নিজস্ব প্রতিবেদক :
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন দলীয় সংসদ সদস্য হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কেউ নন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘তিনি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য, সেটা ঠিক আছে। কিন্তু যেহেতু আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কেউ নন। সুতরাং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে বিদেশে গিয়ে কিছু বলা, সে দায়িত্ব বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউকে দেয়নি, তাকে দেয়নি।’ আজ রোববার সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। সম্প্রতি শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতায় রাখার প্রসঙ্গে ভারতে গিয়ে অনুরোধ করে এসেছেন এমন বক্তব্য দিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তবে তিনি দলের কেউ নন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আবদুর রহমান বলেছেন, ‘তার বক্তব্যের দায় আওয়ামী লীগ নেবে না’। এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রীর মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য অবশ্যই। কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিরতো কেউ নন। যেহেতু কেন্দ্রীয় কমিটির কেউ নন, আওয়ামী লীগের পক্ষে বিদেশে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ তো নয়, সেটা তিনি (আব্দুর রহমান) সঠিক বলেছেন।’ বলা হচ্ছে, দল বা সরকারের পক্ষ থেকে এ কে আবদুল মোমেনকে এমন দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তিনি অন্য কোনও দেশে সফরকালে দেওয়া বক্তব্যের জন্য মন্ত্রিসভার দায় কেন থাকবে না, জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমত মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিনি বলেছেন এই বক্তব্য যখন গণমাধ্যমে এল যেটি তিনি চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমীতে গিয়ে বলেছেন কয়েকদিন তিনি বলেছেন যে তার বক্তব্য ডিস্টার্টেট হয়েছে। ডিস্টার্টেট হোক কিংবা যাই হোক তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেছেন তার বক্তব্য ডিস্টার্টেট। কেউ যদি বিদেশে গিয়ে কারও সঙ্গে গল্প করে আসে, সেটির দায়দায়িত্ব সরকারের কিংবা দলের নয়। আমাদের দলের ভিত জনগণ। আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তিতেই বলিয়ান। আমরা জনগণের শক্তিতেই বিশ্বাস করি। জনগণের রায় নিয়েই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় সরকার পরিচালনা করেছে এবং ক্ষমতায় গেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি জনগণ ছাড়া অন্য কেউ সরকার টিকিয়েও রাখতে পারে না এবং দেশ পরিচালনার দায়িত্বও দিতে পারে না। কেউ যদি কারো সাথে গিয়ে গল্প করে আসে, সেটির দায় দায়িত্ব তো সরকারের নয়। আমাদের সরকার কিংবা দল এরকম দায়িত্বও কাউকে দেয়নি। কেউ ব্যক্তিগত গল্প করে আসলে সেটির দায় দায়িত্ব তার। এটি সরকার কিংবা দলের নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রথমত কেবিনেট মিনিস্টার কোনও দেশে গেলে অফিশিয়াল কিংবা আনঅফিশিয়ালি লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন। আমরা যখন বিদেশে যাই সেখানে অফিশিয়াল প্রোগ্রামও থাকে আনঅফিশিয়াল প্রোগ্রামও থাকে। তখন হয়তো অনেকের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়। উনি ব্যক্তিগতভাবে কার সাথে কি বলেছেন, সেটার দায়ভার সরকার কিংবা দলের নয়। তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনও নেতা নয় যে, দলের পক্ষ থেকে বিদেশে গিয়ে কথা বলবেন, তা নয়।’ আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তিতেই বলিয়ান উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বরং বিএনপি, তারা প্রতিনিয়ত একবার ছুটে যায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আরেকবার ছুটে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আরেকবার ছুটে যায় চীনে, আরেকবার ভারত। আবার কখন যে ভুটানের কাছে যায় সেটা জানি না। এজন্য বিএনপিকে মানুষ বলছে নালিশ পার্টি। বিএনপি বরং দেশের জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে না, বিদেশিদের কাছে প্রতিনিয়ন ধরনা দিচ্ছে যে, তাদের যেন কোলে করে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়। এদেশে কেউ কাউকে কোলে করে ক্ষমতায় বসিয়ে দিতে পারবে না।’ সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদের একাধিক সদস্য ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করে সমালোচিত হচ্ছেন, এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি দায়িত্বপূর্ণ পদে থাকলে দায়িত্বশীলভাবে কথা বলা দরকার। আমি নিজেও কথা বলার সময় খুব সতর্ক থাকি।’ একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকার কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে কি না জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারেক জিয়া যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত আসামি। যুক্তরাজ্যের সাথে আলাপ আলোচনা চলছে এ ব্যাপারে। তাদের যেহেতু নিজস্ব কিছু আইন আছে, সেখানে কিছু অবলিকেশন আছে, তাদের সঙ্গে চুক্তি… এসব বিষয় যুক্ত। এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে।’