• বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৪৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
বান্দরবানে জেলা প্রশাসকের আদেশে পিতার মৃত্যুতে এক যুবককে প্যারোলে মুক্তি ত্রিপুরা ও খেয়াং সম্প্রদায়ের ব্যক্তিবর্গেরদের সাথে মতবিনিময় বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে চিন্তিত নয় আ. লীগ: কাদের ডেঙ্গু বৃদ্ধির জন্য দায়ী জলবায়ুর পরিবর্তন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী সরকারি চাকরি থেকে অবসরের ৩ বছরের মধ্যে নির্বাচন করা যাবে না: হাইকোর্ট রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় ঋণ নয়, বিশ্বব্যাংক-এডিবির অনুদান চায় টিআইবি ডাণ্ডাবেড়ির বৈধতা প্রশ্নে রুল: যুবদল নেতাকে চিকিৎসা দিতে নির্দেশ সংসদ নির্বাচনে কোনো হুমকি দেখছি না: আইজিপি ধানের দাম কম, উৎপাদন খরচ ফেরত পাচ্ছে না চাষীরা, ক্ষতির মুখে কৃষক ১৭০টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে দেবে না আওয়ামী লীগ

মাদক নিয়ে গবেষণা করে মাদকবিজ্ঞানী হওয়ার পরিকল্পনা!

Reporter Name / ১৬৯ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
মাদকবিজ্ঞানী হওয়ার পরিকল্পনা ছিল ওনাইসি সাঈদ ওরফে রেয়ার সাঈদের (৩৮)। তিনি বিভিন্ন অপ্রচলিত ও নতুন মাদক বিক্রি ও তাপ নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে কুশ মাদক তৈরি করতেন। রীতিমতো এই মাদক নিয়ে তিনি গবেষণা শুরু করেছিলেন। এ ছাড়া কুশ মাদক দিয়ে তৈরি করেছেন সার। ভবিষ্যতে তিনি দেশের বাইরে বিপুল পরিমাণে কুশ চালানের পরিকল্পনা করেছিলেন। এজন্য তার বাসায় কুশ প্ল্যান্টের ফার্ম তৈরি করেন। টেস্ট অ্যান্ড ট্রায়াল হিসেবে সাঈদ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাটের ভেতর তাপ নিয়ন্ত্রণ গ্রো-টেন্ট পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেন। তার প্রতিটি মাদকের বোতলে তাপমাত্রা দেওয়া। কোন বোতলে কোন মাত্রা দিতে হবে সব উল্লেখ করে রেখেছিলেন তিনি। বিভিন্ন অপ্রচলিত ও নতুন মাদক বিক্রি ও তাপ নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে কুশ মাদক তৈরির অন্যতম মূলহোতা ওনাইসি সাঈদ ওরফে রেয়ার সাঈদকে রাজধানীর গুলশান থেকে আটক করেছে র‌্যাব। অভিযানে বাংলাদেশে প্রথমবার অপ্রচলিত মাদক এক্সট্যাসি, কুশ, হেম্প, মলি, এডারল, ফেন্টানিলসহ অন্যান্য মাদক উদ্ধার ও প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের দেশি ও বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। র‌্যাব জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে মাদক চোরাকারবারী ও মাদকসেবীরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পন্থা অবলম্বন করছেন। বাংলাদেশে প্রচলিত নয় কিন্তু বিভিন্ন উন্নত দেশে প্রচলিত এমন কিছু মাদকের ব্যবহার বাংলাদেশে আসছে। এতে ধীরে ধীরে আমাদের যুব সমাজ এতে আসক্ত হয়ে উঠছে। র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে এক্সট্যাসি নামক একটি নতুন মাদকের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে পারে। এক্সট্যাসি হলো মেথানিল ডাই অক্সি মেথাফিটামিন। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ এর আভিযানিক দল রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে ওনাইসি সাঈদ ওরফে রেয়ার সাঈদকে আটক করা হয়। অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ১০১ গ্রাম কুশ, ৬ গ্রাম হেম্প, ০.