নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীর করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। রিট আবেদনকারী আইনজীবী জানান, একটি ইংরেজি দৈনিকে ১ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যেখানে বিমানের ১৪ জন পাইলট নিয়োগের বিষয়ে বলা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এর মধ্যে একজন মানবিক (আর্টস) ব্যাকগ্রাউন্ডের। সায়েন্সে না পড়ে কীভাবে পাইলট হলেন? আরেকজনের কাগজে জালজালিয়াতি পাওয়া যায়। তিনি বলেন, এগুলো দেখার পর আমি বিস্মিত। যেহেতু আমি বিমান বাংলাদেশে নিয়মিত যাতায়াত করি, সেহেতু আমি সংক্ষুব্ধ হয়ে সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ পাঠাই। তাতে কোনো ব্যবস্থা না নিলে জনস্বার্থে রিট করি। আদেশে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়। বিমান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, সিভিল এভিয়েশনের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও বিমানের একজন কর্মকর্তাকে তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর উড়োজাহাজ উড্ডয়নের জন্য চুক্তিভিত্তিক পাইলটদের একটি ব্যাচ নিয়োগ দিয়েছিল। নিয়োগের সময় বিমান দাবি করে যে, তাদের পাইলট সংকট থাকায় অবিলম্বে এই নিয়োগ দিতে হবে। এক বছর পরে নিয়োগ দেওয়া ১৪ জন পাইলটের মধ্যে মাত্র পাঁচজন উড়োজাহাজ উড্ডয়ন করেছেন। বাকিরা আটকে আছেন জাল সনদ, অযোগ্যতা ও লাইসেন্সিং পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়ে। বিমান তাদের দিয়েছে মোটা অংকের বেতন, সেইসঙ্গে প্রশিক্ষণের জন্য খরচ করেছে বিপুল অর্থ, যার সবই গেছে জলে। অপারেশন ম্যানুয়াল অনুযায়ী, বিশ্বের বৃহত্তম যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বোয়িং ৭৭৭ ওড়াতে ফার্স্ট অফিসারদের কমপক্ষে ৩০০ ঘণ্টার ফ্লাইং অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। কিন্তু নিয়োগপ্রাপ্তদের কারোই সেই অভিজ্ঞতা নেই। এ বিষয়ে বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাইলটস অ্যাসোসিয়েশন অভিযোগ তুলেছে দুর্নীতির। তারা গত বছর বলেছিল, কেন অযোগ্য পাইলটদের চুক্তিতে নিয়োগ দিতে হবে, যেখানে যোগ্য পাইলটদেরই পদোন্নতি দেওয়ার সুযোগ আছে? বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) সরকারি চিঠিতে এটিকে নিরাপত্তা উদ্বেগ হিসেবে অভিহিত করেছে, এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে বিমানকে তদন্ত করতে বলেছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারির বিমানের একটি নথি অনুযায়ী, নিয়োগ পাওয়া ১৪ জনের মধ্যে মাত্র চারজন ক্যাপ্টেন এবং একজন ফার্স্ট অফিসার উড়োজাহাজটি ওড়ানোর সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।