০৬:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫ | ই-পেপার

প্রধানমন্ত্রী দয়া করে খালেদা জিয়াকে বেশি সুবিধা দিয়েছেন: আইনমন্ত্রী

  • দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৯:৪৭:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর ২০২১
  • ৫০৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিদের তুলনায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বেশি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দয়া করে তাকে এই সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে পাসের জন্য উত্থাপিত বিলÑ‘বিরোধী দলীয় নেতা ও উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১’ বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বিলটি বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় বিএনপির সংরক্ষিত এমপি রুমিন ফারহানা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে ‘আইনগতভাবে’ তাকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি করেন। দ-বিধির ৪০১ ধারা মতে এই সুযোগ দেওয়ার এখতিয়ার সরকারের রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি কখনো বলিনি ৪০১ ধারা মতে উনাকে বিদেশ যেতে দেওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু উনি বর্তমানে সাজা স্থগিতপূর্বক বাসায় আছেন, সেটা ৪০১ ধারার ভিত্তিতেই। ওঁরা যে আবেদনটি করেছিলেন, সেটা ৪০১ ধারার আলোকেই নিষ্পত্তি হয়েছে। আর একটি আবেদন যে ধারার অধীনে নিষ্পত্তি হয়েছে, একই ধারায় বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার কোনো সুযোগ নেই। আইন সবার জন্য সমান উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। উনি (খালেদা জিয়া) তার চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। আর এটা পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক কারণে। সাজা স্থগিত রেখে মুক্তির শর্তে তার বাসায় অবস্থান করা ও বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার কথা থাকলেও উনি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরছেন। আমরা কোনো বাধা দেইনি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিকতা দেখালেও তারা কিন্তু সেটা করেননি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তারা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি তার (খালেদা জিয়ার) ছেলে তারেক জিয়া। তারপরও তাকে দয়া করা হয়েছে।
শিগগির সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ শুনানি: শিগগির সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর উচ্চ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের রিভিউ আবেদনের বিষয়ে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের মামলাটি বর্তমানে আপিল বিভাগে রিভিউর জন্য আছে। আমরা সুপ্রিম কোর্টের রুলসের ‘বৎৎড়ৎ ধঢ়ঢ়ধৎবহঃ ড়হ ঃযব ভধপব ড়ভ ঃযব ৎবপড়ৎফ’ গ্রাউন্ডে এ রিভিউ চেয়েছি। এ মামলায় রিভিউর জন্য আমাদের যথেষ্ট মেরিটও আছে। মামলাটি শুনানির জন্য আমরা এরইমধ্যে আপিল বিভাগের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি। আপিল বিভাগ আমাদের জানিয়েছে, শিগগির এ মামলার শুনানি হবে। আজ মঙ্গলবার সংসদে পাসের জন্য উত্থাপিত বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১ বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে এ কথা জানান তিনি। এর আগে বিলটি বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু ১৬তম সংশোধনীর রিভিউর সর্বশেষ কী অবস্থা তা জানতে চান। ২০১৭ সালের ৩ জুলাই সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন আপিল বিভাগ। ওই রায়ে হাইকোর্টের রায়ের কিছু পর্যবেক্ষণ এক্সপাঞ্জ করে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল ‘সর্বসম্মতভাবে’ খারিজ করে দেওয়া হয়। পরে একই বছরের ১ আগস্ট এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের প্রায় পাঁচ মাস পর ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর এ আবেদন দায়েরের পর কেটে গেছে তিন বছরেরও বেশি সময়। রিভিউ আবেদনটি এখনো আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় আছে। এর আগে ২০১৪ সালে অসামর্থ্যতা ও অযোগ্যতার কারণে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীটি জাতীয় সংসদে পাস করা হয়। