নিজস্ব প্রতিবেদক :
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির সাবেক এমডি ও চেয়ারম্যান পণ্য কিনতে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কত টাকা দিয়েছেন, সে বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত পরিচালনা বোর্ডের কাছে তথ্য দেওয়ার জন্য ১৩টি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এমডি ও চেয়ারম্যানের সময় পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, সিটি ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, সাউথ ইস্ট ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিকাশ ডাচ বাংলা ব্যাংক, নগদের ও সফটওয়ার সফট লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ম্যানেজিং ডিরেক্টর) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের (সিইও) এ তথ্য পরিচালনা বোর্ডের কাছে দাখিল করতে বলা হয়েছে। তবে, কতদিনের মধ্যে এ তথ্য বোর্ডের কাছে জমা দিতে হবে সেটি নির্দিষ্ট করে বলেননি আদালত। পরিচালনা বোর্ডের পক্ষ থেকে করা আবেদন শুনানি নিয়ে আজ বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। ইভ্যালি বোর্ডের আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার মোরশেদ আহমেদ খান। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আবেদনকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসেন। এর আগে ইভ্যালির বিভিন্ন বিষয়ে ওঠা প্রতারণার অভিযোগ ও পরিচালনার নিয়ম পর্যালোচনা করতে চার সদস্যের বোর্ড গঠনের নির্দেশনা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এবার সেই বোর্ডকেই তথ্য দাখিলের নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, একজন অবসরপ্রাপ্ত সচিব, একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস ও একজন আইনজীবী দিয়ে ইভ্যালির জন্য এ বোর্ড গঠন করেন আদালত। এদিকে, চেক প্রতারণার ৯ মামলায় গত ২১ এপ্রিল নিম্ন আদালতে জামিন পান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল। তবে তার বিরুদ্ধে আরও মামলা থাকায় তিনি কারামুক্ত হতে পারেননি। ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন গত ৬ এপ্রিল জামিন পাওয়ার পর ওইদিন বিকেলেই গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হন। গুলশান থানার একটি এবং ধানমন্ডি থানার পাঁচটি মামলায় বাদীর সঙ্গে মীমাংসার ভিত্তিতে তাকে জামিন দেন আদালত। এর আগে এক গ্রাহকের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের সম্পদ বিক্রি এবং হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় ৩০ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব ধরনের নথি তলব করা হয়। আবেদনকারী ইভ্যালিতে ২০২১ সারের মে মাসে একটি ওয়াশিং মেশিন অর্ডার করেন। অর্ডারের সময় তিনি অর্থ পরিশোধ করেন মোবাইল ফোনভিত্তিক ডিজিটাল আর্থিক সেবার মাধ্যমে। এরপর কোম্পানিটি অনলাইনে তাকে একটি পণ্য কেনায় ৩৩ হাজার ৩০৮ টাকার রসিদও দেয়। কিন্তু এতদিনেও তারা পণ্যটি বুঝিয়ে দেয়নি। পণ্য বুঝে পেতে আবেদনকারী যোগাযোগ করলে তাকে বারবার আশ্বাস দেওয়া হয়, কিন্তু পণ্য বুঝিয়ে দেয়নি কিংবা টাকাও ফেরত দেয়নি। পরে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ই-ক্যাব, ভোক্তা অধিকারে কয়েক বার অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন এবং হাইকোর্টে কোম্পানিটির অবসায়ন চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে ইভ্যালি লিমিটেড, রেজিস্ট্রার জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, কনজুমার রাইটস প্রটেকশন ব্যুরো, নগদ, বিকাশ, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, ই-ক্যাব অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বেসিস, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্য সচিবকে বিবাদী করা হয়।