসায় এই ওষুধ প্রয়োগ হবে যুগান্তকারী।
মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ওষুধটি বাজারজাত করা শুরু করে এসকেএফ। যখন গোটা বিশ্ব কভিডের মুখে খাওয়ার ওষুধের অপেক্ষায় রয়েছে, ঠিক সে রকম একটি মুহূর্তে ব্রিটিশ এমএইচআরএ অনুমোদিত কারখানায় বাংলাদেশ ও বিশ্বের জনগণের জন্য উৎপাদিত মলনুপিরাভিরের জেনেরিক ব্র্যান্ড মনুভির বাজারে আনতে পারলো।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বে প্রথম মলনুপিরাভির জেনেরিকের ব্র্যান্ড ‘ইমোরিভির’ বাজারে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি।
উল্লেখ্য, মলনুপিরাভির তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি মার্ক ও রিজব্যাক বায়োথেরাপিউটিক যৌথভাবে। ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ১৭টি দেশে। মলনুপিরাভিরের কার্যকারিতা যাচাইয়ে দেখা গেছে, যেসব রোগীর চিকিৎসায় এটি ব্যবহার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে মাত্র ৭ দশমিক ৩ শতাংশকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। বৈশ্বিক বাণিজ্যনীতি ও আইনের কারণে অন্য দেশ বা কোম্পানির উদ্ভাবিত ওষুধ তৈরি করতে পারে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ব বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। এই সুবিধা নিয়েই মার্কের ওষুধ তৈরি করছে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো।
সূত্র জানায়, অনুমোদন পাওয়ার পর তারা ওষুধটির বাজারজাত শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে কিছু ফার্মেসিতে ওষুধ পাঠানো হয়েছে। এখন ২০০ মিলিগ্রাম এমোরিভির বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি ক্যাপসুল ৭০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। পরে ৪০০ ও ৮০০ মিলিগ্রামের অনুমোদন পেলে তখন খরচ কমে আসবে বলে জানা যায়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশকে অবহেলা করে দেশ গড়া যাবে না: প্রধান উপদেষ্টা

দেশে করোনা মহামারী প্রতিরোধে নতুন ঢাল

আপডেট সময়ঃ ০৯:৪৫:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনা মহামারীর ছোবল থেকে বিশ্ব এখন মুক্ত হতে পারেনি। এখনো টিকা থেকে বঞ্চিত আছে বিশ্বের বহু মানুষ। সম্প্রতি ভারতে করোনা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। এ নিয়ে শঙ্কায় আছে বাংলাদেশও।
জানা যায়, বাংলাদেশকে অনুদান হিসেবে ২০ লাখ ডোজ করোনার প্রতিষেধক টিকা দেবে ফ্রান্স সরকার। বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের বরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ক্ষুদে বার্তায় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ফ্রান্স সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেদেশের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশকে ২০ লাখ ডোজ করোনার প্রতিষেধক টিকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন।
ইউনেস্কোর ৭৫তম বার্ষিকীতে যোগ দিতে এবং সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য প্রথমবারের মতো ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ফর ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’র পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্যারিস সফরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্যারিস সফরের প্রথম দিনেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন এলিসি প্রাসাদে এমানুয়েল ম্যাখোঁর সঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজসভায় যোগ দেন। এরপর দুই শীর্ষ নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের বিষয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে যৌথ ঘোষণা দেওয়া হয়।
যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, দুই দেশ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াতে একমত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে নিয়মিত আলোচনা ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হবে। প্রয়োজনে সামর্থ্য অনুযায়ী এক পক্ষের চাহিদা অনুযায়ী অন্য পক্ষ তা সরবরাহ ও সহযোগিতা করবে। দুই দেশ তাদের এই সম্পর্কের একটি কৌশলগত দিকনির্দেশনা দেওয়ার লক্ষ্যে সহযোগিতার সব বিষয়ে নিয়মিতভাবে রাজনৈতিক আলোচনা আয়োজনের ওপর জোর দিয়েছে।
এ ছাড়াও দুই পক্ষ রাজনীতি, কূটনীতি, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিনিময়সহ নানা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ও ফ্রান্স সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে সহযোগিতায় জোর দিয়েছে।
এদিকে, করোনা চিকিৎসায় বিশ্বে প্রথম অনুমোদিত ওষুধ ‘মলনুপিরাভির’ বাংলাদেশের বাজারে নিয়ে এসেছে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি এসকেএফ। মুখে খাওয়ার এই ওষুধ মঙ্গলবার বিকেল থেকেই দেশের বিভিন্ন ওষুধের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে।
