• বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:০০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
আইনের অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নেই: আইনমন্ত্রী তীব্র শিক্ষক সঙ্কট নিয়েই চলছে সরকারি মেডিকেল কলেজগুলো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সুইজারল্যান্ডের সহযোগিতা চেয়েছেন স্পিকার একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিসহ ৮ দাবি প্রাথমিকের শিক্ষকদের স্বামীর স্থায়ী ঠিকানায় বদলির আদেশ বহাল দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার রোধে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর রোয়াংছড়ি উপজেলার কুকি চীন সন্ত্রাসী বাহিনীরা রাস্তার ক্ষয়ক্ষতির গ্রস্তে সেনা পরিদর্শন করেন ১৬ আন্তঃনগর ট্রেনে যুক্ত হলো পণ্যবাহী নতুন লাগেজ ভ্যান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের যৌথ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলকে আর ঢাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না: মেয়র তাপস

শিক্ষককে হত্যার পর টাকা লুট, সমকামিতার চিরকুট সাজানো নাটক

Reporter Name / ১৮ Time View
Update : মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকার সাভারের ভাটপাড়ায় গোলাম কিবরিয়া নামে এক শিক্ষককে হত্যার পর চিরকুট লিখে রাখার ঘটনায় রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। গ্রেপ্তাররা হলেন-হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মো. ইমন খান (২৩), মো. সাগর (২২) ও মো. ছাদেক গাজী (২২)। গত সোমবার দিবাগত রাতে র‌্যাব-৪, ৬ ও ১৩ যশোর, ঝিনাইদহ ও রংপুর এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। এ সময় লুট করা ৫ লাখ ২১ হাজার ৯৯ টাকা উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব জানায়, নিহত শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া জমি কেনাবেচা করতেন। এ কারণে তার কাছে সব সময় মোটা অংকের টাকা থাকতো। টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য শিক্ষককে হত্যার পর সমকামীর চিরকুট লিখে নাটক সাজানো হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, গত ২০ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে সাভার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটপাড়া এলাকায় নিজ বাড়ির কক্ষ থেকে হাত-পা বাঁধা এবং গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় গোলাম কিবরিয়া (৪৩) নামে সাবেক এক স্কুল শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় মরদেহের পাশ থেকে ‘এই ব্যক্তি সমকামী করে পুলিশ ভাই, আমরা তাই মেরে ফেলেছি, ভাই ও অবৈধ কাজ করে, আমরা ইসলামের সৈনিক’ লেখা একটি চিরকুট পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে সাভার থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। র‌্যাব জানায়, নিহত গোলাম কিবরিয়া সাভার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটপাড়া এলাকার বাসিন্দা। পেশায় সাবেক শিক্ষক ছিলেন। তিনি কয়েক বছর ধরে নিজ বাড়িতে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতেন। পাশাপাশি জমি ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করতেন। গত ১৯ আগস্ট রাত ১০টার দিকে তার বড় ভাই মো. গোলাম মোস্তফার ঘরে রাতের খাবার শেষে নিজ কক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ঘটনার দিন ২০ আগস্ট বেলা ২টার দিকে কিবরিয়া ঘুম থেকে না ওঠায় তার বাড়ির লোকজন তাকে ডাকাডাকি করেন। বাড়ির লোকজন ঘরের ভেতর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে একপর্যায়ে তার ঘরের পেছনের দরজা খোলা দেখতে পান। এ সময় বাড়ির লোকজন রুমের ভেতর গিয়ে খাটের উপর লুঙ্গি দিয়ে নিহত শিক্ষকের হাত-পা বাঁধা ও গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় নিথর মৃতদেহ দেখতে পান। এছাড়াও নিহতের রুমের মালামাল এলোমেলো এবং আলমারি খোলা অবস্থায় ছিল। গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ইমনের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে এই হত্যাকা-টি ঘটে। সাগর একজন অটোরিকশাচালক। তার রিকশায় নিহত শিক্ষক মাঝে মধ্যে যাতায়াত করার কারণে ২ বছর আগে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। পরবর্তীতে গত ৬ মাস আগে সাগর তার বন্ধু ইমনকে শিক্ষকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরিচয়ের সুবাদে ইমন ও সাগর শিক্ষক কিবরিয়ার বাসায় মাঝে মধ্যে যাওয়া আসা করতো। র‌্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া জমি ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করতেন এবং ব্যবসার যাবতীয় টাকা বাসায় রাখতেন। সাগর ও ইমন শিক্ষকের বাসায় যাওয়া আসার সুবাদে এই টাকা তাদের নজরে আসে। পরবর্তীতে তারা শিক্ষককে হত্যা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। ইমন তার পরিকল্পনার বিষয়টি ঘটনার ৭-৮ দিন আগে ছাদেককে জানান। ছাদেকের বিভিন্ন জায়গায় ঋণ থাকায় তিনি এই পরিকল্পনায় সম্মতি দেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ১৯ আগস্ট ইমন ও ছাদেক জিরানী বাজার থেকে বাসে করে সাভারের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসে শিক্ষককে ফোন করে দেখা করতে চান। শিক্ষক কিবরিয়া তাদের বাসায় আসতে বলেন। আনুমানিক রাত ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে ইমন ও ছাদেক শিক্ষকের বাসায় আসেন। এ সময় পরিকল্পনা অনুযায়ী সাগর অটোরিকশা নিয়ে শিক্ষকের বাসার আশপাশে অবস্থান করেন। শিক্ষকের বাসায় তারা রাতের হালকা নাস্তা শেষে আলাপচারিতার একপর্যায়ে রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে ছাদেক শিক্ষক গোলাম কিবরিয়ার গলা চেপে ধরেন এবং ইমন তার মুখ চেপে ধরেন। পরবর্তীতে তারা কৌশলে শিক্ষক গোলাম কিবরিয়ার লুঙ্গি দিয়ে হাত-পা বেঁধে ও গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে গোলাম কিবরিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হত্যাকা-ের এই ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ছাদেক নিজ হাতে একটি সাদা কাগজে চিরকুট লিখে মৃতদেহের পাশে রেখে দেন। ইমন নিহতের বিছানার নিচ থেকে চাবি নিয়ে আলমারি খুলে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৪টি মোবাইল নিয়ে যান। পরবর্তীতে তারা সাগরের অটোরিকশায় করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় চলে আসেন। তিনি বলেন, ইমন সাগরকে ৫০ হাজার টাকা দেন। বাকি ৬ লাখ টাকা ইমন ও ছাদেক নিজেদের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে নেন। ঘটনার পর দিন সকালে গ্রেপ্তার এড়াতে ইমন প্রথমে গাজীপুর পরে যশোরের চৌগাছা এলাকায়, সাগর রংপুরের মিঠাপুকুর, ছাদেক ঝিনাইদহে তাদের আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করেন। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category