০৯:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫ | ই-পেপার

বিএনপির ২৭ দফা তাদের মতাদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: তথ্যমন্ত্রী

  • দৈনিক আইন বার্তা
  • আপডেট সময়ঃ ০৯:০১:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২২
  • ১৩৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির ২৭ দফা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি গত ১৪ বছর যেভাবে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করেছে, সেটার জন্য এখন তাদের মেরামত করা দরকার। তাই তারা যে ২৭ দফা দিয়েছে, এটা তাদের মতাদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাদের ২৭ দফার মধ্যে ১৩ দফাই বলেছে দুর্নীতি নিয়ে আপোশ না করা প্রসঙ্গে। তারা দুর্নীতি করে হাওয়া ভবন করেছিল, তাদের মুখে এখন দুর্নীতি নিয়ে কথা মানে সাংঘর্ষিক। তারা সংস্কারের কথা বলতে পারতো। রাষ্ট্র কোনো কারখানা নয় যে তা মেরামত করতে হবে। গত মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন হোক, সেটা চায় সরকার। বিএনপিও নির্বাচনে আসুক, এটা আমরাও চাই। তবে আসবে কি আসবে না, সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এদিকে মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার সময় বিএনপি নেতা মো. আলী আজমের হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দিলে ভালো হতো বলে অভিমত ব্যক্ত করেন হাছান মাহমুদ। গত মঙ্গলবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় প্যারোলে মুক্তি নিয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নেন উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম। এ সময় তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরানো ছিল। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী এমন অভিমত দেন। আলী আজমের মা সাহেরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে গত রোববার বিকেলে মৃত্যুবরণ করেন। মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে গত মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে নিজ বাড়ি কালিয়াকৈরের পাবুরিয়াচালা এলাকায় জানাজায় উপস্থিত হন আলী আজম। স্বজনরা জানান, শেষবার মাকে দেখতে ও মায়ের জানাজা নিজে পড়াতে আইনজীবীর মাধ্যমে গত সোমবার বিকেলে গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন আলী আজম। কিন্তু ওইদিন দাপ্তরিক কাজ শেষ না হওয়ায় গত মঙ্গলবার তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি মেলে তার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্যারোলে মুক্তি পেয়ে সকাল ১০টায় নিজ বাড়ির পাশে মায়ের জানাজাস্থলে উপস্থিত হন আলী আজম। বেলা ১১টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মায়ের দাফন শেষে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পুরোটা সময় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন তিনি। এ ঘটনা তুলে ধরে সাংবাদিকরা তথ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, জানাজার সময় হাতকড়া-ডান্ডাবেড়ি থাকার ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের বক্তব্য, সরকার এতটা ‘অমানবিক’ না হলেও পারতো। জবাবে ড. হাছান বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে চেক করেছি। আমি গাজীপুরের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। ডান্ডাবেড়ি বা হাতকড়া পরানো না পরানো হচ্ছে জেল প্রশাসনের কাজ। সেটি আবার পুলিশের অধীনে নয়। একজন আইজি প্রিজন আছেন সেই প্রশাসনের অধীনে। আমাদের পুলিশের যে মহাপরিদর্শক, তাদের অধীনেও নয়। ডান্ডাবেড়ি কিংবা হাতকড়া জেল প্রশাসনই পরায়। আমি বিষয়টি চেক করেছি, তাকে প্যারোলে কয়েক ঘণ্টার জন্য মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে কয়েকজন জঙ্গি পালিয়ে গেছে। তাদের বিষয়ে যেভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার ছিল সেটি করা হয়নি বিধায় তদন্তে উঠে এসেছে এবং তারা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এজন্য তারা (গাজীপুরে) অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। আমি এসপি পর্যায়েও কথা বলেছি, তারা বিষয়টি জানতেন না। যারা বিএনপি নেতাকে কেরি (বহন) করে এনেছিল, শুধু তারাই জানতেন; অন্যরা কেউ জানতেন না। তবে আমি মনে করি জানাজার সময় ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো। সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে সব দলকে নির্বাচনমুখী করা। এটা নির্বাচন কমিশনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। আমরাও চাই সমস্ত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। বিএনপিসহ সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে একটি প্রতিযোগিতামূলক, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক- সেটি আমরাও চাই। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না, সেটি একান্তই তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে একটি কথা আছে, গাধা জল ঘোলা করে খায়। বিএনপি যেমন ১০ তারিখ জল ঘোলা করে নয়াপল্টনের সমাবেশ গরুর হাটের ময়দানে (গোলাপবাগ মাঠে) করেছে, এক্ষেত্রেও আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিএনপি নির্বাচনে আসবে তাদের দল টিকিয়ে রাখার স্বার্থে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে লিফট দুর্ঘটনা