দেড় বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বে ৫০ লাখের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় এতদিন অনুমোদিত কোনো সুনির্দিষ্ট ওষুধ ছিল না। ৪ নভেম্বর এর চিকিৎসায় ‘মলনুপিরাভির’-এর অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য।
সূত্র জানায়, সোমবার বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসকে এবং মঙ্গলবার এসকেএফকে মলনুপিরাভির বাজারজাতের অনুমোদন দেয়া হয়। এ ছাড়া অনুমোদনের তালিকায় আছে আরো আটটি প্রতিষ্ঠান। এক সপ্তাহের মধ্যে সারা দেশে ওষুধটি পাওয়া যাবে।
অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা প্রতিষ্ঠান আটটি হলো স্কয়ার, জেনারেল, বিকন, রেনাটা, ইনসেপটা, একমি, হেলথ কেয়ার ও পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস। বর্তমানে এসব প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র যাচাই চলছে। সব ঠিক থাকলে শিগগিরই প্রতিষ্ঠানগুলোকে মলনুপিরাভির উৎপাদন ও বিপণনের জন্য অনুমতি দেয়া হবে।
সবেক্সিমকো মলনুপিরাভির জেনেরিকের ওষুধ বাজারে এনেছে ‘ইমোরিভির’ ব্র্যান্ড নামে। এসকেএফের বাজারজাতকৃত ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে ‘মনুভির’ নামে।
ওষুধটি যৌথভাবে উদ্ভাবন করেছে মার্কিন ওষুধ কোম্পানি মার্ক ও রিজব্যাক বায়োথেরাপিউটিক। মলনুপিরাভির করোনা চিকিৎসায় ব্যবহূত প্রথম অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেট, যা ইনজেকশনের মাধ্যমে পুশ না করে ওষুধ হিসেবে খাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ১৭টি দেশে ওষুধটি নিয়ে পরীক্ষা হয়েছে। ব্রিটিশ ওষুধ খাতের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান ইউকে মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার প্রডাক্টস রেগুলেটরি অথরিটি ৪ নভেম্বর ওষুধটির অনুমোদন দেয়। ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি ও যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) ওষুধটি অনুমোদন দেয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর জানিয়েছে, ওষুধটি করোনা রোগীর মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তির হার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। এটি চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ব্যবহার করা যাবে।
জানা যায়, মলনুপিরাভির মুখে খাওয়ার ক্যাপসুল বা বড়ি। সাধারণত ফ্লুর চিকিৎসায় এটি ব্যবহার করা হতো। যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে করোনা চিকিৎসায় এই ওষুধের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখা গেছে, এই ক্যাপসুল রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুঝুঁকি অর্ধেক কমিয়ে দেয়। এই ওষুধের অনুমোদন দেওয়ার পর যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেছেন, যেসব ব্যক্তি দুর্বল এবং যাঁদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, তাঁদের চিকিৎসায় এই ওষুধ প্রয়োগ হবে যুগান্তকারী।
মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ওষুধটি বাজারজাত করা শুরু করে এসকেএফ। যখন গোটা বিশ্ব কভিডের মুখে খাওয়ার ওষুধের অপেক্ষায় রয়েছে, ঠিক সে রকম একটি মুহূর্তে ব্রিটিশ এমএইচআরএ অনুমোদিত কারখানায় বাংলাদেশ ও বিশ্বের জনগণের জন্য উৎপাদিত মলনুপিরাভিরের জেনেরিক ব্র্যান্ড মনুভির বাজারে আনতে পারলো।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বে প্রথম মলনুপিরাভির জেনেরিকের ব্র্যান্ড ‘ইমোরিভির’ বাজারে এসেছে প্রতিষ্ঠানটি।
উল্লেখ্য, মলনুপিরাভির তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি মার্ক ও রিজব্যাক বায়োথেরাপিউটিক যৌথভাবে। ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ১৭টি দেশে। মলনুপিরাভিরের কার্যকারিতা যাচাইয়ে দেখা গেছে, যেসব রোগীর চিকিৎসায় এটি ব্যবহার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে মাত্র ৭ দশমিক ৩ শতাংশকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। বৈশ্বিক বাণিজ্যনীতি ও আইনের কারণে অন্য দেশ বা কোম্পানির উদ্ভাবিত ওষুধ তৈরি করতে পারে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ব বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। এই সুবিধা নিয়েই মার্কের ওষুধ তৈরি করছে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো।
সূত্র জানায়, অনুমোদন পাওয়ার পর তারা ওষুধটির বাজারজাত শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে কিছু ফার্মেসিতে ওষুধ পাঠানো হয়েছে। এখন ২০০ মিলিগ্রাম এমোরিভির বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি ক্যাপসুল ৭০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। পরে ৪০০ ও ৮০০ মিলিগ্রামের অনুমোদন পেলে তখন খরচ কমে আসবে বলে জানা যায়।