নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজারবাগের পীর দিল্লুর রহমান ও তার প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব সম্পত্তি রয়েছে তা নির্ণয় করতে এবং সেগুলোর উৎস সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে আদালতকে জানানোর জন্যে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আদালত পীর ও তার পৃষ্ঠপোষকতায় উলামা আঞ্জুমান বাইয়্যিনাত অথবা ভিন্ন কোনো নামে কোনো জঙ্গি সংগঠন আছে কি না সে বিষয়ে খোঁজ নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে। হাইকোর্টের দেওয়া ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে পীরের পক্ষে করা আপিল আবেদনের শুনানি নিয়ে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন চেম্বার আদালত। গতকাল সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের চেম্বার আদালত এই আদেশ দেন। আদালতে পীর দিল্লুরের আবেদনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জহিরুল ইসলাম মুকুল, সঙ্গে ছিলেন মো. আহসান। অন্যদিকে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির। আদেশের বিষয়টি আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির নিশ্চিত করেছেন। এর ফলে তার সম্পদের উৎস খুঁজে বের করতে এবং জঙ্গি সম্পৃক্ততা খুঁজতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল থাকলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। এর আগে ৮ জনের করা রিটের শুনানি নিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রাজারবাগ পীর দিল্লুরের সম্পদের উৎস খুঁজতে নির্দেশ দেয়। এরপর গত ৪ অক্টোবর লিখিত আদেশের অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে গত রোববার আপিল বিভাগে আবেদন করেন দিল্লুর রহমান। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদেশ দেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। ৪ অক্টোবর প্রকাশিত লিখিত আদেশে বলা হয়, প্রতিপক্ষকে এই মর্মে কারণ দর্শাতে বলা হলো যে, কেন আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা ও হয়রানিমূলক ক্রমাগত ফৌজদারি মামলা দায়েরে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে রুলটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় রিটকারী আটজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) অতিরিক্ত মহা-পুলিশ পরিদর্শককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর রিটের শুনানিতে অন্যের জায়গা-জমি দখলের জন্য রাজারবাগ পীরের কা- নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন হাইকোর্ট। মুরিদদের দিয়ে নিরীহ এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৪৯টি মামলা দেওয়ার ঘটনায় সিআইডির তদন্ত রিপোর্ট দেখে আদালত এ বিস্ময় প্রকাশ করেন। ওই দিন হাইকোর্ট বলেন, পীর সাহেবের কা- দেখেন! জায়গা-জমি দখলের জন্য পীর সাহেবরা তাদের অনুসারী-মুরিদ দিয়ে কী করে দেখেন! যেখানে একটা মামলা দিলেই একজন মানুষের জীবন শেষ হয়ে যায়, সেখানে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এত মামলা! এটাতো সিরিয়াস ব্যাপার।