• রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন
  • ই-পেপার

রমজান ঘিরে দু’দফা কোটি দরিদ্র পরিবারকে নিত্যপণ্য দেবে সরকার

Reporter Name / ২০৭ Time View
Update : শনিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক :
আসন্ন পবিত্র রমজান ঘিরে কোটি দরিদ্র পরিবারকে কম দামে নিত্যপণ্য সরবরাহ করবে সরকার। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে রমজান শুরুর আগে এক দফা এবং রমজানের মাঝে আরেক দফা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে সয়াবিন তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ ও খেজুর সরবরাহ করা হবে। মূলত করোনা পরিস্থিতিতে দরিদ্র মানুষের আয় কমে যাওয়া এবং পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রায় ৪ কোটি মানুষ দরিদ্র মানুষ উপকৃত হবে। সরকারের সর্বশেষ প্রাক্কলন অনুযায়ী দেশে দারিদ্র্যের হার ২০ শতাংশের মতো। দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ধরলে দরিদ্র জনগণের সংখ্যা প্রায় মাড়ে তিন কোটি। কিন্তু ধারণা করা হয় কভিডের কারণে দারিদ্র্য বেড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দরিদ্র প্রতিটি পরিবার শবেবরাত থেকে রমজানের আগে কম দামে একবার দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি চিনি, দুই কেজি মসুর ডাল ও এক কেজি ছোলা পাবে। আবার মধ্য রমজান থেকে ঈদের আগ পর্যন্ত আরেক দফা একই পরিমাণ পণ্য দেয়া হবে। তাছাড়া কোনো কোনো এলাকায় আমদানি করা পেঁয়াজ ও খেজুরও দেয়া হবে। প্রতি দফায় ওসব পণ্য পেতে দরিদ্র পরিবারগুলোর ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা খরচ হবে। বর্তমান বাজারে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল খুচরা ১৫৫ থেকে ১৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মসুর ডাল মান ও জাত ভেদে ৯৫ থেকে ১১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৫০ টাকায়। টিসিবি সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১১০ টাকা, ডাল ও চিনি প্রতি কেজি ৫০ টাকা ও পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে বিক্রি করে। অর্থাৎ বর্তমান বাজারের তুলনায় প্রায় অর্ধেক দামে পণ্য পাবে কোটি দরিদ্র পরিবার। যদিও রমজানের সময় কোনো কোনো পণ্যের দাম বেড়ে যায়।
সূত্র জানায়, সরকার দরিদ্র মানুষকে সহায়তা করতেই টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু যাদের জন্য ওই কর্মসূচি তাদের অনেকেই পণ্য পাচ্ছে না। আবার অনেকে কৌশলে টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনে ব্যবসাও করছে। আবার অনেকে একাধিক ট্রাকে কয়েক বার লাইনে দাঁড়িয়ে অতিরিক্ত পণ্য সংগ্রহ করছে। ফলে প্রত্যন্ত এলাকাসহ অন্যান্য জায়গায় দরিদ্ররা সরকারের দেয়া ওসব পণ্য পাচ্ছেন না।
সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে টিসিবির গুদামে ১৬ হাজার টন ডাল রয়েছে। সংস্থাটি আরো ২৪ হাজার টন ডাল সংগ্রহ করবে। আর সংস্থাটিতে বর্তমানে ২০ হাজার টন চিনি থাকলেও তা বাড়িয়ে ৪০ হাজার টনে উন্নীত করা হবে। তাছাড়া টিসিবির গুদামে দুই কোটি লিটার ভোজ্যতেল রয়েছে। আরও দুই কোটি লিটারের প্রয়োজন হবে। তাছাড়া ১০ হাজার টন ছোলাও মজুদ আছে।
এদিকে এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানান, করোনার সময় প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাওয়া ৩৫ লাখ দরিদ্র কর্মহীন পরিবারকে টিসিবির ভর্তুকি মূল্যের পণ্য পৌঁছে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী রমজানে এক কোটি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। আগের তালিকাভুক্ত ৩৫ লাখের সঙ্গে পরিবহন খাতের সাড়ে ৩ লাখ শ্রমিক এবং ঢাকা ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রায় ১২ লাখ দরিদ্র পরিবার যোগ হবে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে আরো ৫০ লাখ পরিবার চিহ্নিত করবে। তবে আগে থেকে যাদের তালিকা রয়েছে তাদের মোবাইলে বার্তা পাঠিয়ে কবে কোথায় টিসিবির পণ্য দেয়া হবে তা জানিয়ে দেয়া হবে। নতুন ৫০ লাখ পরিবারকে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে একটি কার্ড দেয়া হবে। সঠিকভাবে ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও টিসিবি প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category