নিজস্ব প্রতিবেদক :
বনানীর এফআর টাওয়ারের নকশা জালিয়াতির ঘটনায় রাজউকের অথরাইজড অফিসার মিজানুর রহমান ও সুকুমার চাকমার বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম বিচারিক আদালতে চলবে এবং এক বছরের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করার জন্য আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের আগামী এক মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বুধবার দুদকের করা আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম্ আমিন উদ্দিন মানিক। তিনি বলেন, এর আগে আসামি মিজানুর রহমান মহানগর আদালত থেকে অব্যাহতি পেয়েছিল এবং সুকুমার চাকমাকে তদন্তকারী কর্মকর্তা অব্যাহতি দিয়েছিল। দুদক মিজানুর রহমানের অব্যাহতির বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন করেছিল আর সুকুমার চাকমার বিরুদ্ধে হাইকোর্ট সুয়োমোটো (স্বপ্রণোদিত) আদেশ দিয়েছিল। আজ বুধবার উভয়ের বিরুদ্ধে রুলটি খারিজ করা হয়। তাদের এক মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়ে এক বছরের মধ্যে বিচার শেষ করতে বিচারিক আদালতকে বলেছেন হাইকোর্ট। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে ২৭ জন নিহত হওয়ার পর ওই ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের খবর বেরিয়ে আসে। বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ে ওই ভবনের জমির মূল মালিক ছিলেন প্রকৌশলী এসএমএইচআই ফারুক। অংশীদারত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ভবনটির কয়েকটি তলা বাড়ানোর অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৫ জুন তাসভীরসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে দুদক কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দিক দুটি মামলা করেন। একটি মামলায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ভুয়া ছাড়পত্রের মাধ্যমে এফআর টাওয়ারকে ১৯ তলা থেকে বাড়িয়ে ২৩ তলা করা, উপরের ফ্লোরগুলো বন্ধক দেওয়া ও বিক্রির অভিযোগে ২০ জনকে আসামি করা হয়। অন্য মামলায় এফআর টাওয়ারের ১৫ তলা পর্যন্ত নির্মাণের ক্ষেত্রে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন এবং নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ তলা পর্যন্ত বাড়ানোর অভিযোগ করা হয়। ১৯৯০ সালে ১৫ তলা ভবন নির্মাণের জন্য রাজউক থেকে অনুমতি নেয় এফআর টাওয়ার কর্তৃপক্ষ। পরে সেই একই নকশা দেখিয়ে ১৯৯৬ সালে ১৫ তলার জায়গায় ১৮ তলা নির্মাণের অনুমোদন নেওয়া হয়। তবে দুদকের মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ওই অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টিও ছিল ‘অবৈধ’।