ঢাকা ০৪:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

পরিত্যক্ত গ্যাসক্ষেত্র থেকে বাপেক্সের নতুন করে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের উদ্যোগ

  • দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৯:০০:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১৫২ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
নাইকোর পরিত্যক্ত গ্যাসক্ষেত্রে নতুন করে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের উদ্যোগ নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। পরিত্যক্ত গ্যাসক্ষেত্রটি ৪৪৭ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ) গ্যাসের মজুদ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম ১০ ডলার ধরে মজুদ থাকা গ্যাসের আর্থিক মূল্য দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা। বিগত ২০০৫ সালে ছাতকের টেংরাটিলায় কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর তত্ত্বাবধানে থাকা গ্যাসক্ষেত্রটি বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটেছিল। নাইকোর বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলায় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বাপেক্স এখন ১৭ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা ওই গ্যাসক্ষেত্রে নতুন করে অনুসন্ধান ও উত্তোলনের উদ্যোগ নিয়েছে। পেট্রোবাংলা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, টেংরাটিলার পরিত্যক্ত গ্যাসক্ষেত্রটিতে মজুদ গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হলে তা বিদ্যমান গ্যাস সংকট মোকাবেলায় ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে উচ্চমূল্যে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির মাধ্যমে গ্যাস সংকট মোকাবেলা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে গ্যাস উত্তোলনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আইন মন্ত্রণালয়ের সবুজ সংকেত মিলেছে। নিয়ম অনুযায়ী এখন ওই গ্যাসক্ষেত্রে বাপেক্স সিসমিক সার্ভে করবে। তারপর শুরু হবে অনুসন্ধান কূপ খননের কাজ।
সূত্র জানায়, দেশের বার্ষিক গ্যাসের চাহিদা এক ট্রিলিয়ন ঘনফুট। আর শুধু ছাতকেই মজুদ রয়েছে অর্ধট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। যা দিয়ে অন্তত ৬ মাস গ্যাস সরবরাহ চালু রাখা সম্ভব। সরবরাহের সঙ্গে তুলনা করলে ওই গ্যাস দিয়ে ৮-১০ বছরের এলএনজির চাহিদা পূরণ সম্ভব। বিগত ২০০৩ সালে বাপেক্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির আওতায় কানাডার প্রতিষ্ঠান নাইকো ছাতকের টেংরাটিলায় গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলনের দায়িত্ব পায়। কূপ খনন শুরু হলে ২০০৫ সালে গ্যাসক্ষেত্রটিতে দুই দফায় মারাত্মক বিস্ফোরণ ঘটে। ওই বিস্ফোরণের পর গাফিলতি ও অদক্ষতার কারণে নাইকোর বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ করা হয়। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে ২০২০ সালে ওই মামলায় জয় পায় বাংলাদেশ। জয়ের পরই মূলত সেখানে নতুন করে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের পরিকল্পনা শুরু করে বাপেক্স। নতুন করে গ্যাস অনুসন্ধানে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রণালয় তাতে অনাপত্তি জানায়।
সূত্র আরো জানায়, জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ ঠিক রাখতে পেট্রোবাংলাকে বাড়তি দামে এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় পেট্রোবাংলার এ বছরই দেশে ৫৬ কার্গো এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। তার বাইরে স্পট মার্কেট থেকে আরো ১৩ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে। ফলে এ খাত বাবদ সংস্থাটির ব্যয়ও কয়েক গুণ বাড়ছে। সব মিলিয়ে এলএনজি আমদানিতে বর্তমানে গ্যাস খাতের মোট ব্যয়ের দুই-তৃতীয়াংশই চলে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ছাতক গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করা গেলে এলএনজির আমদানি-নির্ভরতার অনেকটুকুই কাটিয়ে উঠতে পারবে বাংলাদেশ। দেশে এ মুহূর্তে যে গ্যাস সংকট রয়েছে তা মোকাবেলা করতে আরো আগেই ছাতক থেকে গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ নেয়া উচিত ছিল বলে খাতসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। তাদের মতে, মামলায় জয় পাওয়ার পরও দেড় বছর পেরিয়ে যাওয়া অযথা সময়ক্ষেপণ।
