১০:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ | ই-পেপার

বাস, ট্রেন ও লঞ্চে ঢাকামুখী মানুষের স্রোত

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার খুলেছে সরকারি-বেসরকারি অনেক অফিস। তবে এখনো যেসব অফিস বন্ধ আছে আজ রোববার থেকে খুলছে সেগুলো। এ অবস্থায় রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখ ও টার্মিনালে এখন ঢাকামুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড়। ঈদের লম্বা ছুটি শেষে জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করা মানুষের ¯্রােত ছিলো চোখে পড়ার মতো। ফেরিঘাটে চাপ বেড়েছে। মহাসড়কেও দেখা গেছে গাড়ির চাপ। কর্মজীবী এসব মানুষের ফিরতি পথে সড়ক ছাড়া ট্রেন ও লঞ্চে তেমন কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা। এবারের ট্রেনযোগে বাড়ি যাওয়ার পথের যাত্রাটাও ছিলো স্বাচ্ছন্দ্যের। উপচেপড়া ভিড় থাকলেও ট্রেনে সময়সূচির কোনো বিপর্যয় হয়নি। ঈদ যাত্রায় দিনের দু’একটি ট্রেন দেরিতে ছেড়েছে। তবে যাত্রার শুরুতে কোনো ট্রেন বেশি দেরি করলে রিজার্ভ ট্রেনের মাধ্যমে বিকল্প উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে টিকিট পাওয়া নিয়ে প্রতিবারের মতোই অভিযোগ ছিলো। এ ছাড়া অনলাইন টিকিটিং সিস্টেম নিয়েও ছিলো বিড়ম্বনা। ফিরতি যাত্রায় প্রতিদিন ৩৭টি ট্রেন বিভিন্ন জেলা শহর থেকে ঢাকা অভিমুখে আসে। এসব ট্রেনের পাশাপাশি চলে বিশেষ ট্রেন। বাড়ি যাওয়ার পর ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরে আসাটাও স্বস্তির ছিলো বলে জানান আগত যাত্রীরা। আজ শনিবার অপেক্ষা গত শুক্রবার কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীর চাপ ছিলো বেশি। গত শুক্রবার ভোর থেকেই কমলাপুরে যাত্রীদের চাপ ছিলো চোখে পড়ার মতো। সময়মতোই ট্রেনগুলো কমলাপুর এসে পৌঁছেছে। যাত্রীরা বলছেন, কাজ থাকায় একদিন আগেই তারা বর্তমান ঠিকানায় চলে এসেছেন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করে স্বস্তিতে ঢাকায় ফেরায় আনন্দিত তারা।
সদরঘাটে ঢাকায় ফেরা মানুষের উপচেপড়া ভিড়: দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঢাকায় ফেরার চাপ বাড়ে সদরঘাটেও। গত শুক্রবার রাত থেকে গতকাল শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৮১টি লঞ্চ আসে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। গ্রামে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করে কাজের তাগিদে আবারও পরিবার ও প্রিয়জনদের নিয়ে ঢাকায় ফিরছে মানুষ। গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে এমনটাই দেখা যায়। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সকাল থেকে ছিল ঈদের আনন্দ শেষে ব্যস্ত নগরীতে কর্মব্যস্ত জীবনে ফেরা মানুষের ঢল। পরিবারের মানুষকে নিয়ে ফিরেছেন কয়েক হাজার মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকাল ৭ টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন জেলা থেকে ১০টি লঞ্চ এসেছে সদরঘাটে। বিআইডব্লিউটিএ’র ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন জানান, রাত থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি লঞ্চ আসে সদরঘাট টার্মিনালে। এ সময় হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় ফেরেন ঈদের ছুটি কাটিয়ে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে দেখা যায় বিভিন্ন স্থান থেকে সদরঘাট টার্মিনালে একের পর এক লঞ্চ যাত্রী ভর্তি করে আসছে। ঈদের আনন্দ শেষে কর্মব্যস্ত জীবনে ফেরার রেশ দেখা যায় যাত্রীদের চোখে মুখে। কেউ আবার জীবিকার তাগিদে না ফিরে উপায় নেই বলেও জানান। এদিকে, গতকাল শনিবার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সদরঘাট টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্য ২৩টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। এসব লঞ্চে যাত্রী কম থাকলেও ঢাকায় ফেরা মানুষদের নিয়ে আসতেই বিভিন্ন জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে সেগুলো।
