নিজস্ব প্রতিবেদক :
একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের ত্রিশালের জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য মো. আনিছুর রহমান মানিকসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করা হয়েছে। এরপর মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য যে কোনো দিন অপেক্ষমাণ (সিএভি) ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। গত সোমবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম। আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল। অন্যদিকে, আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট গাজী এমএইচ তামিম। ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল জানান, এ মামলায় মোট ৯ জন আসামি ছিলেন। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন ২ জন। কারাগারে থাকা দুই জন ও পলাতক একজনসহ মোট তিনজন মারা গেছেন। আর বাকি ছয়জন আসামির সবাই পলাতক। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগে ফরমাল চার্জ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ (আইও) রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়ে গত সোমবার শেষ হয়। এরপর মামলায় রায় ঘোষণার জন্য সিএভি অপেক্ষমাণ রাখেন আদালত। এর আগে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত শেষে প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছিলেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশালের জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য মো. আনিছুর রহমান মানিকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছিল ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। তাদের বিরুদ্ধে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগে রয়েছে। ওইদিন ধানমন্ডিস্থ অন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান। এ সময় তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এম সানাউল হক, মামলার (আইও) তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে আবদুল হান্নান খান বলেন, একাত্তর সালে আটক, অপহরণ, নির্যাতন, হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের চারটি অভিযোগে তদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি মো. আনিছুর রহমান ছাড়াও অন্যান্যরা হলেন-মো. মোখলেছুর রহমান মুকুল (৬৫), মো. সাইদুর রহমান রতন (৫৬), সামসুল হক বাচ্চু (৭০), শামছুল হক ফকির (৭৫), নুরুল হক ফকির (৭০), সুলতান ফকির ওরফে সুলতান মাহমুদ (৫৮), এবিএম মুফাজ্জলহুসাইন (৭০) ও নকিব হোসেন আদিল সরকার (৬৫)। এর মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা দুজন ও পলাতক একজন মারা গেছেন। এখন মামলার বাকি সব আসামিই পলাতক রয়েছেন। এদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সুলতান ফকির ও এবিএম মুফাজ্জল হুসাইন। তারা সবাই ১৯৭১ সালে মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ, আটক ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে। সানাউল হক বলেন, আসামি নয় জনের বিরুদ্ধে গত ২৬ জানুয়ারি মামলা করা হয়। ওই দিন থেকেই আমরা তদন্তকাজ শুরু করি। আসামিরা ১৯৭১ সালের জুন-জুলাই থেকে একই বছরের ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানাধীন আহম্মদাবাদ উচ্চবিদ্যালয় রাজাকার ক্যাম্প, কানিহারী ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় এসব অপরাধ সংগঠিত করেছে বলেও তিনি জানান।
সর্বশেষঃ
মানবতাবিরোধী অপরাধ: সাবেক এমপি আনিসুরসহ ৬ জনের রায় যেকোনো দিন
-
দৈনিক আইন বার্তা
- আপডেট সময়ঃ ০৬:৫৬:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২২
- ১৫০ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