এদিকে নাইকোর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ, কানাডা ও ব্রিটেনে বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তি-সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত (ইকসিড) নালিশ করে বাংলাদেশ। ওসব মামলা ও অভিযোগের মধ্যে নাইকো ২০১০ সালে ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণে দায়ী নয় বলে ইকসিডে একটি সালিশি মোকদ্দমা দায়ের করে। তারপর ২০১৬ সালে বাপেক্স আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করে। তাতে নাইকোর বিরুদ্ধে বাপেক্স ১১৮ মিলিয়ন ডলার এবং বাংলাদেশ সরকার ৮৯৬ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের দাবি করে। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে মামলায় জয় পায় বাংলাদেশ। আশা করা হচ্ছে ওই মামলায় বাংলাদেশ ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতিপূরণ পাবে। তার বাইরে স্বাস্থ্যগত, পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি নিরূপণ করে তার পরিমাণ আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে নাইকোর কাছ থেকে ওই অর্থ ফেরত পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে জ্বালানি বিভাগ সংশ্লিষ্টরা শঙ্কায় আছে। তাদের মতে, নাইকো দেউলিয়া হয়ে গেছে। বাংলাদেশে তাদের যে সম্পত্তি রয়েছে তা দিয়ে এক-তৃতীয়াংশ ক্ষতিপূরণ পাওয়া সম্ভব। জানা যায় গ্যাসের অনুসন্ধান ব্লক ৯-এ বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্রে নাইকোর সম্পত্তি রয়েছে। ওই সম্পত্তির পরিমাণ গত কয়েক বছর আগের হিসাব অনুযায়ী ২৮০ মিলিয়ন ডলারের মতো। আর বাংলাদেশের কাছে নাইকো গ্যাসের বিল পাবে ৩০ মিলিয়ন ডলার। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে তাদের সম্পত্তি রয়েছে ৩১০ মিলিয়ন ডলারের মতো।
অন্যদিকে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বিদ্যমান গ্যাস সংকট মোকাবেলায় এ মুহূর্তে ছাতক বড় সাফল্য দিতে পারে। সেখানে চার-পাঁচটি কূপ খনন করলেই গ্যাস পাওয়া সম্ভব। যদিও ওই গ্যাসক্ষেত্রে খনন করার বিষয়ে কিছু ঝুঁকি রয়েছে। সেসব মোকাবেলা করা গেলে ওই ক্ষেত্রের মোট মজুদের মধ্যে অন্তত ৩৫০ বিসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব। যা দেশের মোট গ্যাসের মজুদকে আরো সমৃদ্ধ করবে। সেজন্য আরো আগেই ওই সম্ভাবনা জ্বালানি বিভাগের কাজে লাগানো উচিত ছিল।
এ বিষয়ে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে শুরুতে রাষ্ট্রীয় কোম্পানি হিসেবে বাপেক্স নাইকোর সঙ্গে কাজ করেছে। ফলে তারা চলে গেলেও এখন মামলার রায়ের ফলে বাপেক্স সেখানে কাজ করতে পারবে। ছাতকে পূর্ব ও পশ্চিম দুটি ব্লক রয়েছে। যে এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটেনি ওই এলাকায় থ্রিডি সিসমিক সার্ভে করা হবে। তারপর সেখানে অনুসন্ধান কূপ খনন করা হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পেঁয়াজ উৎপাদন নিয়ে কৃষকের লোকসানের শঙ্কা বাড়ছে

পরিত্যক্ত গ্যাসক্ষেত্র থেকে বাপেক্সের নতুন করে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের উদ্যোগ

আপডেট সময়ঃ ০৯:০০:০১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
নাইকোর পরিত্যক্ত গ্যাসক্ষেত্রে নতুন করে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের উদ্যোগ নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্স। পরিত্যক্ত গ্যাসক্ষেত্রটি ৪৪৭ বিলিয়ন ঘনফুট (বিসিএফ) গ্যাসের মজুদ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারমূল্যে প্রতি হাজার ঘনফুট গ্যাসের দাম ১০ ডলার ধরে মজুদ থাকা গ্যাসের আর্থিক মূল্য দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা। বিগত ২০০৫ সালে ছাতকের টেংরাটিলায় কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর তত্ত্বাবধানে থাকা গ্যাসক্ষেত্রটি বিস্ফোরণ ঘটনা ঘটেছিল। নাইকোর বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলায় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বাপেক্স এখন ১৭ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা ওই গ্যাসক্ষেত্রে নতুন করে অনুসন্ধান ও উত্তোলনের উদ্যোগ নিয়েছে। পেট্রোবাংলা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, টেংরাটিলার পরিত্যক্ত গ্যাসক্ষেত্রটিতে মজুদ গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হলে তা বিদ্যমান গ্যাস সংকট মোকাবেলায় ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে উচ্চমূল্যে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির মাধ্যমে গ্যাস সংকট মোকাবেলা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে গ্যাস উত্তোলনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আইন মন্ত্রণালয়ের সবুজ সংকেত মিলেছে। নিয়ম অনুযায়ী এখন ওই গ্যাসক্ষেত্রে বাপেক্স সিসমিক সার্ভে করবে। তারপর শুরু হবে অনুসন্ধান কূপ খননের কাজ।