চাপ বাড়লেও যানজট নেই সিরাজগঞ্জ মহাসড়কে: সিরাজগঞ্জ মহাসড়কে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেড়েছে। এসব যানবাহনের মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা বেশি। গতকাল শনিবার ভোর থেকে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাটিকুমরুল গোলচত্বর, নলকা সেতু, কড্ডার মোড়, মুলিবাড়ি ও সেতু পশ্চিম পাড় অংশে যানবাহনের চাপ রয়েছে। তবে কড্ডার মোড় ও হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় যাত্রীদের ওঠানামার কারণে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গিয়েছে। পুলিশি তৎপরতার কারণে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেনি। জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খাঁন জানান, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার কারণে সবাই ঢাকায় রওনা হওয়ায় গত শুক্রবার বিকেল থেকে গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে। তবে কোথাও দীর্ঘ সারি হয়নি। এখন যানবাহন তার স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করছে। কড্ডার মোড় থেকে একটু বেশি যাত্রী ওঠার কারণে সাময়িক জটলার সৃষ্টি হলেও আমাদের ট্রাফিক পুলিশ সজাগ রয়েছে। যমুনা পশ্চিম পাড় থানার উপপরিদর্শক বাবুল হোসেন জানান, সেতুর পশ্চিম পাড় এলাকায় উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা যানবাহনের চাপ বেশি রয়েছে। তবে কোথাও যানজট বা দীর্ঘ সারি নেই। আমরা সব সময়ের জন্য এই অংশের তদারকি করছি। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি লুৎফর রহমান জানান, হাটিকুমরুল গোলচত্বরে যানবাহনে চাপ গতকালের চেয়ে বেশি দেখা গিয়েছে। তবে চান্দাইকোনা ও তার আশপাশের এলাকায় কোনো চাপ দেখা যায়নি। আমরা হাইওয়ের সব জায়গার সার্বক্ষণিক খবর রাখছি।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে স্বস্তির যাত্রা: গত কয়েক বছর ঈদের আগে ও পড়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে দীর্ঘক্ষণ যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হতো ঘরমুখী ও কর্মস্থলে যাওয়া মানুষদের। কিন্তু এবারের চিত্রটা ভিন্ন। ঈদের আগে এই মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ থাকলেও ছিল না কোনো যানজট। ঠিক তেমনি ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফেরা মানুষগুলো এবার যানজট ছাড়াই ফিরতে শুরু করেছেন। গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের করটিয়া, ঘারিন্দা, শহর বাইপাস, পৌলী, এলেঙ্গা ও বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকামুখী লেনে যানবাহনের চাপ বেড়েছে স্বাভাবিকেরে চেয়ে দ্বিগুণ। তবে সেতুর পূর্ব পার থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত দুই লেনের সড়ক হওয়ায় এই সাড়ে ১৩ কিলোমিটার এলাকা যান চলাচল কিছুটা ধীর গতি হলেও এলেঙ্গা থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়কটিতে যানবাহন চলাচল করছে স্বাভাবিক গতিতে। তবে দুপুর ১২টার দিকে বৃষ্টির কারণে যান চলাচল কিছুটা বিঘিœত হলেও হয়নি কোনো যানজট। তবে মহাসড়কে বাস-ট্রাক, ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়াও মোটরসাইকেলে করেও ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ। যানবাহনের চালকরা জানান, গত কয়েক ঈদের আগে ও পরে এই মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে তীব্র যানজট হতো। কিন্তু এবারের চিত্রটা ভিন্ন। ঈদের আগে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্যোগে এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার দুই লেনের সড়কটি একমুখী (ওয়ানওয়ে) করে দেওয়ায় কোনো ধরনের যানজট হয়নি। ফলে নির্বিঘেœ ঘরমুখী মানুষ বাড়ি ফিরতে পেরেছেন। এ ছাড়া এখন ঈদের ছুটি শেষে তারা আবার কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে এবার একমুখী না করা হলেও উত্তরবঙ্গমুখী যানবাহন চলাচল স্বাভাবিকের তুলনায় কম থাকায় ঢাকামুখী যানবাহনগুলো যানজট ছাড়াই স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতোয়ার রহমান বলেন, মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় ঢাকাগামী যানবাহনের কিছুটা ধীরগতি থাকলেও কোনো যানজট নেই। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, যানজট নিরসনে মহাসড়কে গত শুক্রবার রাত থেকে ৮০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঈদের ছুটিতে যেভাবে স্বস্তিতে মানুষ বাড়ি ফিরেছে ঠিক তেমনিভাবে স্বস্তিতে কর্মস্থলে ফেরানোর জন্য পুলিশ কাজ করছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্নীতির মামলায় রাজউকের সাবেক কর্মচারীর ৭ বছরের কারাদ-

