নিজস্ব প্রতিবেদক :
অভিভাবকরা সন্তানদের পড়াশোনায় সরকারি বিদ্যালয়কে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। সেজন্য সরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদনের পরিমাণও বেশি। এবার লটারির মাধ্যমে স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। আর আগামী সপ্তাহে সরকারি-বেসরকারি উভয় স্কুলেই ভর্তি লটারি অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে ভর্তি প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ অনলাইনে আবেদন। তাতে সরকারি স্কুলে বিপুল পরিমাণ আবেদন জমা পড়লেও বেসরকারি স্কুলের প্রায় ৭০ ভাগ আসনই থাকবে ফাঁকা। সরকারি স্কুলের প্রতিটি আসনের বিপরীতে গড়ে ৬টি আবেদন জমা পড়েছে। আর বেসরকারি স্কুলে গড়ে প্রায় ৩টি আসনের বিপরীতে মাত্র একটি আবেদন জমা পড়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির আবেদন শেষ হয়েছে। সরকারি বিদ্যালয়ে আসনপ্রাত প্রায় ৬ জন আবেদন জমা দিলেও বেসরকারি বিদ্যালয়ে সাড়ে ৩ আসনে একজন শিক্ষার্থী আবেদন করেছে। তার মধ্যেও এখনো আবেদন ফি জমা দেয়নি প্রায় ৭০ হাজার আবেদনকারী। ফলে বেসরকারি বিদ্যালয়ে আবেদনকারীর সংখ্যা আরো কমতে পারে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ সৃষ্টি হলেও বেসরকারিতে প্রায় ৭২ শতাংশ আসনই খালি থাকছে।
সূত্র জানায়, সারা দেশে এবার ৫৫০টি সরকারি বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত ১ লাখ ৭ হাজার ৮৯টি শূন্য আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হবে। আর ৯ লাখ ২৫ হাজার ৬৬টি আসনে ২ হাজার ৮৫২টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি নেয়া হবে। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণীতে ভর্তির অনলাইন আবেদন গত ১৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার শেষ হয়। আবেদনকারীরা বুধবার রাত পর্যন্ত আবেদন ফি জমা দিতে পেরেছে। সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সারা দেশে ৫৫০টি বিদ্যালয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ৮৯টি শূন্য আসনে মোট ৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৯টি আবেদন জমা পড়েছে। ওই হিসাবে প্রি আসনে আবেদনকারীর সংখ্যা ৫ দশমিক ৮৪ জন। লটারির মাধ্যমে সব ক্লাসে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। আর দেশের ২ হাজার ৮৫২টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে ৯ লাখ ২৫ হাজার ৬৬টি আসনে মাত্র ২ লাখ ৬০ হাজার ৯৩৩টি আবেদন জমা পড়েছে। ওই হিসাবে প্রতি সাড়ে ৩টি আসনে একজন মাত্র আবেদনকারী। ফলে বেসরকারি বিদ্যালয়ে ৬ লাখ ৬৪ হাজার ১৩৩টি আসন খালি থাকছে। শিক্ষার্থী শূন্য থাকছে মোট আসনের প্রায় ৭২ শতাংশ। আগামী ১২ ডিসেম্বর সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির লটারি অনুষ্ঠিত হবে আর বেসরকারি স্কুলের লটারি ১৩ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে এ বিষয়ে মাউশির উপ-পরিচালক (বিদ্যালয়) মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন জানান, সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আসনের কয়েক গুণ আবেদনের বিপরীতে বেসরকারি স্কুলে তুলনামূলক অনেক কম হয়েছে। ওই কারণে বেসরকারির অনেক আসন খালি থাকবে। আর সরকারিতে এক ধরনের ভর্তিযুদ্ধ সৃষ্টি হবে। বেসরকারি স্কুলে বেশির ভাগ আবেদন ঢাকা মহানগরসহ অন্যান্য জেলা শহরের বড় বড় বিদ্যালয়ে এসেছে। অনেক বিদ্যালয়ে একজনও আবেদন করেনি। অনেকে আবার বর্তমান প্রতিষ্ঠান ছাড়তে চাচ্ছে না বলে আবেদন করেনি। করোনার কারণে অনেকে পড়ালেখায় পিছিয়ে গেছে বলেও কেউ কেউ পুরনো স্কুলে থাকতে চাচ্ছে বলে অন্য বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না। ওসব কারণে এবার বেসরকারি স্কুলে আবেদন সংখ্যা কমে যেতে পারে। স্কুলে ভর্তির নতুন নীতিমালা অনুযায়ী এবারো প্রথম শ্রেণীতে ভর্তির জন্য একজন শিক্ষার্থীর বয়স ন্যূনতম ছয় বছরের বেশি হতে হবে। প্রথম শ্রেণীতে ৬ বছরের বেশি ধরে অন্যান্য শ্রেণীতে ভর্তির বয়স নির্ধারিত হবে। তবে শিক্ষার্থীর বয়সের ঊর্ধ্বসীমা সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করবে বলে নীতিমালায় জানানো হয়েছে। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীর ভর্তির সর্বোচ্চ বয়স নির্ধারণ করবে।