নিজস্ব প্রতিবেদক :
কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরতœ শেখ হাসিনা হলে ছাত্রলীগ নেত্রীর ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত কমিটির সামনে বিশদ বিবরণ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। এছাড়া তদন্ত কমিটির সদস্যরা ওই আবাসিক হলের আরও পাঁচ শিক্ষার্থীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। এদিকে ভুক্তভোগী ছাত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি নিবিরভাবে নজরদারি করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। হল কর্তৃপক্ষের গঠিত চার সদস্যের কমিটির প্রধান ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক আহসানুল হকের আহ্বানে ওই ছাত্রী গত শনিবার দুপুরে হলে প্রবেশ করেন। এ সময় বাবা ও মামা তার সঙ্গে ছিলেন। পরে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রথম বর্ষের এই শিক্ষার্থী তার ওপর চলা নির্যাতনের বর্ণনা দেন। তদন্ত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, “ম্যাম, স্যার তদন্ত করলেন, আমার কথাও শুনলেন। আমার রুমের আপুসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গেও কথা বলেছেন। তারা মুখে শুনেছেন, লিখিতও নিয়েছেন। আমাকে বলেছেন, তুমি বাসায় গিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে ভালোভাবে নিজের মতো করে ঘটনার বিবরণটা লিখে দিয়ো। আর আমি যা লিখিত দিয়েছি, সেগুলিতে আমার স্বাক্ষর নিয়েছেন।” দেশরতœ শেখ হাসিনা হলের অতিথি কক্ষে চার ঘণ্টা আটকে রেখে প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় ৩টা পর্যন্ত ওই কক্ষে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয় বলে ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, র্যাগিংয়ের নামে ছাত্রলীগ নেত্রীরা তাকে ‘বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ’ করেন। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি ঘটনা কাউকে জানালে ‘জীবননাশের হুমকিও’ দেন তারা। গতকাল রোববার রাতের ওই ঘটনার পর বিপর্যস্ত ওই ছাত্রী সকালে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান। গত মঙ্গলবার তিনি প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। সাংবাদিকদের ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী আরও বলেন, “যারা যারা জড়িত ছিলো তাদের খোঁজ করছেন তদন্ত কমিটি, জড়িত অনেকের নাম পরিচয় পেয়েছেন। এদের মধ্যে মীম আপু আছে, ঊর্মি আপু আছে। আবার গণরুমে যারা ছিলেন, তাদের সবাইকেও ম্যাম ডেকেছেন; বেশকিছু তথ্যও পেয়েছেন।” ওই ছাত্রীর বাবা সাংবাদিকদের বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে বলেছে যে, ক্যাম্পাসে আসার আগে আমাদের বলবেন, তখন আমরা আপনাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো। এখন আমার দাবি একটাই, তা হলো-সুষ্ঠু তদন্ত ও কঠিনতম বিচার; যাতে এ ধরনের ঘটনা আর কখনও না হয়।” গত শনিবার বিকালে প্রথমদিন তদন্ত শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক রেবা ম-ল বলেন, “আমরা তদন্তের অনেকটাই শেষ করতে পেরেছি, বেশকিছু তথ্যও আমাদের নজরে এসেছে। একদিনে আমরা অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছি। তদন্তের প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে তথ্য চেয়ে কয়েকটি চিঠিও পাঠিয়েছি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর নিরাপত্তার বিষয়ে আরও সজাগ হওয়ার জন্য প্রক্টরকে বলেছি।” বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রক্টর শাহাদত হোসেন বলেন, “আইন মোতাবেক মেয়েটির জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার সঙ্গে কথা হয়েছে, আরও কথা হবে। ক্যাম্পাসে অথবা ক্যাম্পাসের আশপাশে যে কোনো জায়গায় থাকতে চাইলে তার নিরাপত্তার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেখবে।”
সর্বশেষঃ
‘নির্যাতনের’ বর্ণনা দিয়েছেন ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী
-
দৈনিক আইন বার্তা
- আপডেট সময়ঃ ০৯:৫৭:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
- ১২২ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