বাস, ট্রেন ও লঞ্চে ঢাকামুখী মানুষের স্রোত

আপডেট সময়ঃ ০৮:০৮:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ মে ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার খুলেছে সরকারি-বেসরকারি অনেক অফিস। তবে এখনো যেসব অফিস বন্ধ আছে আজ রোববার থেকে খুলছে সেগুলো। এ অবস্থায় রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখ ও টার্মিনালে এখন ঢাকামুখী মানুষের উপচেপড়া ভিড়। ঈদের লম্বা ছুটি শেষে জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করা মানুষের ¯্রােত ছিলো চোখে পড়ার মতো। ফেরিঘাটে চাপ বেড়েছে। মহাসড়কেও দেখা গেছে গাড়ির চাপ। কর্মজীবী এসব মানুষের ফিরতি পথে সড়ক ছাড়া ট্রেন ও লঞ্চে তেমন কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি বলে জানিয়েছেন তারা। এবারের ট্রেনযোগে বাড়ি যাওয়ার পথের যাত্রাটাও ছিলো স্বাচ্ছন্দ্যের। উপচেপড়া ভিড় থাকলেও ট্রেনে সময়সূচির কোনো বিপর্যয় হয়নি। ঈদ যাত্রায় দিনের দু’একটি ট্রেন দেরিতে ছেড়েছে। তবে যাত্রার শুরুতে কোনো ট্রেন বেশি দেরি করলে রিজার্ভ ট্রেনের মাধ্যমে বিকল্প উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে টিকিট পাওয়া নিয়ে প্রতিবারের মতোই অভিযোগ ছিলো। এ ছাড়া অনলাইন টিকিটিং সিস্টেম নিয়েও ছিলো বিড়ম্বনা। ফিরতি যাত্রায় প্রতিদিন ৩৭টি ট্রেন বিভিন্ন জেলা শহর থেকে ঢাকা অভিমুখে আসে। এসব ট্রেনের পাশাপাশি চলে বিশেষ ট্রেন। বাড়ি যাওয়ার পর ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরে আসাটাও স্বস্তির ছিলো বলে জানান আগত যাত্রীরা। আজ শনিবার অপেক্ষা গত শুক্রবার কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীর চাপ ছিলো বেশি। গত শুক্রবার ভোর থেকেই কমলাপুরে যাত্রীদের চাপ ছিলো চোখে পড়ার মতো। সময়মতোই ট্রেনগুলো কমলাপুর এসে পৌঁছেছে। যাত্রীরা বলছেন, কাজ থাকায় একদিন আগেই তারা বর্তমান ঠিকানায় চলে এসেছেন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করে স্বস্তিতে ঢাকায় ফেরায় আনন্দিত তারা।
সদরঘাটে ঢাকায় ফেরা মানুষের উপচেপড়া ভিড়: দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঢাকায় ফেরার চাপ বাড়ে সদরঘাটেও। গত শুক্রবার রাত থেকে গতকাল শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৮১টি লঞ্চ আসে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। গ্রামে পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করে কাজের তাগিদে আবারও পরিবার ও প্রিয়জনদের নিয়ে ঢাকায় ফিরছে মানুষ। গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে এমনটাই দেখা যায়। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে সকাল থেকে ছিল ঈদের আনন্দ শেষে ব্যস্ত নগরীতে কর্মব্যস্ত জীবনে ফেরা মানুষের ঢল। পরিবারের মানুষকে নিয়ে ফিরেছেন কয়েক হাজার মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকাল ৭ টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন জেলা থেকে ১০টি লঞ্চ এসেছে সদরঘাটে। বিআইডব্লিউটিএ’র ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন জানান, রাত থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি লঞ্চ আসে সদরঘাট টার্মিনালে। এ সময় হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় ফেরেন ঈদের ছুটি কাটিয়ে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে দেখা যায় বিভিন্ন স্থান থেকে সদরঘাট টার্মিনালে একের পর এক লঞ্চ যাত্রী ভর্তি করে আসছে। ঈদের আনন্দ শেষে কর্মব্যস্ত জীবনে ফেরার রেশ দেখা যায় যাত্রীদের চোখে মুখে। কেউ আবার জীবিকার তাগিদে না ফিরে উপায় নেই বলেও জানান। এদিকে, গতকাল শনিবার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সদরঘাট টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্য ২৩টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। এসব লঞ্চে যাত্রী কম থাকলেও ঢাকায় ফেরা মানুষদের নিয়ে আসতেই বিভিন্ন জেলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে সেগুলো।
