নিজস্ব প্রতিবেদক :
গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিয়ে এবং লন্ডন সফর শেষে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্যারিসের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটে চার্লস দ্যা গল বিমানবন্দরে অবতরণ করে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি-২১০৬)। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে ফ্রান্সে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার মোহাম্মদ তালহা ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রধান স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সকাল ৯টা ২৪ মিনিটে ফ্লাইটটি প্যারিসের উদ্দেশ্যে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। হিথ্রো বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান। বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সরকারি বাসভবন এলিসি প্যালেসে পৌঁছালে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ম্যাক্রোঁ। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয় এবং প্রেসিডেন্টের গার্ড রেজিমেন্ট তাকে গার্ড অব অনার দেন। এ সময় তিনি গার্ড পরিদর্শন করেন। পরে শেখ হাসিনা ও ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ একান্ত আলাপে বসেন এবং উভয়ের উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা শেষে শেখ হাসিনা এলিসি প্রাসাদে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। এ সময় তিনি প্রাসাদে রিপাবলিকান গার্ডের গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন। এরপর ফরাসি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ম্যাটিগননে যান শেখ হাসিনা। এ সময় দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। যেখানে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। গত ৩ নভেম্বর ওয়ার্ল্ড লিডারস সামিট কপ-২৬ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে গ্লাসগো থেকে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লন্ডনে প্রায় এক সপ্তাহ অবস্থানকালে ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২১: বিল্ডিং সাসটেইনেবল গ্রোথ পার্টনারশিপ’ শীর্ষক রোড শো উদ্বোধন ছাড়াও বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন, এদিন লন্ডনে শেখ হাসিনার বাসস্থানের সামনে তাকে বিদায় জানাতে আসা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের উদ্দেশে তিনি দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। বিমানবন্দরের উদ্দেশে বাসস্থান ছাড়ার আগে প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী ও দলীয় নেতা-কর্মীদের জানান, কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে সবার সঙ্গে সরাসরি দেখা করা সম্ভব হয়নি। মহামারি করোনা কেটে গেলে তিনি তাদের সঙ্গে আবার দেখা করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩১ অক্টোবর যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফরের উদ্দেশে গ্লাসগো পৌঁছেন। আগামী ১৩ নভেম্বর প্যারিস থেকে দেশের উদ্দেশে রওনা হয়ে ১৪ নভেম্বর সকালে দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।নিজস্ব প্রতিবেদক :
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, জ¦ালানি তেলের দাম কমাও, দ্রব্যমূল্য কমাওÑ ইত্যাদি ইত্যাদি অনুরোধ করতে চাই না। কারণ আবারও বলছিÑ এটা একটা সিন্ডিকেট। মালিকপক্ষ এবং শ্রমিক নেতার নামধারি সরকারি চামচারা যারা অনেক টাকা কামিয়েছেন, তারা এই কাজ করছে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘তেল, গ্যাস ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, সরকারি ছলচাতুরি ও দুঃশাসনের প্রেক্ষিতে’ এক সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান মান্না এ কথা বলেন। দেশের কিছু লুটেরা ব্যবসায়ীরা সরকারের যোগসাজশে সব সময় জনগণের পকেট কেটেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকারের কিছু যায় আসে না। যখন সরকারি মূল্যবোধ শেষ হয়ে, ক্ষমতায় থাকাকে সমস্ত লক্ষ্য মনে করে তখন মানুষের বিষয় তার কাছে মূল্য থাকবে কী করে। এভাবে জ¦ালানি তেলের বাড়ানো অযৌক্তিক উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের এই নেতা বলেন, একটা উপায় হতে পারতো, আপাতত আমরা ভুর্তুকি দিয়ে দিয়ে বৈশ্বিক জ¦ালানির যে সংকট সেটা আমরা সমন্বয় করতে পারতাম। আগেও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পর ভাড়া বেড়েছিল, বাস সিএনজিতে চলে এই যুক্তিতে। একইভাবে ডিজেলের দাম বৃদ্ধিতে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘটে আইন মানেননি অভিযোগ তিনি বলেন, ট্রেড ইউনিয়নের একটা আইন আছে। একটা নোটিশ দিবেন যাতে জনগনের দুর্ভোগ না বাড়ে, সরকার প্রতিকার করবে। এরকম কিছুই করেনি। ভারতে জ¦ালানির দাম কমে, আমরা বাড়াই; এগুলো জবাবদিহিতার কোনও প্রশ্ন নাই। তাই যাই ইচ্ছে তাই করছে। আমরা এই ব্যাপারে আরও সতর্কতার কথা বলছি, জনগণ আরও বিপদে পড়ছে। এমনিতেই মানুষের ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই। দেশবাসীকে উদ্দেশ করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা বলতে চাই, এমন সরকার ক্ষমতায় থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর পর্যায়ে চলে যাবে। এমন লুটেরা একটি সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানোর জন্য শপথ এবং চেষ্টা করাই হোক আমাদের যাবতীয় ক্ষোভের সবচেয়ে কার্যকর বহিঃপ্রকাশ। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ্ কায়সার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মমিনুল ইসলাম, ডা. জাহেদুর রহমান প্রমুখ।