নিজস্ব প্রতিবেদক :
গাজীপুরের জৈনা বাজার এলাকায় রিকশা-অটোরিকশা-ইজিবাইক চালকরা বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভের একপর্যায়ে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দু’লেন অবরোধ করে রাখেন। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে শত শত রিকশা-অটোরিকশা-ইজিবাইক চালক এ বিক্ষোভ ও অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৩০ মে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় গতকাল মঙ্গলবার থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, ব্যস্ততম বাজারের মূল সড়ক ও বিশেষ প্রতিষ্ঠানের সামনে অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার সকালে রিকশা, অটোরিকশা ও ইজিবাইকের চালকরা জৈনা বাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তারা ওই মহাসড়কের ঢাকাগামী দু’লেন অবরোধ করে রাখেন। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। শ্রীপুরের মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কে ওইসব যানবাহন চলাচল না করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। সকালে বিক্ষোভকারীরা মহাসড়কের ঢাকাগামী দু’লেন অবরোধ করে রাখেন। এতে প্রায় আধাঘণ্টা ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
অপরদিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী-চাষাঢ়া সড়কে অটোরিকশা চলাচল করতে না দেওয়ায় রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন চালকরা। আজ মঙ্গলবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী-চাষাড়া সড়কে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। এতে করে সড়কে প্রায় ৪ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন গার্মেন্টসের শ্রমিকরা। পরে বেলা ১১টায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৭টা থেকে সড়ক অবরোধ করায় প্রায় ৩ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় তারা লাঠিসোটা নিয়ে সড়কে অবস্থান নেন এবং অগ্নিসংযোগ করেন। এতে করে গার্মেন্টস শ্রমিক, চাকরিজীবী, শিক্ষার্থীদের হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। রুবেল মিয়া নামে আন্দোলনরত এক চালক জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কে অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। গত কয়েকদিন যাবত র?্যাব সদস্যরা তাদের প্রধান সড়কে অটোরিকশা চলাচল করতে দিচ্ছে না। প্রধান সড়কে চলাচল করতে না দিলে তারা পরিবার নিয়ে কীভাবে চলবেন? আব্দুস সামাদ নামে আরেক চালক জানান, তারা সরকারের সব বিল পরিশোধ করেন। তারপরও হঠাৎ করেই র?্যাব সদস্যরা তাদের প্রধান সড়কে চলাচল করতে দিচ্ছে না। অটোারকশা নিয়ে প্রধান সড়কে উঠলেই তারা (র?্যাব) সিদ্ধিরগঞ্জ লেকের রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে বলে। লেকের পাশে যে সড়ক রয়েছে তার কাজ এখনো শেষ হয়নি। তাই ওই রাস্তায় অটো নিয়ে চলাচল করা সম্ভব না। যদি ওই রাস্তাটা গাড়ি চলাচলের জন্য উপযুক্ত করে দেয় তাহলে আমাদের আর কোনো আপত্তি নেই। এদিকে অবরোধে দীর্ঘক্ষণ ধরে বসে থাকা জব্বার মিয়া নামে এক ট্রাকচালক জানান, সকাল থেকে তারা একই জায়গায় বসে আছেন। রাস্তা বন্ধ থাকায় তারা কোনো মালামাল নিয়ে সড়কে চলাচল করতে পারছেন না। ভোগান্তিতে পড়া আজিজুল হাকিম নামে এক শিক্ষার্থী জানান, সকালে কলেজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন, কিন্তু রাস্তা বন্ধ থাকায় বাসায় ফিরে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাফিজুর রহমান মানিক বলেন, অটোরিকশা চালকদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছি, এখন যান চলাচল স্বাভাবিক আছে। এখন থেকে প্রধান সড়কে অটোরিকশা চালাতে হলে সুশৃঙ্খলভাবে চলাচল করতে হবে। কোনোরকম বিশৃঙ্খলা করে রাস্তÍায় যানজটের সৃষ্টি করা যাবে না। র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে.কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা বলেন, আমরা কোনো চালককেই অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করতে বলিনি। তারা অবশ্যই অটোরিকশা চালাবে। কিন্তু নিয়ম মেনে চালাতে হবে।