• রবিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৫৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ
দুদক কর্মকর্তাদের নৈতিকতার সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান রাষ্ট্রপতির বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামছে ভোক্তা-অধিকার রাজনীতি যার যার, অর্থনীতি সবার: এফবিসিসিআই সভাপতি বান্দরবানে হুমকির মুখে সরকারের হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ বান্দরবান জেলা সদর সহ ৬ টি উপজেেলায় শিশুদেরকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়া হবে বান্দরবানে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা মাদকদ্রব্য ধ্বংস বিচারপতির গাড়িতে তেল কম দেওয়ায় ফিলিং স্টেশনকে জরিমানা বিচারক সোহেল রানার সাজার বিরুদ্ধে আপিলের রায় ১২ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারে বিদেশী বিনিয়োগ ক্রমাগত কমছে

সিলেটে বিদ্যুৎকেন্দ্র তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা, কাজ করছে সেনাবাহিনী

Reporter Name / ১২১ Time View
Update : শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেটে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সিলেটের বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে সিলেটের কুমারগাঁওয়ের বিদ্যুতের গ্রিড লাইনের সাব স্টেশনে। এতে পুরো সিলেট ও সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সিলেটের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) ও বিদ্যুৎ বিভাগ।

শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুর থেকে কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের চারপাশে বালির বস্তা দিয়ে দিয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেন সিলেট সেনানিবাসের সেনা সদস্যরা। এছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের সাকার মেশিন দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ঢুকে পড়া পানি শুকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
ঘটনাস্থল থেকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে কুমারগাঁও সাব স্টেশন তলিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। এটি তলিয়ে গেলে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়বে। এতে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। তাই আমরা এই কেন্দ্রটি চালু রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। যাতে অন্তত নগরের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে। সিটি করপোরেশন, সেনাবাহিনী ও বিদ্যুৎ বিভাগ একসঙ্গে মিলে এই কেন্দ্র সচল রাখার চেষ্টা করছি।’

মেয়র বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি কুমারগাঁও বিদ্যুৎ স্টেশনকে। আর ৫-৬ ইঞ্চি পানি বাড়লে এই কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে। এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন না হলে গোটা সিলেট বিভাগের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। এমনটি হলে কার্যত সিলেট বন্যার ক্ষতির পাশাপাশি বড় ধরনের সংকটে পড়বে।’

বিদ্যুৎ বিভাগের সিলেট অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদির বিকেলে জাগো নিউজকে বলেন, ‘বুধবার (১৫ জুন) রাতেই কুমারগাঁও বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি ঢুকে পড়েছে। আর চার ইঞ্চি পানি বাড়লেই এই কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে। এরই মধ্যে ভয়াবহ বন্যার কারণে সুনামগঞ্জ, ছাতক, কোম্পানীগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কুমারগাঁও উপকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেলে পুরো সিলেট বিদ্যুৎহীন হয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি কেন্দ্রটি সচল রাখার। বালির বস্তা দিয়ে কেন্দ্রের চারপাশে বাঁধ দেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রে ঢুকে পড়া পানি সেচে সরানোর চেষ্টা করছে সিসিক। সেনাবাহিনী ও সিটি করপোরেশন আমাদের এ কাজে সহযোগিতা করছে।’

শুক্রবার দুপুরে কুমারগাঁও সাব স্টেশন পরিদর্শনে যান সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান। তিনি বলেন, বন্যায় সিলেটের সবগুলো উপজেলাই বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। অনেক এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। সিলেট নগরে যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখা যায় আমরা সেই চেষ্টা করছি।

এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের গণসংযোগ বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সিলেটের কুমারগাঁও বিদ্যুৎ স্টেশন এলাকা বন্যাকবলিত হওয়া ঠেকাতে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি অবলোকন করে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণে সিলেট জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর সহায়তা নেন। শুক্রবার দুপুর থেকে সেখানে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণকাজ চলছে।

কুমারগাঁও বিদ্যুৎ স্টেশন থেকে ন্যাশনাল পাওয়ার গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এখানে সরবরাহ বন্ধ হলে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহে সংকট দেখা দেবে। পাশাপাশি সিলেট অঞ্চল পুরোটা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দেবে। এরই মধ্যে একাংশ বন্যাকবলিত হওয়ায় সিলেট নগরের একাংশ ও সুনামগঞ্জ জেলা বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে।

বিদ্যুৎ স্টেশনের সংশ্লিষ্টরা জানান, যেসব যন্ত্রপাতি রয়েছে, সেগুলো বন্যাকবলিত হয়ে পড়লে পুনরায় মেরামত সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এজন্য কোনোভাবে যেন পানি না ঢুকে পড়ে সে ব্যবস্থা করার কাজ চলছে।

অন্যদিকে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতিতে নানা সংকট তৈরি হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। নগরের দক্ষিণ সুরমা ও উপশহর এলাকায় বিদ্যুতের সাব স্টেশনে পানি ঢুকে যাওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন দুর্ভোগে পড়া পানিবন্দি নাগরিকরা।

পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার, আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে সিলেট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা সর্বাত্মকভাবে কাজ করছেন। মেয়র জানিয়েছেন, টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে নগরের পানিবন্দি মানুষের জন্য সিসিক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জরুরি বৈঠক করা হবে। এ পরিস্থিতিতে কন্ট্রোল রুম খোলার প্রক্রিয়া চলছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category