বিএনপির ২৭ দফা তাদের মতাদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক: তথ্যমন্ত্রী

আপডেট সময়ঃ ০৯:০১:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির ২৭ দফা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি গত ১৪ বছর যেভাবে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করেছে, সেটার জন্য এখন তাদের মেরামত করা দরকার। তাই তারা যে ২৭ দফা দিয়েছে, এটা তাদের মতাদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাদের ২৭ দফার মধ্যে ১৩ দফাই বলেছে দুর্নীতি নিয়ে আপোশ না করা প্রসঙ্গে। তারা দুর্নীতি করে হাওয়া ভবন করেছিল, তাদের মুখে এখন দুর্নীতি নিয়ে কথা মানে সাংঘর্ষিক। তারা সংস্কারের কথা বলতে পারতো। রাষ্ট্র কোনো কারখানা নয় যে তা মেরামত করতে হবে। গত মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন হোক, সেটা চায় সরকার। বিএনপিও নির্বাচনে আসুক, এটা আমরাও চাই। তবে আসবে কি আসবে না, সেটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। এদিকে মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার সময় বিএনপি নেতা মো. আলী আজমের হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি খুলে দিলে ভালো হতো বলে অভিমত ব্যক্ত করেন হাছান মাহমুদ। গত মঙ্গলবার গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় প্যারোলে মুক্তি নিয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নেন উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলী আজম। এ সময় তার হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরানো ছিল। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী এমন অভিমত দেন। আলী আজমের মা সাহেরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে গত রোববার বিকেলে মৃত্যুবরণ করেন। মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে গত মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে নিজ বাড়ি কালিয়াকৈরের পাবুরিয়াচালা এলাকায় জানাজায় উপস্থিত হন আলী আজম। স্বজনরা জানান, শেষবার মাকে দেখতে ও মায়ের জানাজা নিজে পড়াতে আইনজীবীর মাধ্যমে গত সোমবার বিকেলে গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন আলী আজম। কিন্তু ওইদিন দাপ্তরিক কাজ শেষ না হওয়ায় গত মঙ্গলবার তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি মেলে তার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্যারোলে মুক্তি পেয়ে সকাল ১০টায় নিজ বাড়ির পাশে মায়ের জানাজাস্থলে উপস্থিত হন আলী আজম। বেলা ১১টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। মায়ের দাফন শেষে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পুরোটা সময় হাতকড়া ও ডান্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় ছিলেন তিনি। এ ঘটনা তুলে ধরে সাংবাদিকরা তথ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, জানাজার সময় হাতকড়া-ডান্ডাবেড়ি থাকার ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের বক্তব্য, সরকার এতটা ‘অমানবিক’ না হলেও পারতো। জবাবে ড. হাছান বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে চেক করেছি। আমি গাজীপুরের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। ডান্ডাবেড়ি বা হাতকড়া পরানো না পরানো হচ্ছে জেল প্রশাসনের কাজ। সেটি আবার পুলিশের অধীনে নয়। একজন আইজি প্রিজন আছেন সেই প্রশাসনের অধীনে। আমাদের পুলিশের যে মহাপরিদর্শক, তাদের অধীনেও নয়। ডান্ডাবেড়ি কিংবা হাতকড়া জেল প্রশাসনই পরায়। আমি বিষয়টি চেক করেছি, তাকে প্যারোলে কয়েক ঘণ্টার জন্য মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে কয়েকজন জঙ্গি পালিয়ে গেছে। তাদের বিষয়ে যেভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার ছিল সেটি করা হয়নি বিধায় তদন্তে উঠে এসেছে এবং তারা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এজন্য তারা (গাজীপুরে) অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। আমি এসপি পর্যায়েও কথা বলেছি, তারা বিষয়টি জানতেন না। যারা বিএনপি নেতাকে কেরি (বহন) করে এনেছিল, শুধু তারাই জানতেন; অন্যরা কেউ জানতেন না। তবে আমি মনে করি জানাজার সময় ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া খুলে দিলে ভালো হতো। সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে সব দলকে নির্বাচনমুখী করা। এটা নির্বাচন কমিশনের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। আমরাও চাই সমস্ত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। বিএনপিসহ সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে একটি প্রতিযোগিতামূলক, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক- সেটি আমরাও চাই। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না, সেটি একান্তই তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে একটি কথা আছে, গাধা জল ঘোলা করে খায়। বিএনপি যেমন ১০ তারিখ জল ঘোলা করে নয়াপল্টনের সমাবেশ গরুর হাটের ময়দানে (গোলাপবাগ মাঠে) করেছে, এক্ষেত্রেও আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বিএনপি নির্বাচনে আসবে তাদের দল টিকিয়ে রাখার স্বার্থে।