সূত্র জানায়, দেশের বার্ষিক গ্যাসের চাহিদা এক ট্রিলিয়ন ঘনফুট। আর শুধু ছাতকেই মজুদ রয়েছে অর্ধট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। যা দিয়ে অন্তত ৬ মাস গ্যাস সরবরাহ চালু রাখা সম্ভব। সরবরাহের সঙ্গে তুলনা করলে ওই গ্যাস দিয়ে ৮-১০ বছরের এলএনজির চাহিদা পূরণ সম্ভব। বিগত ২০০৩ সালে বাপেক্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির আওতায় কানাডার প্রতিষ্ঠান নাইকো ছাতকের টেংরাটিলায় গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলনের দায়িত্ব পায়। কূপ খনন শুরু হলে ২০০৫ সালে গ্যাসক্ষেত্রটিতে দুই দফায় মারাত্মক বিস্ফোরণ ঘটে। ওই বিস্ফোরণের পর গাফিলতি ও অদক্ষতার কারণে নাইকোর বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ করা হয়। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে ২০২০ সালে ওই মামলায় জয় পায় বাংলাদেশ। জয়ের পরই মূলত সেখানে নতুন করে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের পরিকল্পনা শুরু করে বাপেক্স। নতুন করে গ্যাস অনুসন্ধানে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রণালয় তাতে অনাপত্তি জানায়।
সূত্র আরো জানায়, জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ ঠিক রাখতে পেট্রোবাংলাকে বাড়তি দামে এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় পেট্রোবাংলার এ বছরই দেশে ৫৬ কার্গো এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে। তার বাইরে স্পট মার্কেট থেকে আরো ১৩ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে। ফলে এ খাত বাবদ সংস্থাটির ব্যয়ও কয়েক গুণ বাড়ছে। সব মিলিয়ে এলএনজি আমদানিতে বর্তমানে গ্যাস খাতের মোট ব্যয়ের দুই-তৃতীয়াংশই চলে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ছাতক গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করা গেলে এলএনজির আমদানি-নির্ভরতার অনেকটুকুই কাটিয়ে উঠতে পারবে বাংলাদেশ। দেশে এ মুহূর্তে যে গ্যাস সংকট রয়েছে তা মোকাবেলা করতে আরো আগেই ছাতক থেকে গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ নেয়া উচিত ছিল বলে খাতসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। তাদের মতে, মামলায় জয় পাওয়ার পরও দেড় বছর পেরিয়ে যাওয়া অযথা সময়ক্ষেপণ।
এদিকে নাইকোর বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ, কানাডা ও ব্রিটেনে বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তি-সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সালিশি আদালত (ইকসিড) নালিশ করে বাংলাদেশ। ওসব মামলা ও অভিযোগের মধ্যে নাইকো ২০১০ সালে ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণে দায়ী নয় বলে ইকসিডে একটি সালিশি মোকদ্দমা দায়ের করে। তারপর ২০১৬ সালে বাপেক্স আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করে। তাতে নাইকোর বিরুদ্ধে বাপেক্স ১১৮ মিলিয়ন ডলার এবং বাংলাদেশ সরকার ৮৯৬ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের দাবি করে। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে মামলায় জয় পায় বাংলাদেশ। আশা করা হচ্ছে ওই মামলায় বাংলাদেশ ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতিপূরণ পাবে। তার বাইরে স্বাস্থ্যগত, পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি নিরূপণ করে তার পরিমাণ আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে নাইকোর কাছ থেকে ওই অর্থ ফেরত পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে জ্বালানি বিভাগ সংশ্লিষ্টরা শঙ্কায় আছে। তাদের মতে, নাইকো দেউলিয়া হয়ে গেছে। বাংলাদেশে তাদের যে সম্পত্তি রয়েছে তা দিয়ে এক-তৃতীয়াংশ ক্ষতিপূরণ পাওয়া সম্ভব। জানা যায় গ্যাসের অনুসন্ধান ব্লক ৯-এ বাঙ্গুরা গ্যাসক্ষেত্রে নাইকোর সম্পত্তি রয়েছে। ওই সম্পত্তির পরিমাণ গত কয়েক বছর আগের হিসাব অনুযায়ী ২৮০ মিলিয়ন ডলারের মতো। আর বাংলাদেশের কাছে নাইকো গ্যাসের বিল পাবে ৩০ মিলিয়ন ডলার। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে তাদের সম্পত্তি রয়েছে ৩১০ মিলিয়ন ডলারের মতো।
অন্যদিকে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বিদ্যমান গ্যাস সংকট মোকাবেলায় এ মুহূর্তে ছাতক বড় সাফল্য দিতে পারে। সেখানে চার-পাঁচটি কূপ খনন করলেই গ্যাস পাওয়া সম্ভব। যদিও ওই গ্যাসক্ষেত্রে খনন করার বিষয়ে কিছু ঝুঁকি রয়েছে। সেসব মোকাবেলা করা গেলে ওই ক্ষেত্রের মোট মজুদের মধ্যে অন্তত ৩৫০ বিসিএফ গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব। যা দেশের মোট গ্যাসের মজুদকে আরো সমৃদ্ধ করবে। সেজন্য আরো আগেই ওই সম্ভাবনা জ্বালানি বিভাগের কাজে লাগানো উচিত ছিল।
এ বিষয়ে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, ছাতক গ্যাসক্ষেত্রে শুরুতে রাষ্ট্রীয় কোম্পানি হিসেবে বাপেক্স নাইকোর সঙ্গে কাজ করেছে। ফলে তারা চলে গেলেও এখন মামলার রায়ের ফলে বাপেক্স সেখানে কাজ করতে পারবে। ছাতকে পূর্ব ও পশ্চিম দুটি ব্লক রয়েছে। যে এলাকায় বিস্ফোরণ ঘটেনি ওই এলাকায় থ্রিডি সিসমিক সার্ভে করা হবে। তারপর সেখানে অনুসন্ধান কূপ খনন করা হবে।