চাপ বাড়লেও যানজট নেই সিরাজগঞ্জ মহাসড়কে: সিরাজগঞ্জ মহাসড়কে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেড়েছে। এসব যানবাহনের মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসের সংখ্যা বেশি। গতকাল শনিবার ভোর থেকে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাটিকুমরুল গোলচত্বর, নলকা সেতু, কড্ডার মোড়, মুলিবাড়ি ও সেতু পশ্চিম পাড় অংশে যানবাহনের চাপ রয়েছে। তবে কড্ডার মোড় ও হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় যাত্রীদের ওঠানামার কারণে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গিয়েছে। পুলিশি তৎপরতার কারণে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেনি। জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খাঁন জানান, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার কারণে সবাই ঢাকায় রওনা হওয়ায় গত শুক্রবার বিকেল থেকে গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে। তবে কোথাও দীর্ঘ সারি হয়নি। এখন যানবাহন তার স্বাভাবিক গতিতে চলাচল করছে। কড্ডার মোড় থেকে একটু বেশি যাত্রী ওঠার কারণে সাময়িক জটলার সৃষ্টি হলেও আমাদের ট্রাফিক পুলিশ সজাগ রয়েছে। যমুনা পশ্চিম পাড় থানার উপপরিদর্শক বাবুল হোসেন জানান, সেতুর পশ্চিম পাড় এলাকায় উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা যানবাহনের চাপ বেশি রয়েছে। তবে কোথাও যানজট বা দীর্ঘ সারি নেই। আমরা সব সময়ের জন্য এই অংশের তদারকি করছি। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ওসি লুৎফর রহমান জানান, হাটিকুমরুল গোলচত্বরে যানবাহনে চাপ গতকালের চেয়ে বেশি দেখা গিয়েছে। তবে চান্দাইকোনা ও তার আশপাশের এলাকায় কোনো চাপ দেখা যায়নি। আমরা হাইওয়ের সব জায়গার সার্বক্ষণিক খবর রাখছি।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে স্বস্তির যাত্রা: গত কয়েক বছর ঈদের আগে ও পড়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে দীর্ঘক্ষণ যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হতো ঘরমুখী ও কর্মস্থলে যাওয়া মানুষদের। কিন্তু এবারের চিত্রটা ভিন্ন। ঈদের আগে এই মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ থাকলেও ছিল না কোনো যানজট। ঠিক তেমনি ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফেরা মানুষগুলো এবার যানজট ছাড়াই ফিরতে শুরু করেছেন। গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের করটিয়া, ঘারিন্দা, শহর বাইপাস, পৌলী, এলেঙ্গা ও বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকামুখী লেনে যানবাহনের চাপ বেড়েছে স্বাভাবিকেরে চেয়ে দ্বিগুণ। তবে সেতুর পূর্ব পার থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত দুই লেনের সড়ক হওয়ায় এই সাড়ে ১৩ কিলোমিটার এলাকা যান চলাচল কিছুটা ধীর গতি হলেও এলেঙ্গা থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়কটিতে যানবাহন চলাচল করছে স্বাভাবিক গতিতে। তবে দুপুর ১২টার দিকে বৃষ্টির কারণে যান চলাচল কিছুটা বিঘিœত হলেও হয়নি কোনো যানজট। তবে মহাসড়কে বাস-ট্রাক, ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়াও মোটরসাইকেলে করেও ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ। যানবাহনের চালকরা জানান, গত কয়েক ঈদের আগে ও পরে এই মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে তীব্র যানজট হতো। কিন্তু এবারের চিত্রটা ভিন্ন। ঈদের আগে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্যোগে এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার দুই লেনের সড়কটি একমুখী (ওয়ানওয়ে) করে দেওয়ায় কোনো ধরনের যানজট হয়নি। ফলে নির্বিঘেœ ঘরমুখী মানুষ বাড়ি ফিরতে পেরেছেন। এ ছাড়া এখন ঈদের ছুটি শেষে তারা আবার কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। তবে এবার একমুখী না করা হলেও উত্তরবঙ্গমুখী যানবাহন চলাচল স্বাভাবিকের তুলনায় কম থাকায় ঢাকামুখী যানবাহনগুলো যানজট ছাড়াই স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতোয়ার রহমান বলেন, মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় ঢাকাগামী যানবাহনের কিছুটা ধীরগতি থাকলেও কোনো যানজট নেই। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, যানজট নিরসনে মহাসড়কে গত শুক্রবার রাত থেকে ৮০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঈদের ছুটিতে যেভাবে স্বস্তিতে মানুষ বাড়ি ফিরেছে ঠিক তেমনিভাবে স্বস্তিতে কর্মস্থলে ফেরানোর জন্য পুলিশ কাজ করছে।