নিজস্ব প্রতিবেদক :
খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদীর অধীনে গুলশানের পরিত্যক্ত বাড়ি নিয়ে শুনানির জন্য আরও সময় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই রিট মামলায় সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে জারি করা রুলের পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৩ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। আর এই সময়ের মধ্যে বাড়ি সংক্রান্ত মূল নথি ও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাড়ি সংক্রান্ত নথি দাখিল করতে রাজউক ও গণপূর্তকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজউকের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সেমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আজ সোমবার রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একে এম আমিন উদ্দিন মানিক। সালাম মুর্শেদীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম. সাঈদ আহমেদ রাজা। রাজউকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন মাসুদ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে মো. খুরশীদ আলম খান। এর আগে সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সম্পর্কিত নথি হাইকোর্টে দাখিল করেন সালাম মুর্শেদী। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি ও খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে গুলশানের একটি বাড়ি দখলে নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সময় নিয়েছিল গত ১২ ডিসেম্বর। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার সেটি শুনানিতে ওঠে। এর আগে গত ১ নভেম্বর সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে গুলশানের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি দখলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই বাড়ির সব নথি তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। ১০ দিনের মধ্যে হলফনামা আকারে নথি দাখিল করতে বলা হয়েছিল গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান এবং আবদুস সালাম মুর্শেদীকে। একই সঙ্গে সরকারি সম্পত্তি নিজের নামে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে পরিত্যক্ত সম্পত্তির ‘খ’ তালিকাভুক্ত বাড়িটি বেআইনিভাবে দখল করার অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চান আদালত। ১০ দিনের মধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান, দুদক চেয়ারম্যান, ঢাকা জেলা প্রশাসক ও আবদুস সালাম মুর্শেদীকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সেসময় ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আবদুস সালাম মুর্শেদীর বাড়ির প্রয়োজনীয় নথি দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১০ দিনের মধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এবং আবদুস সালাম মুর্শেদীকে হলফনামা আকারে নথি দাখিল করতে বলা হয়েছে। এর আগে ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করা হয়েছিল। রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। এতে বলা হয়, রাজধানীর গুলশান-২-এর ১০৪ নম্বর সড়কে সি ই এন (ডি)-২৭-এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। কিন্তু আবদুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন। রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও চলতি বছরের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেওয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়েছে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেওয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আবদুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন, রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাখ্যা চেয়েছিল পূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সেই চিঠি আমলে না নেওয়ায় ফের ৪ জুলাই চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দেওয়া হলো, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে ব্যাখ্যা দিতে অনীহা দেখিয়েছেন।
সর্বশেষঃ
সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে বাড়ি দখলের অভিযোগ: এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ
-
দৈনিক আইন বার্তা
- আপডেট সময়ঃ ০৮:২১:২৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩
- ১৩২ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