নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাংবাদিক হাবীবুর রহমান হাবীব মিষ্টভাষী ছিলেন। এই ছেলেটা এইভাবে চলে যাবে ভাবিনি। তবে সাংবাদিক হাবীবের প্রকৃত মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে তদন্তের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে সাংবাদিক হাবীবুর রহমানের অকাল মৃত্যুতে আয়োজিত শোকসভায় তিনি একথা বলেন। শোকসভাটির আয়োজন করে ডিআরইউ। মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, হাবীবের মৃত্যু নিয়ে তদন্তটা দ্রুত হওয়া উচিত। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলবো। তারা যেন বিচারিক ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দ্রুত দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। রিপোর্ট আশার পর দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা চাইলেও এখন হাবীবের জন্য কিছু করতে পারবো না। তাই এখন সবাইকে হাবীবের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, হাবীবের সহকর্মীদের যে আন্তরিক দেখলাম তাতে আমাকে নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। আপনারা হতাশ হবেন না, জননেত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিক বান্ধব নেত্রী। তিনি সময় পেলেই সাংবাদিকদের সঙ্গে বসেন। প্রধানমন্ত্রী থাকতে হতাশ হওয়ার কারণ নেই। আমরা হাবীবের স্ত্রী ও ভাইয়ের চাকরির ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবো। একই সঙ্গে হাবীবের পরিবার যাতে দ্রুত আর্থিক সহায়তা পায় সেই ব্যাপারে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। শোকসভায় সভাপতির বক্তব্যে ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু বলেন, ডিআরইউ’র পক্ষ থেকে সাধ্যমতো চেষ্টা করবো হাবীবের পরিবারের পাশে থাকতে। আমি আশা করবো ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বিএফইউজে পক্ষ থেকে একটি ফান্ড তারা ব্যবস্থা করবেন। একই সঙ্গে হাবীবের স্ত্রী ও তার ছোট ভাইয়ের একটি চাকরির দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা হাবীবের মৃত্যুর তদন্ত দাবি করছিলাম যারা তদন্ত করছেন এখন পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেননি। হাবীবের মৃত্যুটা কীভাবে হয়েছে আমরা তার মৃত্যু বিষয়টি তদন্তের মাধ্যমে দেখতে চাই। শোকসভায় হাবীবের বাবা বলেন, আমার বলার ভাষা নেই। আপনাদের সঙ্গে চলায় আমার ছেলে কোনো বেয়াদবি করে থাকলে মাফ করবেন। বাবা হয়ে ছেলের লাশ কাঁধে নেওয়া যে কি বেদনার এটা বলে বুঝানো যাবে না। তবে আমার ছেলের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত চাই। ঢাবি অধ্যাপক আবুল মনসুর বলেন, একজন শিক্ষকের কাছে ছাত্রের জন্য শোকসভা স্মৃতিচারণ করা সত্যি বেদনাদায়ক। হাবিব সব সময় সত্যকে তুলে ধরেছেন। আমি আশা করবো আগামীতে সব সাংবাদিক সংগঠন তার পরিবারের পাশে থাকবেন এটুকু প্রত্যাশা করি। সাংবাদিক শাহজাহান সরদার বলেন, নিজেদের মধ্যে নিজেদের সমালোচনা বন্ধ করতে হবে। তবে রিপোর্ট করতে গিয়ে কোনো নেতার লেজুড় হবেন না। হাবীবের পরিবার যাতে ভালোভাবে চলতে পারে সেদিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, হাবীব বিনয়ী ছিল, তার মধ্যে নেতৃত্বের একটি আকাক্সক্ষা ছিল। তবে হাবীবের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ হওয়া উচিত। সাংবাদিকদের বেলায় কেন রিপোর্টগুলো আসে না। এটি যেন সাগর-রুনির মতো না হয়। ডিআরইউর সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী বলেন, সহকর্মীর প্রতি সহমর্মিতা দেখাতে হবে। হাবীব একজন বিনয়ী মানুষ ছিলেন। আমরা এক সঙ্গে আওয়ামী লীগ বিট কাভার করতাম, তার মৃত্যুতে শোক জানানোর ভাষা নেই। আমি চাই তার স্ত্রীর একটি চাকরির ব্যবস্থা করার মাধ্যমে তার পরিবারের পাশে থাকতে। ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, হাবীবকে ভালো রাখতে হলে তার পরিবারকে ভালো রাখতে হবে। আর এ চেষ্টাটুকু আমাদের করতে হবে। সময়ের আলো শাহনেওয়াজ বলেন, হাবীব সাদা মনের মানুষ ছিলেন। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং তার পরিবারের পাশে সবাইকে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। ডিআরইউর সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, হাবীবের মৃত্যুর জন্য স্বাভাবিক দুর্ঘটনা নাকি অন্যকিছু আমরা এ রহস্যর উদঘাটন চাই। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব দ্বীপ আজাদ বলেন, এ ঘটনা নিয়ে কিছু কথা এসেছে। আমরা চাই এটার সুষ্ঠু তদন্ত। আমরা জানতে চাই হাবীবের মৃত্যু দুর্ঘটনা নাকি অন্যকিছু। হাবীবের স্ত্রী হাসি বলেন, হাবীবের মৃত্যু নিয়ে যে ধোঁয়াশা এটা নিয়ে আমার একার পক্ষে কিছু করার নেই। আপনারা আমার পাশে থাকবেন। হাবীবের নেই বিশ্বাস করতে পারি না, হাবীবকে কেউ ভুলে যাবেন না। ও কাজকে ভালোবাসতো, ওর ভালোবাসার জায়গাটুকু যেন সে ফেরত পায় এটুকুই আপনাদের কাছে প্রত্যাশা। প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব সাখাওয়াত মুন বলেন, হাবীবের পাশে আমরা সবাই থাকবো। গণযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগ একটি পরিবার সবসময় সবার পাশে থাকে তার পাশেও থাকবে। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, হাবীবের মৃত্যুর খবরে আমি হতবাক হই। তার অকাল মৃত্যু কখনই প্রত্যাশা ছিল না। হাবীবের যে প্রাণোচ্ছল এনার্জি ছিল সে সবসময় যোগাযোগ রাখতো। হাবীবের মৃত্যু নিয়ে কোনো গলদ থেকে থাকলে এটা আমাদের দেখতে হবে। সাংবাদিক উত্তম কুমার বলেন, বলার কিছু নেই। হাবীবকে নিয়ে শোকসভায় বলতে হবে ভাবিনি। সভায় হাবীবের স্ত্রীর চাকরির দাবি করেন তিনি। শোকসভায় আর বক্তব্য রাখেন ডিআরইউ’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুক্কুর আলী শুভ, মুরসালিন নোমানী, মশিউর রহমান, রাজু আহমেদ, ডিআরইউ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহনাজ শারমীন ও অর্থ সম্পাদক এস এম এ কালাম। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব।
সর্বশেষঃ
সাংবাদিক হাবীবের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা: হানিফ
-
দৈনিক আইন বার্তা
- আপডেট সময়ঃ ০৭:৫০:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২২
- ৩৪৩ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