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে এ ক্ষমতা ছিল। এরপর সংশোধনীটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ৯ জন আইনজীবী রিট দায়ের করেন। পরে হাইকোর্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সংশোধনীটি বাতিল ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে রায় দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ওয়াই-ফাই নিয়ে রুমিনকে টিপ্পনী: জাতীয় সংসদের কক্ষে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক না থাকার অভিযোগ তুললে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানাকে ওয়াই-ফাই সংযোগ ব্যবহারের জন্য বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ সময় আইনমন্ত্রী ‘টিপ্পনী কেটে’ বলেন, ‘ওয়াই-ফাইয়ের কোড (পাসওয়ার্ড) জয় বাংলা; তাই বোধহয় উনি ব্যবহার করবেন না।’ তখন সরকারি দলের সংসদ সদস্যদের মধ্যে হাসির রোল পড়ে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ‘বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১’ পাসের আলোচনার সময় এ ঘটনা ঘটে। বিলটির আলোচনায় অংশ নিয়ে রুমিন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে। রুমিনের পর দুজন এমপি বক্তব্য দেন। তারপর বক্তব্যের জবাব দিতে ওঠেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ সময় সংসদ কক্ষে ছিলেন না রুমিন। রুমিনের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী বলেন, উনি চলে গেছেন। আমার বক্তব্য ওনার শোনার দরকার নাই। ওনার বক্তব্য আমার কানে ঢুকিয়ে উনি চলে গেছেন। কিছু সময় পর বিলটির সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করতে গিয়ে রুমিন আইনমন্ত্রীর কথার জবাব দেন। তিনি বলেন, থ্রি-জি, ফোর-জি, ফাইভ-জির কথা শুনি। কিন্তু সংসদে নেটওয়ার্ক থাকে না মাননীয় স্পিকার। রুমিন জানান, তিনি ফৌজদারি কার্যবিধি মুঠোফোনে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সংসদ কক্ষে নেটওয়ার্ক না থাকায় তা দেখা যাচ্ছিল না। এ কারণে তিনি বাইরে গিয়েছিলেন। পরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী রুমিনকে সংসদের ওয়াই-ফাই ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। স্পিকার বলেন, ওয়াই-ফাই কানেক্ট করার চেষ্টা করুন। এখানে ওয়াই-ফাই থাকার কথা। পরে আইনমন্ত্রী বক্তব্য দিতে ওঠেন। তিনি রুমিনের উদ্দেশে অনেকটা হাস্যরস করে বলেন, ওয়াই-ফাইয়ের কোড জয় বাংলা। এজন্য উনি (রুমিন) বোধহয় তা ব্যবহার করবেন না। আইনমন্ত্রীর এই টিপ্পনীতে সরকারদলীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে হাসির রোল পড়ে যায়। পরে আইনমন্ত্রী নিজের মুঠোফোনে ফৌজদারি কার্যবিধি বের করে তা পড়ে শোনান।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সমুদ্রসম্পদ আহরণের জন্য গবেষণার ওপর জোর দিতে হবে:চসিক মেয়র

প্রধানমন্ত্রী দয়া করে খালেদা জিয়াকে বেশি সুবিধা দিয়েছেন: আইনমন্ত্রী

আপডেট সময়ঃ ০৯:৪৭:৩৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিদের তুলনায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বেশি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দয়া করে তাকে এই সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে পাসের জন্য উত্থাপিত বিলÑ‘বিরোধী দলীয় নেতা ও উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১’ বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বিলটি বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় বিএনপির সংরক্ষিত এমপি রুমিন ফারহানা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে ‘আইনগতভাবে’ তাকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি করেন। দ-বিধির ৪০১ ধারা মতে এই সুযোগ দেওয়ার এখতিয়ার সরকারের রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি কখনো বলিনি ৪০১ ধারা মতে উনাকে বিদেশ যেতে দেওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু উনি বর্তমানে সাজা স্থগিতপূর্বক বাসায় আছেন, সেটা ৪০১ ধারার ভিত্তিতেই। ওঁরা যে আবেদনটি করেছিলেন, সেটা ৪০১ ধারার আলোকেই নিষ্পত্তি হয়েছে। আর একটি আবেদন যে ধারার অধীনে নিষ্পত্তি হয়েছে, একই ধারায় বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার কোনো সুযোগ নেই। আইন সবার জন্য সমান উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন। উনি (খালেদা জিয়া) তার চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। আর এটা পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক কারণে। সাজা স্থগিত রেখে মুক্তির শর্তে তার বাসায় অবস্থান করা ও বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার কথা থাকলেও উনি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরছেন। আমরা কোনো বাধা দেইনি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিকতা দেখালেও তারা কিন্তু সেটা করেননি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তারা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি তার (খালেদা জিয়ার) ছেলে তারেক জিয়া। তারপরও তাকে দয়া করা হয়েছে।