০৫ গ্রাম মলি, ১ গ্রাম ফেন্টানল, ১৮ গ্রাম কোকেন, ১২৩ পিস এক্সট্যাসি, ২৮ পিস এডারল ট্যাবলেট ও ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ও অর্ধলক্ষাধিক মার্কিন ডলার। পরবর্তী সময়ে তার তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে তাপ নিয়ন্ত্রণ গ্রো-টেন্টের মাধ্যমে অভিনব পন্থায় বিদেশি প্রজাতির কুশ তৈরির প্ল্যান্ট ও সেটআপ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ওনাইসী সাঈদ তার মাদক কারবার সংশ্লিষ্টতার উপর তথ্য প্রদান করেন। কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার ওনাইসী সাঈদ দেশের একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল/কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে বিদেশ থেকে বিবিএ এবং এমবিএ সম্পন্ন করেন। বিদেশে অধ্যয়ন শেষে ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশে অবস্থানকারী পূর্বপরিচিত একজন ওনাইসীকে বিভিন্ন ধরনের অপ্রচলিত মাদক সরবরাহ করতেন। পরবর্তী সময়ে ওই সরবরাহকারী উত্তর আমেরিকার একটি দেশে স্থানান্তরিত হলে, সেখান থেকে এ জাতীয় মাদক সাপ্লাই করতে থাকে। এভাবে সে আন্তর্জাতিক মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে নতুন মাদক এক্সট্যাসির অন্যতম মূলহোতা গ্রেপ্তার ওনাইসী সাঈদ। সে গত ৪ বছর ধরে এক্সট্যাসিসহ অন্যান্য উচ্চমূল্যের মাদকের কারবারের সঙ্গে জড়িত। সে এই সিন্ডিকেটটির মূলহোতা। এ ছাড়া বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে। এই মাদক সে পার্সেলের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করে থাকে। মাঝে মধ্যে সে নিজেও বিদেশে যেয়ে এসব মাদক লাগেজে বহন করে দেশে নিয়ে আসে। হুন্ডির মাধ্যমে মাদকের অর্থ পরিশোধ করতেন তিনি। দেশে তার ক্রেতাদের সম্পর্কে জানা যায়, অধিকাংশ ধনাঢ্য পরিবারের সদস্য। এ ছাড়া অভিজাত এলাকায় বিভিন্ন পার্টিতে চাহিদার ভিত্তিতে সরবরাহ করতো। র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, নতুন বিভিন্ন মাদকের প্রতি তার আগ্রহ সৃষ্টির ফলে সে এ নিয়ে অধ্যয়ন ও গবেষণা শুরু করে। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নত দেশে সরবরাহের জন্য কুশ প্ল্যান্টের ফার্ম তৈরি করে। টেস্ট অ্যান্ড ট্রায়াল হিসেবে গ্রেপ্তার সাঈদ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাটের ভেতর তাপ নিয়ন্ত্রণ গ্রো-টেন্ট পদ্ধতিতে চাষ শুর করে। এরই মধ্যে তিনি ফার্ম থেকে একবার হারভেস্ট ও পরবর্তীতে প্রসেস করে কুশ মাদক প্রস্তুত করেন। যা বাংলাদেশের বিভিন্ন মাদকাসক্তের কাছে বিক্রি করেন। এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার সাঈদ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করেন। তিনি বিদেশে যেয়ে দেশে আসার সময় এসব মাদক সঙ্গে নিয়ে আসতেন। এ ছাড়া বিদেশ থেকে কুশ মাদকের গাছের বীজ নিয়ে এসে তার বাসায় রোপণ করেন। এই মাদক বিদেশ থেকে সাঈদ কীভাবে দেশে আনলেন, বিমানবন্দরে ধরে পড়ে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সাঈদের মাদকের একটি বড় চালান কানাডাতে আটকে যায়। কিন্তু বিদেশ থেকে বাংলাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে তার কোনো মাদকের চালান জব্দ হয়েছে কি না তা সাঈদ জানাননি। গ্রেপ্তার সাঈদ মাদক গ্রহণ করতেন কি না জানতে চাইলে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সিগারেট ও অ্যালকোহল পান করলেও সাঈদ নিজে মাদক গ্রহণ করতেন না। এই মাদক তিনি শুধুমাত্র ব্যবসার জন্য এনেছিলেন। তার আর কোনো ব্যবসা নেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category