নিজস্ব প্রতিবেদক :
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের বিদেশে সম্পদের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের অনুসন্ধান চেয়ে করা রিট কার্যতালিকা (কজলিস্ট) থেকে বাদ দিয়েছেন হাইকোর্ট। শুনানি নিয়ে আজ সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে এদিন রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন রিগ্যান। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. খুরশীদ আলম খান। আর সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। এর আগে ৮ মে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করা হয়। এতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্রে দুই হাজার ৭৭০ কোটি টাকা এবং ব্রিটেনে ৬৬ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সালাউদ্দিন রিগ্যান রিটটি করেন। রিটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী নিজে। রিটে ‘সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাম্রাজ্য যুক্তরাজ্যে’ ও ‘ব্রিটেনে বাংলাদেশি রাজনীতিবিদের ২০০ মিলিয়ন পাউন্ডের সাম্রাজ্য’ শিরোনামে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদনের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়। এর আগে ২৮ এপ্রিল দুদকে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সম্পদের অনুসন্ধান চেয়ে আবেদন করেছিলেন এই আইনজীবী। এতে ফল না পেয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দুদকের চেয়ারম্যান, কমিশনার (অনুসন্ধান), কমিশনার (তদন্ত) ও সচিব বরাবরে লিগ্যাল (আইনি) নোটিশ পাঠানো হয়। এরপরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এ সংক্রান্ত বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে ৮ মে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করা হয়। এর আগে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশে সম্পদের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। নির্বাচনী হলফনামায় বিদেশে সম্পদ থাকার কথা গোপন করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। লন্ডনে ব্যবসা ও সম্পদ থাকার কথা এক সংবাদ সম্মেলনে স্বীকার করেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী। তবে তিনি দাবি করেন, বিদেশের সম্পদ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে কোনো টাকা নেননি। সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, তার বাবা ১৯৬৭ সাল থেকে লন্ডনে ব্যবসা করেছেন। তিনি নিজে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করে ১৯৯১ সাল থেকে সেখানে ব্যবসা করেন। এরপর তিনি লন্ডনে ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছেন। হলফনামায় বিদেশে সম্পদের তথ্য দেওয়ার আলাদা কোনো ছক নেই বলেও জানান তিনি। তার এই বক্তব্যকে অযৌক্তিক বলেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচনী হলফনামায় মিথ্যা বা অপর্যাপ্ত তথ্য প্রকাশ করা আইনত দ-নীয় অপরাধ। হলফনামায় একজন প্রার্থীর সব সম্পদের বিবরণ প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তা দেশে বা বিদেশে যেখানেই থাকুক না কেন। এ ঘটনার তদন্ত দাবি করে টিআইবি।