শিগগির সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ শুনানি: শিগগির সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর উচ্চ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের রিভিউ আবেদনের বিষয়ে শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের মামলাটি বর্তমানে আপিল বিভাগে রিভিউর জন্য আছে। আমরা সুপ্রিম কোর্টের রুলসের ‘বৎৎড়ৎ ধঢ়ঢ়ধৎবহঃ ড়হ ঃযব ভধপব ড়ভ ঃযব ৎবপড়ৎফ’ গ্রাউন্ডে এ রিভিউ চেয়েছি। এ মামলায় রিভিউর জন্য আমাদের যথেষ্ট মেরিটও আছে। মামলাটি শুনানির জন্য আমরা এরইমধ্যে আপিল বিভাগের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি। আপিল বিভাগ আমাদের জানিয়েছে, শিগগির এ মামলার শুনানি হবে। আজ মঙ্গলবার সংসদে পাসের জন্য উত্থাপিত বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১ বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে এ কথা জানান তিনি। এর আগে বিলটি বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু ১৬তম সংশোধনীর রিভিউর সর্বশেষ কী অবস্থা তা জানতে চান। ২০১৭ সালের ৩ জুলাই সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন আপিল বিভাগ। ওই রায়ে হাইকোর্টের রায়ের কিছু পর্যবেক্ষণ এক্সপাঞ্জ করে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল ‘সর্বসম্মতভাবে’ খারিজ করে দেওয়া হয়। পরে একই বছরের ১ আগস্ট এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের প্রায় পাঁচ মাস পর ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর এ আবেদন দায়েরের পর কেটে গেছে তিন বছরেরও বেশি সময়। রিভিউ আবেদনটি এখনো আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় আছে। এর আগে ২০১৪ সালে অসামর্থ্যতা ও অযোগ্যতার কারণে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীটি জাতীয় সংসদে পাস করা হয়। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে এ ক্ষমতা ছিল। এরপর সংশোধনীটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ৯ জন আইনজীবী রিট দায়ের করেন। পরে হাইকোর্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সংশোধনীটি বাতিল ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে রায় দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
ওয়াই-ফাই নিয়ে রুমিনকে টিপ্পনী: জাতীয় সংসদের কক্ষে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক না থাকার অভিযোগ তুললে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানাকে ওয়াই-ফাই সংযোগ ব্যবহারের জন্য বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ সময় আইনমন্ত্রী ‘টিপ্পনী কেটে’ বলেন, ‘ওয়াই-ফাইয়ের কোড (পাসওয়ার্ড) জয় বাংলা; তাই বোধহয় উনি ব্যবহার করবেন না।’ তখন সরকারি দলের সংসদ সদস্যদের মধ্যে হাসির রোল পড়ে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ‘বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১’ পাসের আলোচনার সময় এ ঘটনা ঘটে। বিলটির আলোচনায় অংশ নিয়ে রুমিন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে। রুমিনের পর দুজন এমপি বক্তব্য দেন। তারপর বক্তব্যের জবাব দিতে ওঠেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ সময় সংসদ কক্ষে ছিলেন না রুমিন। রুমিনের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী বলেন, উনি চলে গেছেন। আমার বক্তব্য ওনার শোনার দরকার নাই। ওনার বক্তব্য আমার কানে ঢুকিয়ে উনি চলে গেছেন। কিছু সময় পর বিলটির সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করতে গিয়ে রুমিন আইনমন্ত্রীর কথার জবাব দেন। তিনি বলেন, থ্রি-জি, ফোর-জি, ফাইভ-জির কথা শুনি। কিন্তু সংসদে নেটওয়ার্ক থাকে না মাননীয় স্পিকার। রুমিন জানান, তিনি ফৌজদারি কার্যবিধি মুঠোফোনে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সংসদ কক্ষে নেটওয়ার্ক না থাকায় তা দেখা যাচ্ছিল না। এ কারণে তিনি বাইরে গিয়েছিলেন। পরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী রুমিনকে সংসদের ওয়াই-ফাই ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। স্পিকার বলেন, ওয়াই-ফাই কানেক্ট করার চেষ্টা করুন। এখানে ওয়াই-ফাই থাকার কথা। পরে আইনমন্ত্রী বক্তব্য দিতে ওঠেন। তিনি রুমিনের উদ্দেশে অনেকটা হাস্যরস করে বলেন, ওয়াই-ফাইয়ের কোড জয় বাংলা। এজন্য উনি (রুমিন) বোধহয় তা ব্যবহার করবেন না। আইনমন্ত্রীর এই টিপ্পনীতে সরকারদলীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে হাসির রোল পড়ে যায়। পরে আইনমন্ত্রী নিজের মুঠোফোনে ফৌজদারি কার্যবিধি বের করে তা পড়ে শোনান।